পিরোজপুরে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় পুরুষশূন্য গ্রাম


পিরোজপুরের নাজিরপুর সদর ইউনিয়নের সাতকাছিমা গ্রামে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার মামলায় ৫ শতাধিক মানুষকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলা হওয়ার পর গ্রেফতার আতঙ্কে এলাকার বৃদ্ধ, যুবক, কিশোর সবাই গ্রাম ছেড়েছেন।
গতরাতে পুরুষশূন্য গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
২১ জুন উপজেলার সদর ইউনিয়নের সাতকাছিমা গ্রামে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এক মেম্বার প্রার্থীর কর্মীদের হামলায় ১৫ জন আহত হন। এ সময় হামলাকারীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও বিজিপি সদস্যদের বহন করা গাড়ি ভাঙচুর করেন। টিয়ারশেল ও গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। এ ঘটনায় ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিজাডিং কর্মকর্তা মো. শাহ আলী আশরাফ বাদী হয়ে ৪৯ জনের নাম উল্লেখ করে ও আরও ৪শ থেকে ৫শ জনকে অজ্ঞাতনামা করে একটি মামলা দায়ের করেন।
নাজিরপুর সদর ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারেফ হোসেন খান জানান, স্থানীয় দুই মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে বিরোধে এ ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু মামলায় ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের বাইরের আওয়ামী লীগ,যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে। গত রাতে পুলিশ গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। পুরুষশূন্য গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নারীদের গ্রেফতারের হুমকি দিয়েছে পুলিশ।
মোশারেফ হোসেন খান অভিযোগ করেন, পুলিশ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রেফতার বাণিজ্যে মেতে উঠেছে। পুলিশের ভয়ে বৃদ্ধ, যুবক, কিশোর সবাই গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গেছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বেশ কয়েকজনকে আটক করে আবার ছেড়েও দিয়েছে।
নাজিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, মামলার আসামি তিনজনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সহিংসতার ঘটনায় গ্রামের প্রায় সকলেই জড়িত। ঘটনার পরই মামলা দায়ের করায় সকলের নাম সঠিকভাবে জানা যায়নি। এখন তদন্ত করে দেখা হচ্ছে, জড়িতদের বাইরে কাউকেই হয়রানি করা হচ্ছে না।
পিরোজপুরের পুলিশ সুপার হায়াতুল ইসলাম খান জানান, ঘটনার সাথে জড়িত না হলে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। শুধুমাত্র জড়িতদেরই আইনের আওতায় আনা হবে।
নিয়াজ মোর্শেদ/এসএমএইচ
