ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

Motobad news

সৌদি-আমিরাত দ্বন্দ্বে তেলের বাজারে অস্থিরতা   

সৌদি-আমিরাত দ্বন্দ্বে তেলের বাজারে অস্থিরতা   
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের দীর্ঘদিনের সম্পর্কে ফাটল ধরেছে। তেল উৎপাদনের কোটা নিয়ে তাদের মধ্যে গত সপ্তাহে প্রকাশ্যে তিক্ত মতবিরোধের পর বিশ্বের বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাসের আলোচনা স্থগিত হয়ে যায়। এর ফলে জ্বালানি বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে এবং তেলের দাম ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসির বরাতে জানা যায়, ওপেকের মূল সদস্য এবং এর বাইরে রাশিয়া, ওমান, বাহরাইনের মতো আরও ১০টি তেল উৎপাদনকারী দেশ নিয়ে গঠিত হয়েছে ওপেক প্লাস। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে গত দেড় বছর যাবৎ বিশ্ববাজারে তেল সরবরাহ নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে এই জোট। কিন্তু এর দুই গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ সৌদি ও আমিরাতের মধ্যে বিরোধ দেখা দেওয়ায় এখন ওপেক প্লাস টিকবে কিনা তা নিয়েই সংশয় তৈরি হয়েছে।

গত সপ্তাহে ওপেক প্লাসের নেতা সৌদি আরব এবং রাশিয়া তেল উৎপাদনের মাত্রা কম রাখার মেয়াদ আরও আট মাস বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। কিন্তু এতে বিরোধিতা করে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এ থেকেই সমস্যার শুরু। আমিরাত চায়, উৎপাদনের যে মাত্রাকে এখন মূল ভিত্তি হিসেবে ধরা হচ্ছে, তা পুনর্র্নিধারণ হোক। অর্থাৎ, উৎপাদন কতটা কমানো বা বাড়ানো হবে তা হিসাব করার জন্য যে মাত্রাকে ভিত্তি ধরা হচ্ছে, তা বাড়ানো হোক, যাতে তেলের উত্তোলন বাড়ানোর ব্যাপারে দেশগুলোর স্বাধীনতা থাকে। কিন্তু সৌদি আরব ও রাশিয়া এই দাবির বিপক্ষে। ঘনিষ্ঠ দুই মিত্র- সৌদি ও আমিরাতের জ্বালানি মন্ত্রীরা প্রকাশ্যে এ নিয়ে মতভেদ ব্যক্ত করলে ওপেক প্লাসের আলোচনায় অস্বাভাবিক মোড় নেয়।


ওয়াশিংটনে সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বেন কাহিল বলেন, তাদের এই মতভেদ সবাইকে চমকে দিয়েছে, যদিও এই বিভেদটা হয়তো অবশ্যসম্ভাবী ছিল। তিনি বলেন, ওপেক যে কোটা বেঁধে দিয়েছে তা আমিরাতের উৎপাদন সক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আবুধাবি তার তেল উৎপাদন শিল্পে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে। এখন চাহিদাও আবার বাড়তে শুরু করেছে।


ফলে দেশটি তাদের উৎপাদন বাড়াতে না পেরে গত বছর হতাশ হয়েছে। বহু বছর ধরে আরব বিশ্বে ভূ-রাজনীতির রূপরেখা নির্ধারণে বড় ভূমিকা রেখে আসছে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্ধুত্ব। আর তাদের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং আবুধাবির যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদের মধ্যকার ব্যক্তিগত বন্ধনও। এ দুই যুবরাজই মূলত তাদের দেশ শাসন করেন এবং তাদের লক্ষ্য উচ্চাকাঙ্ক্ষী। এ কারণে বহু বছর ধরে দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত বিষয়ে গভীর সহযোগিতা বজায় ছিল।


এমবি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন