ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

Motobad news

পদত্যাগের ইচ্ছা নেই, সরকার বললে চলে যাবো: শিক্ষা উপদেষ্টা

 পদত্যাগের ইচ্ছা নেই, সরকার বললে চলে যাবো: শিক্ষা উপদেষ্টা
সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার/ছবি-সংগৃহীত 
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

ঢাকার উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাজে কোনো ব্যত্যয় হয়নি বলে দাবি করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা সি আর আবরার।

তাই নিজ থেকে পদত্যাগ করার কোনো ইচ্ছা তার নেই। তবে সরকার (নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ) বললে চলে যাবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা।

বুধবার (২৩ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এ কথা জানান। এর আগে তিনি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সঙ্গে বৈঠক করেন।

রাষ্ট্রীয় শোক পালনের দিনে মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছে। তারা সচিবালয়ে ঢুকে পড়েছিল। শিক্ষার্থীরা আপনার এবং শিক্ষা সচিবের পদত্যাগ দাবি করেছেন। এরই মধ্যে শিক্ষা সচিবকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। উপদেষ্টার বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, ‘সেটা সরকার বিবেচনা করবে। আমার ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে.....।’

যে অব্যস্থাপনা হয়েছে এরপর আপনার আর দায়িত্বে থাকা উচিত কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় রায় আপনারাই দিয়ে দিচ্ছেন। আমার এখানে দেওয়ার তেমন কিছু নেই। কোনো রকমের অব্যবস্থাপনা এখানে হয়নি। সেটাই বোঝাতে চেষ্টা করছি।’

তিনি বলেন, ‘সচিবকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সেটা উচ্চতর একটা কমিটির সিদ্ধান্ত। সেই সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমি জড়িত ছিলাম না। কেন দেওয়া হয়েছে সে উত্তর আমি দিতে পারবো না। নিজে থেকে (পদত্যাগ) করার কোনো অভিপ্রায় নেই। এখানে আমার কাজের কোনো ব্যত্যয় হয়েছে বলে আমি মনে করি না।’

‘আমার তো নিয়োগকর্তাও রয়েছেন। তারা যদি মনে করেন এখানে ব্যত্যয় হয়েছিল। আমাকে যেতে বললে আমি অবশ্যই চলে যাবো। এখানে আঁকড়ে ধরার, নিজেকে জাস্টিফাই করার কোনো কিছু নেই’, বলেন সি আর আবরার।


পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা মধ্যরাতে দেওয়ায় মানুষ তো ভোগান্তিতে পড়েছে এবং সেজন্য আপনারা অনুতপ্ত হবেন কি না- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি যে ব্যাখ্যা দিলাম, তারা যদি ভেবে থাকেন ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন, তাদের সেই ধারণাটা পাল্টাবে বলে আমি মনে করি। বাস্তবে অনেক শিক্ষার্থী রয়েছেন এবং তাদের পিতা-মাতা রয়েছেন, তারা অসন্তুষ্ট হয়েছেন, পরীক্ষাটা কেন সময়মতো হলো না। এই বাস্তবতাটা কিন্তু রয়েছে। সেটাও একটু বিবেচনার মধ্যে নিতে হবে।’

মাইলস্টোনের ঘটনার পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কোনো ধরনের কমিটি গঠন বা শোক প্রকাশ করা হয়নি- এ বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, ‘এই মন্ত্রণালয় হচ্ছে রাষ্ট্রের একটি অঙ্গ। যেখানে প্রধান উপদেষ্টা শোক প্রকাশ করেছেন, তার মানে সব মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রের যে প্রক্রিয়া তার হয়েই তিনি করেছেন। আমাদের মনে হয় আলাদাভাবে আমাদের করার কোনো অবকাশ হয়নি। গতকাল বিভিন্ন স্কুল-কলেজে দোয়া মাহফিলের প্রোগ্রাম ছিল। সেটা মন্ত্রণালয়ে যথাযথভাবে হয়েছে।’

‘তদন্ত কমিটি সরকার করবে। এটা তো শুধু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিষয় না। এটা বৃহত্তর একটা বিষয়। একটা জিনিস মনে রাখতে হবে, যে ঘটনাটা ঘটেছে সেটা অত্যন্ত বেদনাদায়ক, সেটা কারোরই কাঙ্ক্ষিত নয়। এটা একটা দুর্ঘটনা, সেটা ঘটেছে।’


উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা যখন রাতে ঘরে ফিরছি তখন পরীক্ষার বিষয়টি সামনে এলো। আলোচনা হচ্ছিল পরীক্ষা পেছানো হবে কি হবে না। কেউ কেউ চাচ্ছিলেন পরীক্ষা হোক। সেই প্রক্রিয়ায় কয়েকজন উপদেষ্টার সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে। এটা এমন একটা সিদ্ধান্ত, যেটা হুট করে নেওয়া যায় না। হুট করে এককভাবে কারও নেওয়ারও এখতিয়ার নেই। যেভাবে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য একটা রোল ডাউন করতে হয়, পরীক্ষা যদি না হওয়া সে ক্ষেত্রে রোল ব্যাক করার একটা বিষয় রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রশ্নপত্রগুলো চলে গেলে একটা বিষয় হবে। স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো ইত্যাদি। সেগুলো ফিরিয়ে আনা। এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করেই, সেটা হয়েছে। সিদ্ধান্ত যখন হলো আমরা পরীক্ষা পেছাবো, সেটা নির্দিষ্ট সময় হয়েছে এবং পরবর্তীকালে সেটা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

চৌধুরী রফিকুল আবরার আরও বলেন, একটা ধারণা হয়তো রয়েছে একক সিদ্ধান্তে এটা অনেক আগেই দ্রুত করা যেত। এই ধারণাটা একেবারেই সঠিক নয়। ডিউ প্রসেস ফলো করে পরীক্ষা পেছানো হয়েছে। রাত আড়াইটা-তিনটার দিকে সিদ্ধান্তটা হয়েছে। অনেক বাচ্চারা বলেছেন, আমরা তো সেভাবে এফেক্টেড নই, আমরা চাই পরীক্ষাটা হয়ে যাক। আমাদের সেটাও বিবেচনার মধ্যে নিতে হয়েছিল।

ক্ষতিপূরণ চাওয়া হবে কি না- এ বিষয়ে সি আর আবরার বলেন, শোক জানাতে এবং পরিবারগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে আমরা মাইলস্টোন কলেজে গিয়েছিলাম। আমরা ছয় দফা দাবি পেয়েছিলাম। সেখানে কিছুটা উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। আপনি যে দাবি-দাওয়াগুলো (ক্ষতিপূরণ) বলছেন সেগুলো সেখানে আছে।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন