ঝালকাঠির মামলা নৌ আদালতে পাঠানো নির্দেশ দিয়েছেন আদালত


সুগন্ধা নদীতে যাত্রীবাহী অভিযান ১০ লঞ্চে অগ্নিকা- ও হতাহতের ঘটনায় ঝালকাঠিতে দায়ের করা মামলা ঢাকার নৌ আদালতের পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক এএইচএম ইমরানুর রহমান শুনানি শেষে এ আদেশ প্রদান করেন।
এর আগে দুপুরে মামলাটির কার্যক্রম স্থগিত ও মালিকসহ তিন আসামির জামিন চেয়ে আদালতে আবেদন করেন আসামি পক্ষের আইনজীবী ইঞ্জিনিয়ার জিকে মোস্তাফিজুর রহমান। আসামিরা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকায় ঝালকাঠির আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। মামলাটির ধার্য তারিখ ছিল বৃহস্পতিবার। লঞ্চে অগ্নিকা-ে এ পর্যন্ত ৪৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ হয়েছে শতাধিক যাত্রী।
মামলার বিবরণে জানাযায়, গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর রাতে এমভি অভিযান লঞ্চে অগ্নিকা-ে হতাহতের ঘটনায় ঝালকাঠি থানায় গত ২৭ ডিসেম্বর রাতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। স্বজনহারা ঢাকার ডেমরার বক্সনগর এলাকার বাসিন্দা ইট-বালুর ব্যবসায়ী মনির হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। তাঁর বোন তাসলিমা আক্তার, ভাগ্নি সুমাইয়া আক্তার মিম, সুমনা আক্তার তানিসা ও ভাইয়ের ছেলে জুনায়েদ ইসলাম পুড়ে যাওয়া লঞ্চের মধ্যে ছিল। তাঁরা সবাই নিখোঁজ রয়েছে।
মামলায় পুড়ে যাওয়া লঞ্চের অন্যতম মালিক হামজালাল শেখ, দুই মাস্টার রিয়াজ সিকদার ও মো. খলিল, দুই চালক মাসুম ও কালাম, সুপারভাইজার আনোয়ার, সুকানী আহসান ও কেরানী কামরুলকে আসামি করা হয়। এছাড়াও অজ্ঞাত আরো ২০-২৫ জন লঞ্চের কর্মচারীকে আসামি করা হয়। আসামিদের মধ্যে লঞ্চের মালিক হামজালাল শেখ, সন্দিগ্ধ আসামি শামীম আহম্মেদ ও মো. রাসেলকে দৃশ্যত গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা ঝালকাঠি থানার এসআই নজরুল ইসলাম। যেহেতু মামলাটি ঢাকার নৌ আদালতে পাঠানো হয়েছে, তাই ঝালকাঠিতে তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর প্রয়োজনীয়তা নেই বলে জানান কোর্ট পুলিশের উপপরিদর্শক জাকির হোসেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝালকাঠি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা লঞ্চের মালিক হামজালাল শেখ ও ঝালকাঠির মামলায় সন্দিগ্ধ আসামি শামীম আহম্মেদ এবং মো. রাসেল ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকায়, তাদের তিনজনকে দৃশ্যত গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য ৪ জানুয়ারি আদালতে আবেদন করেছি। বৃহস্পতিবার নির্ধারিত তারিখে তাঁরা আদালতে হাজির না হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করেন। আদলত মামলাটি ঢাকার নৌ আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী ইঞ্জিনিয়ার জিকে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা আদালতকে জানিয়েছি, লঞ্চে অগ্নিকান্ডে হতাহতের সঙ্গে মালিকরা কেউ জড়িত নয়। বরংচ তাঁরা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। একই অপরাধের মামলা দেশের বিভিন্ন আদালতে চলতে পারে না। এছাড়া মামলাটি নৌ-অপরাধ আইনে হওয়ায় কেবলমাত্র সেখানেই বিচারিক কার্যক্রম চলার আইনগত বিধান রয়েছে। তাই মামলার কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়েছে। আমরা আসামিদের জামিন আবেদনও করেছি। একই সঙ্গে আসামিদের স্বশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ প্রত্যাহারের আবেদন করা হয়েছে।
পাশাপাশি আমরা এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিচার হওয়া উচিত বলে মনে করি। আদালত শুনানি শুনে বলেছেন, এটি বাংলাদেশের ইতিহাতে একটি মর্মান্তিক ঘটনা। এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন আদালত। তাই মামলাটি নৌ আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
এইচকেআর
