আমতলী থেকে বিলুপ্তির পথে বাঁশ-বেতের শিল্প


বরগুনার আমতলীতে এক সময় বাঁশ ও বেত দিয়ে দিয়ে ঘরের কাজে ব্যবহৃত জিনিসপত্র তৈরি করা হতো। এসব জিনিসপত্রের কদরও ছিল ভালোই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাঁশের উৎপাদন কমে যাওয়া এবং প্লাস্টিক মার্কেট দখল করে নেওয়ায় এ শিল্প বিলুপ্তির পথে।
উপজেলার হলদিয়া চাওড়া, আমতলী সদর, গুলিশাখালী, আড়পাঙ্গাশিয়া, কুকুয়া, আঠারগাছিয়ার ইউনিয়নেরএকাধিক গ্রামে বাঁশ ও বেতের কাজ হতো। এক সময় বিভিন্ন জাতের বাঁশ জন্মাতো এ এলাকায়। এ বাঁশ দিয়েই বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতো স্থানীয়রা। গুলিশাখালী ইউনিয়নের সুজন মাঝী ৭০ বলেন,ধানি জমি, বসত-বাড়ি গড়ে ইটভাটায় ব্যবহারের ফলে উজাড় হয়ে গেছে বাঁশ ঝাড়।
বাঁশের কম উৎপাদনই এ শিল্প হারিয়ে যাওয়ার মূল কারণ হিসেবে মানতে নারাজ এ শিল্পের কারিগররা। বাঁশের তৈজসপত্র তৈরি কারিগর মফিজ বলেন,‘ঋণ,পুঁজি,বাঁশ ও বেতের স্বল্পতার মাঝেও পেশা ধরে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এক সময় আমি কুলা,খাঁচা,চালনি,চাটাই,ঢোল,ওড়া,ঝুঁড়ি,ডুলা,মোড়া প্রভৃতি বাঁশজাত পণ্যে তৈরি করতাম। বড় ও মাঝারি সাইজের বাঁশ আগে ১০০-১৫০ টাকায় কেনা যেতো। আর এখন সেই বাঁশ সাড়ে ৩০০-৪০০ টাকা দামে কিনতে হয়।
একটি বড় বাঁশ দিয়ে ৬টি খাঁচা তৈরি করা যায়। তবে এতে করে কারিগরদের বেতন-ভাতা দিয়ে মুনাফা অর্জন একেবারেই সম্ভবপর হয় না।’ এ বিষয়ে আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, ‘বাঁশ ও বেত শিল্পসহ বিভিন্ন ধরনের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের ঐতিহ্য ধরে রাখা আমাদের দায়িত্ব।
কিন্তু সরকারিভাবে কোনও উদ্যোগ এবং বাজেট না থাকায় শিল্পের কারিগর ও উদ্যোক্তাদের উদ্বুদ্ধ করতে পারছি না। আমতলী উপজেলা নির্বাহীঅফিসার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, যদি সরকারিভাবে বাঁশ বেতসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের জন্য বাজেটের ব্যবস্থা করা যায় তার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে ব্যবস্থা নিতে বলবো।
এইচকেআর
