আমতলীতে ফাঁদ পেতে মাছ নিধন!
5555555555.jpg)

বরগুনার আমতলীতে মৎস্য সংরক্ষণ আইন লংঘন করে ফাঁদ পেতে অবাধে চলছে মাছ নিধন। এতে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে দেশি প্রজাতির বিভিন্ন মাছ। উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারগুলোতে প্রকাশ্যে বেচাকেনা হচ্ছে এই সমস্ত মাছ নিধনের ফাঁদ। ‘মাছে ভাতে বাঙালি’ এই কথা শুধু কাগজে-কলমেই রয়ে গেছে।
বর্তমানে বাজারে একেকটি ‘চাই’ এর দাম ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা। অপরদিকে সরকার দেশিয় মাছ সংরক্ষণ ও নিধন রোদে বিভিন্ন সময়ে সময় উপযোগী আইন প্রণয়ন করলেও বাস্তবায়নকারী সংস্থা, কর্মকর্তা ও মৎস্য অধিদপ্তরের উদাসীনতার কারনে সর্বত্র সঠিকভাবে এসব আইন বাস্তবায়ন না হওয়ায় সময়ের পরিবর্তে আজ দেশি প্রজাতির বিভিন্ন মাছ বিলুপ্তির পথে।
এক সময়ে সাধারণ মানুষের কাছে অতিপ্রিয় ভেদী, টেংরা, গুলিসা টেংরা, পাবদা, দেশি প্রজাতির মাগুর, শিং, কৈ, শৌল, গজালসহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশী মাছ এখন আর পুকুর, নালা, বদ্ধ খাল-বিল ও ডোবায় আগের মত অহরহ পাওয়া যায় না। এসব মাছ না পাওয়ার মূল কারণ হচ্ছে মৎস্য আইন না মেনে অবৈধভাবে মাছ নিধন করা।
দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য নিধন আইন ১৯৫০ এর (৩) ধারায় সুস্পষ্টভাবে উলেখ আছে এপ্রিল থেকে আগস্ট পর্যন্ত খাল বিল পুকুর নালায় অবৈধভাবে ফাঁদ পেতে মাছ নিধন করা যাবে না। এই সময়ে সব ধরনের মাছের বংশ বৃদ্ধির জন্য ডিম ছাড়ে।
এই কারণে জালের বেড়া, বাসের গড়া, চাই, কাপড়ের বাঁধাসহ সব ধরনের ফাঁদ পেতে মা-মাছ ও পোনা ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই আইন অমান্যকারীর বিরুদ্ধে ১ মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত সাজা ও অর্থ দন্ডের বিধানও রয়েছে। অথচ উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামসহ সর্বত্রই মাঠে, বিলে, খালে, ডোবা ও নালায় অবাধে ফাঁদ পেতে মাছ নিধন করা হচ্ছে। কিন্তু মৎস্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কখনও কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি। বুধবার আমতলী পৌর শহরের সাপ্তাহিক বাজারে মাছ ধরার ফাঁদ ‘চাই’ বিক্রি করতে আসা বিক্রেতা রফিক মিয়া বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও ‘চাই’ বিক্রি করতে এসেছি।
প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে এর চাহিদা বেশী থাকে। বিক্রিও মোটামুটি ভালো। আর মাছ ধরার ফাঁদ ‘চাই’ যে অবৈধ সেটা তো কখনো আমাকে কেউ বলেনি। গুলিশাখালী ইউনিয়নের কলাগাছিয়া এলাকার গ্রাম ডাক্তার মোঃ আলম মিয়া বলেন, আমাদের এলাকাসহ ইউনিয়নের অন্যান্য এলাকায় ‘চাই’সহ বিভিন্ন ফাঁদ দিয়ে দেশিয় প্রজাতির ছোট বড় মাছ নিধন করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্চুক একাধিক জনপ্রতিনিধিরা বলেন, ফাঁদ দিয়ে মাছ স্বীকার বন্ধে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করে ফাঁদ বিক্রি ও এগুলো দিয়ে মাছ বন্ধ ধরা বন্ধ করলেই বিলুপ্তির হাত থেকে দেশিয় প্রজাতির মাছগুলো রক্ষা পাবে। এ বিষয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা হালিমা সরদার বলেন, বাজারে অবৈধ জাল অথবা ফাঁদ ‘চাই’ পাওয়া গেলে এগুলো বিক্রি বন্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, অবৈধ ভাবে ফাঁদ পেতে মাছ ধরার বিষয়ে আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বাজারে এগুলো পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এইচকেআর
