ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

Motobad news

বাউফলে যুবলীগ নেতার হাত ও পা ভেঙে দিল প্রতিপক্ষ 

বাউফলে যুবলীগ নেতার হাত ও পা ভেঙে দিল প্রতিপক্ষ 
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল ও আধিপত্য নিয়ে এক যুবলীগ নেতাসহ ছয় ব্যক্তিকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে যুবলীগ নেতার দুই পা ও বাঁ হাত ভেঙে গেছে।

শুক্রবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলার বগা ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জখম হওয়া ব্যক্তিরা হলেন বগা ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি রাজনগর গ্রামের বাসিন্দা মো. রেজাউল করিম (৫০), মো.রাকিব (২২) ও মো. শফিকুল (২৫), কৌখালী গ্রামের মোহাম্মদ অলিউল্লাহ (২৮), সাবুপুরা গ্রামের মো. ফেরদৌস মুন্সি (১৯), বগা কলেজ এলাকার মো. বাদল (৪০)। 

তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত রেজাউলকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জাতীয় অর্থপেটিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) পাঠানো হয়েছে। অলিউল্লাহ ও ফেরদৌসকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

আহত ব্যক্তি ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রেজাউলসহ ১০-১২ জন নৌকার পক্ষে প্রচারণা চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। রেজাউলের বাড়ির অদূরে রাত ১০ টার দিকে পৌঁছালে সন্ত্রাসীরা তাঁদের ওপর হামলা চালায়। ওই সময় তাঁদেরকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। রেজাউলের দুই পা ও বাঁ হাত ভেঙে গেছে বলে তাঁর স্বজনেরা জানিয়েছেন। 

আহত অলিউল্লাহ সাংবাদিকদের অভিযোগ করেছেন,মাহামুদ হাসান ও শাহাবুদ্দিনের নেতৃত্বে তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। মাহামুদ হাসান বগা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। শাহাবুদ্দিন উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা ভাস্কর পাল বলেন,‘আহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের (রেজাউল) অবস্থা গুরুতর।তাঁর  মাথায়, বাঁ হাতে ও দুই পায়ে রক্তাক্ত গুরুতর জখম রয়েছে। এ কারণে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় অর্থপেটিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান মাহামুদ হাসান ও শাহাবুদ্দিনের মুঠোফোনে কল করলে বন্ধ পাওয়া যায়। মাহামুদ হাসানের বড় বোন বলেন,তাঁর ভাই এলাকায় ছিলেন না। এ মারামারি সম্পর্কে তাঁর ভাই কিছুই জানেন না। হয়রানি করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন বগা ইউনিয়ন যুবলীগের এক সদস্য,দলীয় কোন্দল ও আধিপত্য নিয়ে এর আগে গত বুধবার দুপুরে  যুবলীগ নেতা রেজাউল ও বগা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. সোহেল (৩৫) নেতৃত্বে ৪০-৫০ জনের একটি দল বগা ইউনিয়নের পশ্চিম সাবুপুরা গ্রামে তুলাতলা বাজার এলাকায় বাড়িতে ঢুকে হামলা চালিয়ে যুবলীগ কর্মী মো. হাসান খান (৩২) ও ছাত্রলীগ কর্মী মো. মারুফ খানকে (২০)  কুপিয়ে জখম করে।এ ঘটনার জেরেই দ্বিতীয় দফায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।

আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী, বর্তমান সংসদ সদস্য ও বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ স ম ফিরোজের সঙ্গে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদারের বিরোধকে কেন্দ্র করে আবদুল মোতালেব ও তাঁর ছেলে বগা ইউপির চেয়ারম্যান মাহামুদ হাসানকে দুই দফায় কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করা হয়েছিল। এবার সংসদ নির্বাচনে আ স ম ফিরোজ দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা বগা এলাকায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালান। সেই প্রভাবেই পাল্টাপাল্টি হামলা ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। আহত রেজাউল,অলিউল্লাহ ও ফেরদৌস, রাকিব, বাদল, শফিকুল সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজ সমর্থক এবং হাসান ও মারুফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেবের সমর্থক।

এছাড়াও শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দল ও আধিপত্য নিয়ে নাজিরপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুজাহিদুল ইসলাম ও ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনছার উদ্দিন এবং একই ইউনিয়নের মো. অলিউল ইসলাম (৪৫) ও ফিরোজ হাওলাদারকে (৩৮) মারধর করা হয়েছে।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শোনিত কুমার গাইন বলেন, গত বুধবারের মারামারির ঘটনার জেরে শুক্রবার রাতে রাজনগর গ্রামে দ্বিতীয় দফায় পাল্টা হামলা ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। 

বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এখন পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। নাজিরপুরে মারামারির ঘটনায়ও কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন