সুরমা নদীতে আটকে পড়া সেই ঢাবি শিক্ষার্থীদের উদ্ধার


সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর মাঝে আটকে পড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। রোববার সকাল ৮টায় দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা পর সেখান থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে সেনাবাহিনীর একটি দল। এরপর ৯টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ জনসহ সর্বমোট ৩১ জন শিক্ষার্থীকে স্পিডবোটে করে সুনামগঞ্জের ছাতকে নেয়া হয়।
বর্তমানে তাদেরকে সিলেট ক্যান্টনমেন্ট নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সিলেটের দিকে আসার সময় ‘কপোতাক্ষ-অনির্বাণ’ নামের লঞ্চটি সুরমা নদীর মাঝামাঝি পৌঁছানোর পর ইঞ্জিন অকেজো হয়ে থেমে যায়। ফলে ঢাবির ২১ শিক্ষার্থীসহ প্রায় ১০০ যাত্রী মাঝ নদীতে আটকা পড়েছেন। রাতে পরিস্থিতি খারাপ থাকায় তাদের উদ্ধার করা যায়নি। তবে ভোরেই সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় তাদের সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
আটকে পড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শোয়াইব আহমেদ বলেন, ‘সকাল ৮ টার দিকে আমাদের উদ্ধারে সেনাবাহিনী আসে। এরপর আমাদের স্পিডবোটে করে ছাতকে নিয়ে আসা হয়। এখন আমরা গোবিন্দগঞ্জ হয়ে সিলেটে যাব। বিকল হওয়া লঞ্চটিও ঠিক হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ১৭ জন শিক্ষার্থীসহ আরও কিছু শিক্ষার্থী লঞ্চে করে সিলেট যাচ্ছেন।’
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবুল মনসুর আহমেদ বলেন, ‘গতকাল রাতে শিক্ষার্থীরা আটকে পড়ার খবর জানতে পারি। সঙ্গে সঙ্গে সুনামগঞ্জ ক্যান্টনমেন্টের রেসকিউ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শওকত এবং ওই জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে তাদের উদ্ধারে অনুরোধ জানাই। আজ সকালে সেনাবাহিনীর একটি টিম গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের সিলেট ক্যান্টনমেন্ট নিয়ে আসা হচ্ছে।’
এর আগে গতকাল আটকা পড়া শিক্ষার্থীরা সারারাত নদীতে কাটান। নদীতে তীব্র স্রোত এবং বৃষ্টি হচ্ছিলো বলে তারা আতঙ্কে ছিলেন। তারা জরুরি সেবা ৯৯৯ কল দিয়ে প্রশাসনের সাহায্য চেয়েছেন। তাদের ফোনে চার্জ না থাকায় এবং নেটওয়ার্ক না থাকায় তারা অনেক আতঙ্কগ্রস্ত ছিলেন। পরে সেনাবাহিনীর সাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যোগাযোগ করলে সেনাবাহিনী রাতের বেলা অভিযান চালানোর সমস্যার কথা জানায় এবং ভোরে উদ্ধারকাজে নামে। তারই ধারাবাহিকতায় সকাল ৮ টার দিকে তাদেরকে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গত ১৪ জুন রাতে টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের উদ্দেশ্যে সুনামগঞ্জ গিয়ে ১৫ জুন দিনের বেলা ঘোরাঘুরি করেন তারা। তারপর পানি বাড়লে সেখানে তারা আটকা পড়ে যান। পরবর্তী সময়ে তারা একটি ট্রলারের করে সুনামগঞ্জ শহরে পৌঁছান এবং পানসী রেস্টুরেন্টে অবস্থান নেন। সেখানে খাবার এবং বিশুদ্ধ পানির সংকটের পাশাপাশি বিদ্যুৎ, ফোনে চার্জ ও নেটওয়ার্ক না থাকায় আতঙ্কিত অবস্থায় ছিলেন তারা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আটকে পড়া শিক্ষার্থী এবং সুনামগঞ্জের স্থানীয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে তাদেরকে উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ পুলিশ লাইনে আনার ব্যবস্থা করেন। সুনামগঞ্জ থেকে তাদের সিলেট পাঠিয়ে দেয়ার কথা ছিল।
এমইউআর
