ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

Motobad news
শিরোনাম
  • ‘মব জাস্টিস’ মানবতার শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে : তারেক রহমান বৃহস্পতিবার শুরু এইচএসসি পরীক্ষা, অংশ নিচ্ছে ১২ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী হাসিনার সেই ‘৪০০ কোটি টাকার’ পিয়নের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট-সঞ্চয়পত্র ফ্রিজ একজন ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না, একমত বিএনপি পৃথিবীর সর্বনাশের জন্য আমরা আসামি : প্রধান উপদেষ্টা আওয়ামী লীগ আস্তে আস্তে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই: ফয়জুল করীম আইএমএফের অর্থছাড়: ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়ালো রিজার্ভ বাকেরগঞ্জের কারখানা নদীতে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি, আতঙ্কে গ্রাম ছাড়চ্ছেন মানুষ পন্টুনের ধাক্কায় ট্রলার থেকে ছিটকে নদীতে, জেলে নিখোঁজ
  • বিশ্বজুড়ে জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও চীনে কেন কমছে?

     বিশ্বজুড়ে জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও চীনে কেন কমছে?
    গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

    বিশ্বের অনেক দেশেই মূল্যস্ফীতি যখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তখন চীনে দেখা যাচ্ছে উল্টো অবস্থা। দেশটিতে মূল্যস্ফীতির হার কমতে কমতে ঋণাত্মক পর্যায়ে চলে গেছে। সেখানে গত জুলাই মাসে কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (সিপিআই) বা ভোক্তা মূল্যসূচক আগের বছরের তুলনায় ০.৩ শতাংশ কমে গেছে। গত দুই বছরের মধ্যে প্রথমবার এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে চীনে।

    এ অবস্থায় দেশটির আমদানি-রপ্তানির চিত্রও খুব খুব একটা ভালো দেখাচ্ছে না। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে ভোক্তাদের চাহিদা বাড়াতে বেশ চাপের মুখে পড়তে হবে সরকারকে।

    ডিফ্লেশন বা মূল্য-সংকোচন কী?
    চাহিদার কমে যাওয়ার কারণে যখন পণ্য বা সেবার দাম আগের চেয়ে কমে যায়, তখন সেটিকে ডিফ্লেশন বা মূল্য-সংকোচন বলা হয়।

    মূল্যস্ফীতি হলে কোনো কিছু কিনতে বেশি দাম দেওয়া লাগে, চাহিদা অনুযায়ী পণ্যের তুলনায় অর্থের পরিমাণ বেশি হয়ে যায়। আর মূল্য-সংকোচন হচ্ছে তার উল্টো। এতে পণ্য বা সেবার দাম কমে যায় এবং অর্থের মূল্য বাড়ে। অর্থাৎ, একই দামে আগের চেয়ে বেশি জিনিসপত্র কেনা যায়।

    এর পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমন- ভোক্তার চাহিদা কমে যাওয়া, কঠোর মুদ্রানীতির ফলে অর্থের জোগান কমে যাওয়া, মানুষের ব্যয় কমিয়ে সঞ্চয়ে আগ্রহী হওয়া, উৎপাদন খরচ কমে উৎপাদনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, ভবিষ্যৎ অর্থনীতি নিয়ে মানুষের আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া বা অর্থনৈতিক মন্দা- এমন অনেক বিষয়।

    চীনে কেন এমন হলো?
    করোনাভাইরাস মহামারির সময় এমন পরিস্থিতি অনেক দেশেই হয়েছে। কারণ সেসময় মানুষের হাতে টাকা থাকলেও খরচের সুযোগ কমে গিয়েছিল।

    কিন্তু বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পরে মানুষ খরচ করতে শুরু করলে মূল্যস্ফীতি বাড়তে থাকে। পরবর্তীতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, জ্বালানি বাজারে অস্থিরতার প্রেক্ষিতে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যায় আরও।


    সেখানে চীনের ক্ষেত্রে উল্টোটা ঘটার পেছনে দেশটিতে মানুষের চাহিদা ক্রমাগত কমতে থাকার দিকে ইঙ্গিত করেছেন অর্থনীতিবিদ ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি চায়না সেন্টারের রিসার্চ অ্যাসোসিয়েট জর্জ ম্যাগনাস।

    সোজা ভাষায়- চীনের মানুষজন বেশি খরচ করতে চাচ্ছে না, তাদের চাহিদা কমে গেছে। ম্যাগনাসের মতে, চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়ায় দামের দিকটাও দুর্বল হয়ে গেছে।

    এছাড়া, মহামারির কঠোর বিধিনিষেধ থেকে বের হয়ে আসার পরেও অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপের অভাবের কথাও উঠে আসছে।

    বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, মহামারির সময় বিভিন্ন উন্নত দেশের সরকারগুলো জনগণকে নানা আর্থিক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছিল। কিন্তু চীনে মানুষদের নিজের ভরসাতেই চলতে হয়েছিল।


    দেশটির সরকারের বরাদ্দ সুযোগ-সুবিধা ছিল মূলত উৎপাদন খাতের জন্য। ফলে বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পরেও অর্থনীতিবিদেরা যেমন আশা করেছিলেন, মানুষ সেভাবে খরচ করেনি।

    মজুরি বা পেনশনের দিক দিয়ে মানুষ তেমন উন্নতি দেখছে না, চাকরির বাজারে রয়েছে অনিশ্চয়তা, মানুষের খরচের ব্যাপারে আগ্রহ কমে গেছে। ধীরগতিতে বাড়তে থাকা অর্থনীতিতে মানুষের আস্থা কমে গেছে।


    চাহিদা কমতে থাকাকে উদ্বেগজনক হিসেবে দেখছেন হংকং ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির সহযোগী অধ্যাপক অ্যালিসিয়া গার্সিয়া-হেরেরো। তার মতে, মূল্য-সংকোচন চীনকে সাহায্য করবে না। এতে ঋণের বোঝা আরও ভারী হয়ে উঠবে। এগুলো ভালো খবর নয়।

    হংকং-এর অর্থনীতিবিদ জিয়া চুনের ধারণা, চীনের এই মূল্য-সংকোচন ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

    বিশ্বের জন্য এর অর্থ কী?
    বিশ্বজুড়ে যেসব পণ্য বিক্রি হয় তার একটা বড় অংশ আসে চীন থেকে। সেখানে মূল্য-সংকোচন দীর্ঘায়িত হলে সেটি অন্যান্য দেশের জন্য সুফল এবং কুফল দুটোই বয়ে আনতে পারে।

    ভালো খবর হচ্ছে, তখন অন্য দেশগুলা তুলনামূলক কম দামে চীনের পণ্য কিনতে পারবে, যা তাদের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। আর খারাপ দিক হতে পারে, সেসব দেশের উৎপাদকদের এটি হুমকিতে ফেলবে।


    বাজারে কম দামে চীনা পণ্য বিক্রি হলে স্থানীয় পণ্য বা ব্যবসায় এটি আঘাত করতে পারে। তাতে বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থানের জায়গা কমে যাবে। সেক্ষেত্রে বেকারত্ব বেড়ে যেতে পারে।

    এছাড়া চীনের বাজারে চাহিদা কমলে বিশ্বের রপ্তানি খাতেও এর আঘাত এসে পড়বে।


    এইচকেআর
    গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ