ঠিকাদারকে অজ্ঞান করে সাড়ে ৮ লাখ টাকা লুট, বই ব্যবসায়ীর কারাদন্ড


ঝালকাঠিতে চেতনা নাশক ওষুধ খাইয়ে ঠিকাদারের আট লাখ ৬০ হাজার লুটের দায়ে আজিজুল হক নামে এক বই ব্যবসায়ীকে ১০ বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, পরিশোধ না করলে আরো এক মাসের দন্ডাদেশ দেওয়া হয়। বুধবার বিকেলে ঝালকাঠি যুগ্ম ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. সাইফুল আলম এ রায় ঘোষণা করেন। দন্ডপ্রাপ্ত আজিজুল হক সদর উপজেলার রমনাথপুর গ্রামের আব্দুল হামেদ মাঝির ছেলে। সে ঝালকাঠি শহরে বই ব্যবসায়ী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, সদর উপজেলার রমানাথপুর গ্রামে যৌথভাবে পানি ব্যাবস্থাপনা সমবায় সমিতির মাধ্যমে সরকরি খাল খনন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এ কাজের ঠিকাদারী দায়িত্ব পান মো. আসাদুজ্জামান খান। কাজ শেষ হলে ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই বিলের ৮ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করেন। বিকেলে আজিজুলকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় যান তিনি।
শহরের শেখ মুজিব সড়কের বাসায় গিয়ে টাকার ব্যাগটি খাটের নিচে রাখে। তখন বাদীর স্ত্রী বাসায় না থাকায় ২০০ টাকা দিয়ে আসামি আজিজুল হককে বাহিরে ইফতার আনতে পাঠায় সে। কিছু সময় পরে আসামি ফিরে এসে নিজ হাতে চেতনানাশক ওষুধ দিয়ে চিনির শরবত গুলিয়ে বাদীকে ইফতারীতে পান করতে দেয়। ইফতারি করার উদ্দেশ্যে বাদী শরবত পান করলে সোফায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। এ সুযোগে বিছানার নিচে রাখা টাকার ব্যাগ নিয়ে আজিজুল পালিয়ে যায়। স্ত্রী বাসায় এসে তাঁর স্বামীকে মুখ থেকে ফেনা বের হওয়া অবস্থায় সোফায় অচেতন পড়ে থাকতে দেখে। তিনি মাথায় পানি ঢেলে তাকে সুস্থ করেন। স্থানীয় একজন পল্লী চিকিৎসকের মাধ্যমে প্রাথমিক চিকিৎসা করালে তাঁর জ্ঞান ফিরলে বিছানার নিচে টাকার ব্যাগ আছে কিনা দেখতে বলে। কিন্তু সেখানে টাকা পাওয়া যায়নি। এর পরে বাদীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে আজিজুলের কাছে জানতে চাইলে বিষয়টি অস্বীকার করায় ক্ষতিগ্রস্ত আজিজুল মামলা করতে বাধ্য হন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ২০১৫ সালের ১৭ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দেন। ওই বছরের ১৭ নভেম্বর আদালতে আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়। ৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারকয় রায় ঘোষণা করেন। বাদী আসাদুজ্জামান রমনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা আকব্বর আলী খানের ছেলে ও ঠিকাদার। বর্তমানে তিনি শহরের শেখ মুজিব সড়কের বাসিন্দা।
এইচকেআর
