বাউফলে কলেজ ছাত্রকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম


আধিপত্য বিস্তার ও তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাউফলে তিন দফায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এসময় রিসাদ (২০) নামে এক কলেজ ছাত্রকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। আহত রিসাদকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার দাসপাড়া বাসষ্ট্যাণ্ড এবং গত রোববার ও গত শনিবার কালাইয়া বাজার এলাকায় ওই ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাত নয়টার দিকে কালাইয়া বন্দরের একটি হোটেলে বসে স্থানীয় মনজু ভাণ্ডাড়ির ছেলে আবু তাহের (২৪) ও তাঁর এক স্বজন ফোরকান মিয়ার ছেলে বাবুর (২৩) সঙ্গে দুলাল মেলকারের ছেলে আরিফসহ (৩৫) আরও কয়েকজনের কথা-কাটাকাটি হচ্ছিল।
ওই সময় কালাইয়া ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শোয়েব ইকবাল মামুন (৩৫) সেখানে উপস্থিত ছিলেন। একপর্যায়ে তিনিও আরিফের পক্ষ নিয়ে কথা-কাটাকাটিতে অংশ নেয় এবং যা মারামারিতে গড়ায়। পরে আরিফের মোটরসাইকেলটি রেখে দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ওই রাতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবু তাহের লোকজন নিয়ে গত রোববার সকালে কালাইয়া বাজার এলাকায় মহড়া দেয় এবং শোয়েব ইকবালের বড় ভাই নোমানের (৪৪) ইট, বালু, রড ও সিমেন্টের দোকানে তালা লাগিয়ে দেয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে কালাইয়া-দাসপাড়া ল্যাংড়া মুন্সির পুল এলাকায় আবু তাহেরের ওপর হামলা চালানো হয়। তখন ফের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয় এবং দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী রিসাদকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। রিসাদ যুবলীগ নেতা শোয়েব ইকবালের পক্ষের ছাত্রলীগ কর্মী।
আবু তাহের বলেন, তাঁদের এক স্বজন মারা গেছে।
তাঁকে দাফনের পর শনিবার রাতে তাঁর এক স্বজন বাবুকে নিয়ে হোটেলে নাশতা করতে গেলে কোনো কারণ ছাড়াই শোয়েব ইকবাল লোকজন নিয়ে তাঁদের দুজনকে মারধর করে মোটরসাইকেল রেখে দেন। তবে পরের দিন শোয়েব ইকবালের বড় ভাই নোমানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন তাহের।
যুবলীগ নেতা শোয়েব ইকবাল বলেন, গত শনিবার রাতে হোটেলে বসে বেয়াদবি করায় ওদেরকে (তাহের ও বাবু) কয়েকটি চড়-থাপ্পর দেওয়া হয়েছে। মোটরসাইকেল রেখে দেওয়া হয়নি, না নিয়েই চলে গেছে।পরের দিন চাঁদার দাবিতে তাহেরের নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল তাঁর বড় ভাই নোমানের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শোনিত কুমার গায়েন বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই পক্ষই আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের কর্মী-সমর্থক। আবু তাহের জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বাউফল পৌরসভার মেয়র জিয়াউল হকের সমর্থক ও যুবলীগ নেতা শোয়েব ইকবাল স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজের সমর্থক। মেয়র জিয়াউল ও সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের মধ্যে দলীয় কোন্দল দীর্ঘ দিনের।
এইচকেআর
