রাজাপুরে খাল খননে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ


ঝালকাঠির রাজাপুরের মঠবাড়ি ইউনিয়নের কালিখোলা থেকে শুরু করে ডহর শঙ্কর আঙ্কেল মার্কেট পর্যন্ত গ্রামীণ খাল খননে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সঠিকভাবে খাল খনন না করে বরাদ্দের টাকা লুটপাটের অভিযোগে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। মাত্র দুই হাজার ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে খালটি খননের জন্য এলজিইডি বিভাগ ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ করে।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, খাল খননের জন্য আদিব এন্টার প্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। নিয়মানুযায়ী খালটির গভীরে ৪.৯২ ফুট চওড়া, ১৬ ফিট গভীর ও স্থান ভেদে ৩০ থেকে ৩৫ ফুট ওপরের অংশ চওড়া করে খনন কাজ সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু খালটি নিয়ম অনুযাী কাটা হচ্ছে না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, খালের নিচে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ফুট চওড়া রয়েছে। তাও বিভিন্ন স্থানে কম বেশি। এছাড়া ১০ থেকে ১২ ফুট গভীর ও ওপরের চওড়াও ২০ থেকে ২৫ ফুটরে বেশি হবে না। সঠিক তদারকির অভাবে সরকারের বরাদ্দ টাকা ভেস্তে যাচ্ছে বলেও জানান স্থানীয়রা।
খালের তীরবর্তী বাসিন্দা ওবায়দুল হক বলেন, আগের থেকেও ছোট করে কাটা হচ্ছে খালটি। সরকারি খাল খননের যে উদ্দেশ্যে বরাদ্দ দিয়েছে, সে অনুযায়ী খনন হচ্ছে না। ঠিকাদার চরম অনিয়ম করেছে। সামনের বর্ষা মৌসুমেই বৃষ্টির পানিতে মাটি ধুয়ে পুনরায় খাল ভরাট হয়ে যাবে।
এছাড়া খালের দুই পাশের জমিতে ধান রোপন করা হয়। সঠিকভাবে খালটি খনন করা না হলে চাষবাদের মৌসুমে পলিমাটি নেমে এক মৌসুমেই ভরাট হয়ে যাবে। সরকারের লাখ লাখ টাকা খরচ কোন কাজেই আসবে না এলাকাবাসীর। খালটি সঠিকভাবে খনন করলে এলাকাবসীর উপকারে আসবে।
স্থানীয় আলমগীর খান অভিযোগ করেন, নিচে ৩ সাড়ে তিন ফুট কেটেছে। বেকু দিয়ে কেটে খালের পাড়েই রাখা হচ্ছে মাটি। এই মাটি এখনই ভেঙে পরতে শুরু করছে। সরকার খাল কাটার বরাদ্দের টাকা জনগনের উপকারে আসবে না। যেটুকু কাটা হচ্ছে তা কয়েক মাসের মধ্যেই বৃষ্টি ও মাঠের পলিতে ভরাট হয়ে যাবে। উল্টো খাল খননের নামে বহু পরিবারের গাছপালা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সঠিকভাবে খাল খননের দাবি করেন তিনি।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আদিব এন্টার প্রাইজের স্বত্বাধিকারী সরোয়ার হাসান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কাজ এখনও শেষ হয়নি। শেষে হবার পর কথা বলা যাবে। বরং স্থানীয় লোকজন খাল কাটতে দেয় না। যতটুকু মাটি কাটা খাল কাটা দরকার, তা কাটতে দিচ্ছে না। তাদের গাছ জমি ও রাস্তা দাবি করে খনন কাজে বাধা দেয়। বিষয়টি অফিসকেও জানানো হয়েছে। বাধার সম্মুখিন হবার পরেও কাটা হচ্ছে।
নিয়মানুয়ায়ী কাটা হবে, কোন রকম অনিয়ম দুর্নীতি করার সুযোগ নেই। কাটা শেষে মাপ দিয়ে দেখা হবে কোথাও কম বেশি হলে তা ঠিক করে খনন কাজ সম্পন্ন করা হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী অভিজিৎ মজুমদার বলেন, খনন কাজ সম্পন্ন হলে যন্ত্র দিয়ে সার্ভে করে মাটি পরিমাপ করে খনন কাজের বিল দেওয়া হবে। কোন অনিয়মের সুযোগ নেই। খনন কাজ চলমান রয়েছে, নিয়মানুয়ায়ী কোথাও কমবেশি খনন করলে তা পুনরায় খনন করে দিতে হবে।
এইচকেআর
