রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শনে তাহসান


বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুতির হার সারা বিশ্বে বছরের পর বছর ধরে বেড়েই চলছে। কভিড-১৯ মহামারিতেও ২০২০ সাল শেষে সারা বিশ্বে যুদ্ধ, সহিংসতা, নিপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে পালিয়ে বেড়ানো গৃহহীন মানুষের সংখ্যা প্রায় ৮ কোটি ২৪ লাখে এসে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ মানুষ নিজ দেশের ভেতরে আভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হলেও সারা বিশ্বজুড়ে প্রায় দুই কোটির বেশি মানুষ শরণার্থী হয়েছে এবং সংঘাত ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে নিজ দেশ ছেড়ে পার্শ্ববর্তী দেশে আশ্রয় নিয়েছে। এই দুই কোটি মানুষের প্রায় ৫ শতাংশ মানুষ আজ বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারের উদারতার কারণে আশ্রয় পেয়েছে। এমনটিই জানানো হয়েছে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনারের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজকের এই বিশ্ব শরণার্থী দিবসে আমরা মুগ্ধ হই শরণার্থীদের অদম্য প্রত্যয় দেখে, বিশেষ করে এই চলমান বৈশ্বিক মহামারিতেও। শরণার্থীরা সাধারণ পরিস্থিতিতেই অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। তবে গত এক বছর তাদের জন্য ছিল আরো অনেক কষ্টকর এবং বিভিন্ন নতুন প্রতিবন্ধকতায় পূর্ণ। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কভিড-১৯ এর টিকার মতো মৌলিক কিছু সেবার অপ্রাপ্তি।
এই বছরের বিশ্ব শরণার্থী দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘সুস্থ হই একসাথে, শিখি আর আলো ছড়াই’। এই দিনটি উদযাপন করতে ইউএনএইচসিআরের বাংলাদেশে নিযুক্ত শুভেচ্ছাদূত জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী ও অভিনেতা তাহসান খান কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কাছ থেকে তাদের জীবন সম্পর্কে জানতে পারেন।
কভিড-১৯ মহামারির শুরু থেকেই কক্সবাজার জেলায় গড়ে তোলা বিভিন্ন করোনা চিকিৎসা কেন্দ্রে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা ও স্থানীয় বাংলাদেশি জনগণ সমানভাবে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হচ্ছেন। আজকের শরণার্থী দিবসে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ইউএনএইচসিআরের সহায়তায় নির্মিত প্রথম আইসিইউ (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র)-এর এক বছর পূর্ণ হয়েছে। গত এক বছরে এই আইসিইউ-তে মোট ছয়শ ষাটেরও বেশি বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা শরণার্থী রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। এই আইসিইউ’র রোগীদের ডায়াগনস্টিক সেবা দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টাব্যাপী একটি ল্যাবরেটরি উদ্বোধন করেন আজ তাহসান খান।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তাহসান বলেন, ‘এই আইসিইউটি কক্সবাজারের প্রথম। শুধু এক বছরেই এটি অনেকের জীবন বাঁচিয়েছে। আজকের এই ল্যাবরেটরি সেবা যোগ করার মাধ্যমে আরো অনেক শরণার্থী এবং স্থানীয় জনগণের জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা নিশ্চিত করা যাবে। এটি সারা বিশ্বের জন্যই একটি দারুণ উদাহরণ।’
এমবি
