এক্স-রে মেশিনের পিন্টার বিকল, দুই মাস ধরে সেবা বঞ্চিত রোগীরা


ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন এক্স-রে মেশিন থাকলেও প্রিন্টার বিকল থাকায় প্রায় দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে সেবা। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। এদিকে এক্স- রে মেশিনের প্রিন্টার বিকল থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন গড়ে ১২ হাজার টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এক্স-রে মেশিনটি প্রায় কোটি টাকা মূল্যে কেনা হয়েছে। এর ক্ষমতা ১০০০ এম.এ। এটি শুধু হাসপাতালেই ব্যবহার করা হয়। অত্যাধুনিক হওয়ায় স্থানীয় ডায়াগণস্টিক সেন্টারগুলোতে এই এক্স-রে মেশিন ব্যবহার করা হয় না।
স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা রোগীরা এক্স-রে মেশিন চালু না থাকায় বাইরের ডায়াগণস্টিক সেন্টারগুলোতে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করে এক্স-রে করতে বাধ্য হচ্ছেন। বেসরকারি ডায়াগণস্টিক সেন্টারগুলোতে ৪০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে এক্স-রে করাতে।
অথচ সদর হাসপাতালের রেকর্ড অনুযায়ী প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ জন রোগীকে এক্স-রে করতে পারতেন ২০০ টাকা হারে। এতে প্রতিদিন ১২ হাজার টাকা আয় হতো হাসপাতালের। এক্স-রে বন্ধ থাকায় এই দুই মাসে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকা রাজস্ব হারিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কেন্দ্রীয় প্রকৌশল শাখায় জানানোর পরে সেখান থেকে প্রকৌশলী সরজমিনে এসে মেরামত খরচ নির্ধারণ করে দিবেন। স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালককে জানাবেন।
ফলে দ্রুত অর্থ বরাদ্দ করে মেশিনটি মেরামত কাজ সম্পন্ন করে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করবেন। কিন্তু দুই মাসেরও অধিক সময় পার হলেও এক্স-রে মেশিনের প্রিন্টার অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
ঝালকাঠি হাসপাতালে মঙ্গলবার সকালে চিকিৎকের পরামর্শ নিতে যান শহরের চাঁদকাঠি এলাকার বাসিন্দা আবুল হোসেন। চিকিৎসক তাকে বুকের এক্স-রে করাতে পরামর্শ দেন।
এক্স-রে কক্ষে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তা বন্ধ আছে। মেশিনের প্রিন্টার না থাকায় বাইরে থেকে এক্স-রে করানোর পরামর্শ দেওয়া হয় সেখান থেকে। তিনি বলেন, আমি হাসপাতাল থেকে এক্স-রে করালে সর্বোচ্চ দুইশ টাকা খরচ হতো।
বাইরে ডায়াগণস্টিকে গিয়ে জানতে পারলাম এটি করাতে খরচ হবে পাঁচশত টাকা। তিনশত টাকা বেশি দিয়ে আমাকে এক্স-রে করাতে হয়েছে। শুধু আবুল হোসেন না হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আরো কয়েকজন রোগী এক্স- রে মেশিনের প্রিন্টার বিকল থাকার অভিযোগ করেন।
হাসপাতালের বারান্দায় কথা হয় সরই গ্রাম থেকে আসা গৃহবধূ রওশনারা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার ছেলের পায়ে ব্যাথা পেয়েছে। চিকিৎকের পরামর্শ নিতে গেলে তিনি এক্স- রে করানোর পরামর্শ দেন। হাসপাতালে এক্স-রে করানো হয় না, তাই বাইরের ডায়াগণস্টিক সেন্টার থেকে বেশি টাকা খরচ করে করালাম।
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের তত্ত্বাাবধায়ক ডা. হাসান মাহমুদ বলেন, এক্স-রে মেশিনের প্রিন্টারের ত্রুটি দেখার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগের কেন্দ্রীয় পর্যায়ে কারিগরি বিভাগকে জানানো হয়েছে। তাদেরকে বারবার তাগিদ দেওয়ার জন্য ফোন করেও সময়মত পাওয়া যাচ্ছে না। আশাকরি দ্রুততম সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান করা হবে।
এইচকেআর
