ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

Motobad news

রাজাপুরে প্রশাসনের অ‍াদেশ অমান্য করে সরকারি খালে পারিবারিক সেতু

 রাজাপুরে প্রশাসনের অ‍াদেশ অমান্য করে সরকারি খালে পারিবারিক সেতু
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের চল্লিশ কাহনিয়া গ্রামে দেড়শত বছরের সরকারি খালে আইন ও সরকারি বিধি-বিধান লঙ্ঘন করে একটি পরিবারের স্বার্থে ব্যক্তি উদ্যোগে অপরিকল্পিতভাবে সেতু নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। 

রাজাপুরের উপজেলা প্রশাসন সেতুটির নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিলেও আবারো শুরু করেছে স্থানীয় সাইদুল ইসলাম। 

অপরিকল্পিতভাবে সরকারি খালে সেতু নির্মাণ বন্ধের জন্য স্থানীয় লোকজন জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানা ও এলজিইডিতে লিখিত অভিযোগ করেন। রাজাপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসান মোহাম্মদ  শোয়াইব অবৈধ সেতুটির নির্মাণ কাজ বন্ধের নির্দেশ প্রদান করেন। প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে ২৯ মার্চ থেকে আবারো নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। 

অভিযোগে জানা যায়, বিষখালী নদীর শাখা উপজেলার বড়ইয়া ইউনিয়নের চল্লিশ কাহনিয়া গ্রামে (মৃধা খাল নামে পরিচিত) দেড়শত বছরের সরকারি খাল রয়েছে। আইন ও সরকারি বিধি অমান্য করে নেভিগেশন ছাড়পত্র বিহীন ব্যক্তি উদ্যোগে পারিবারিক সেতু নির্মাণ করছেন চল্লিশ কাহনিয়া গ্রামের মৃত আতাহার আলীর ছেলে সাইদুল ইসলাম। 

তিনি এলজিইডি, পানি উন্নয়ন  বোর্ড, পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রত্যায়ন ছাড়াই কাজ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সেতুটি নির্মাণ হলে সাধারণ মানুষের কোন উপকার হবে না। ব্যক্তি স্বার্থের এই সেতুটি নির্মাণ হলে সরকারি এ খালটিতে পানির প্রবাহ কমে যাবে। নৌযান চলাচল বিঘ্নিত হবে। জনবহুল এ খালটিতে  নৌযান চলাচল স্বাভাবিক ও পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে জন্য এলজিইডি বিভাগ লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে খালটি খনন কাজ করছে। পানি প্রবাহ সচল থাকলে জেলে ও কৃষকরা উপকৃত হবে। উপকৃত হবে শত শত পরিবার।


বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, জলপথে স্থাপনাদি নির্মাণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা অনুযায়ী নৌপথে সেতু নির্মাণ করতে হলে বিআইডব্লিউটিএর ছাড়পত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু নির্মাণাধীন সেতুতে বিআইডব্লিউটিএর ছাড়পত্র নেওয়া হয়নি।  নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স ছাড়া অবৈধ এ নির্মাণাধীন সেতু বন্ধ না করা হলে ভোগান্তির সৃষ্টি হবে। অবৈধভাবে নির্মাণ করা এ সেতুতে কোন আইন বিধিবিধান মানা হয়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা মামুনুর রশীদ নোমানী বলেন, প্রশাসন অবৈধ সেতুটির নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিলেও কিভাবে পুনরায় সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে, তা আমরা জানি না। অবৈধ এই সেতুটি যাতে নির্মাণ না করতে পারে সে ব্যাপারে এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।

এ ব্যাপারে ঝালকাঠি আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট মানিক আচার্য বলেন, আমি রাজাপুরের ইউএনওর সাথে কথা বলেছি। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এলজিইডি, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ অভ্যান্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পানি সম্পদ পরিকল্পনা প্রতিষ্ঠান (ডব্লিউ এ আর পি ও) পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া সরকারি খালে সেতু নির্মাণ সম্পূর্ণ অবৈধ এবং একটি ফৌজধারী অপরাধ।

অবৈধভাবে সরকারি খালে পারিবারিক সেতু নির্মানকারী সাইদুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রশাসন গুজ করে সেতু নির্মাণ করতেছি। আমরা নিজেদের টাকা দিয়ে সেতু করতেছি আমাদের খালে, তাতে সরকারের কি। 

রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, অবৈধভাবে নির্মিত সেতুটির কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তারা আবার কিভাবে নির্মাণ কাজ করতেছে বিষয়টি দেখবো।
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন