কুষ্টিয়ায় করোনায় আরও ১৪ জনের মৃত্যু


কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে করোনায় আক্রান্ত ৮ জন ও উপসর্গে ৬ জন মারা গেছেন। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার এম এ মোমেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এ নিয়ে জেলায় করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩২৪ জন ।
কুষ্টিয়ায় দুইশ’ শয্যার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়ছেই। রোগীর চাপ সামলাতে চিকিৎসকদের হিমশিম অবস্থার পাশাপাশি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। হাসপাতালে শয্যা সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। ওয়ার্ডের বারান্দায় বাড়তি রোগীদের চিকিৎসা চলছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি ছিল ২৭০ জন রোগী। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১ হাজার ২৭টি নমুনা পরীক্ষায় নতুন আরও ২৭৭ করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ৮৮ ভাগ। এছাড়া ল্যাবরেটরির প্রাপ্ত ফলাফলে শুধু গত এক সপ্তাহেই জেলায় প্রায় দুই হাজার করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৮ শতাংশ। এনিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১০ হাজার ৩৩৭ জন। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৬ হাজার ৩৭৯ জন।
হাসপাতালে ভর্তি রোগীর মধ্যে অনন্ত ৭০ থেকে ৭৫ ভাগ রোগীর প্রতি মিনিটে প্রয়োজন হচ্ছে ১৫ লিটার অক্সিজেন। এছাড়া অধিক সংকটাপন্ন রোগী আইসিইউতে স্থানান্তরযোগ্য হলেও তাদের আইসিইউতে নেওয়া সম্ভব যাচ্ছে না। এছাড়া সীমিত সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা ও ৬০১টি অক্সিজেন সিলিন্ডারেই এ হাসপাতালে চলছে করোনা রোগীর চিকিৎসা। ফলে উচ্চ মাত্রার অক্সিজেন সাপোর্ট না পেয়ে সংকটাপন্ন রোগীর অক্সিজেন লেভেল কমে শারীরিক অবনতি ও হঠাৎ মৃত্যু ঘটছে। হাসপাতালে উচ্চমাত্রার অক্সিজেন সংকটে চোখের সামনে রোগীর করুন দৃশ্য এখন নৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে।
এদিকে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন আরোপিত দুই সপ্তাহ কঠোর বিধি-নিষেধ ও পরবর্তীতে সরকার ঘোষিত এক সপ্তাহ লকডাউন শেষে চলমান পরবর্তী আরও এক সপ্তাহ লকডাউন দিয়েও রোধ করা যাচ্ছে না মৃত্যু ও সংক্রমণ ঊর্ধ্বগতি। জেলা শহর ও ছয় উপজেলার প্রতিটি গ্রামে এখন ছড়িয়ে সংক্রমণ।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা ডাক্তার তাপস কুমার সরকার জানান, সংকটাপন্ন ও জটিল সব রোগীকে আইসিইউ সাপোর্টসহ উচ্চমাত্রার অক্সিজেন দেওয়ার সক্ষমতা নেই। তবে সীমিত জনবল-ব্যবস্থাপনার মধ্যেই সব রোগীকেই সাধ্যমত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে । তবে এভাবে সংক্রমণ ও রোগী বাড়তে থাকলে চিকিৎসা ব্যবস্থায় সংকট সৃষ্টি হতে পারে বলে তিনি জানান।
এমইউআর
