বাউফলে কোরআন তেলোয়াতে ডিজে গান ও অশ্লীল নাচের আসর বন্ধ


আকিকা উপলক্ষে রাতে গানের আসর বসায় স্বজনেরা। পাশেই হাফেজি মাদরাসা। ওই মাদরাসার পক্ষ থেকে কম শব্দে গান বাজাতে বলা হয়। কিন্তু কোনোভাবেই শুনছিলেন না আয়োজকেরা।
তাঁরা (আয়োজকেরা) বিকট শব্দে সাউণ্ডবক্সে গান বাজিয়ে গানের তালে তালে অশ্লীলভাবে নাচছিলেন তরুণ-তরুণীরা।
নিরুপায় হয়ে মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ওই গানের আসরে গিয়ে কোরআন তেলোয়াত শুরু করে দেন। একপর্যায়ে ওই গানের আসর বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন আয়োজকেরা। কোরআন তেলোয়াতের ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে ভাইরাল হয়ে যায়।
মাদরাসরার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে কমেন্ট করেন হাজারো মানুষ। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাত সাড়ে দশটার দিকে এমন ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নওমালা ইউনিয়নের বটকাজল গ্রামের নয়ারহাট এলাকার আবদুল জব্বার গাজি বাড়িতে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, গাজি বাড়ির এক শিশুর আকিকা (স্থানীয়ভাবে বলে মুসলমানি) উপলক্ষে বিশাল প্যাণ্ডেল করে আজ রোববার দুপুরে খাবার আয়োজন করে ওই শিশুর স্বজনেরা।
শনিবার রাতে আয়োজন করা হয় গান ও নাচের আসরের। ভাড়া করে আনা হয় নারী শিল্পীদের। সাউণ্ডবক্সের বিকট শব্দে পাশের নয়ারহাট জামিয়াতুস সুন্নাহ হাফেজিয়া কওমীয়া মাদরাসার হেফজ শাখার শিক্ষার্থীদের পাঠদান বিঘ্নিত হচ্ছিল।
তাঁরা গিয়ে আয়োজকদের অল্প শব্দে গান বাজাতে বলেন।
কিন্তু কোনোভাবেই আয়োজকেরা শুনছিলেন না। একপর্যায়ে ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ মাওলানা আল আমিন খলিলী ২০-২৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ওই গানের ষ্টেইজে গিয়ে কুরআন তেলোয়াত শুরু করে দেন। মুহুর্তেই বন্ধ হয়ে যায় গান ও অশ্লীল নাচের আসর।
স্কুল শিক্ষক কাওছার হোসেন বলেন,আনন্দ-ফূর্তির নামে অন্যের ক্ষতি করার কোনো সুযোগ নাই। প্রতিবাদের ধরনটি চমৎকার, খুবই ভালো লেগেছে।এ রকম হাজারো মানুষ ওই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বাহবা দিয়েছেন। মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফেজ মাওলানা আল আমিন খলিলী বলেন,তাঁর মাদরাসায় রাত সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত পাঠদান চলে।
যেভাবে উচ্চ শব্দে গান ও নাচানাচি চলছিল তাতে কোনোভাবেই পাঠদান করানো সম্ভব হচ্ছিল না। এ কারণে বাধ্য হয়ে এ উদ্যোগ নিতে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আকিকা দেওয়া সওয়াবের কাজ। সেখানে গান ও নাচ করে আনন্দ-ফূর্তির নামে অন্যের ক্ষতি করার কোনো সুযোগ নাই।
এইচকেআর
