মঠবাড়িয়ায় আঞ্চলিক সড়ক নির্মাণে দুর্ণীতির অভিযোগ


পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া পৌরশহরের বহেরাতলা হতে থানাপাড়া পাথরঘাটা বাস ষ্ট্যান্ড পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণে ব্যাপক দুর্ণীতি, নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার ও ভবন মালিকদের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগ ওঠছে। বিষয়টি জানাজানি হলে পৌরবাসীসহ স্থানীয় জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গোটা দক্ষিনাঞ্চলের সড়ক পথের যোগাযোগ মাধ্যম এ জনগুরত্বপূর্ণ এ আঞ্চলিক এ মহাসড়ক নির্মানে সকল অনিয়ম, দুর্ণীতি রোধ ও সিডিউল অনুযায়ী করার লক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা এমাদুল হক খানকে আহবায়ক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদ উদ্দিন পলাশকে সদস্য সচিব করে সম্মিলিত নাগরিক অধিকার ফোরাম নামে ২৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মঠবাড়িয়া পৌরশহরের বহেরাতলা হতে থানাপাড়া পাথরঘাটা বাসষ্ট্যান্ড পর্যন্ত ১৬৬০ মিটার ড্রেনসহ আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণে সংশ্লিষ্ট সড়ক ও জনপদ বিভাগ ১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেয়। প্রধানমন্ত্রীর একান্ত প্রচেষ্ঠায় একনেকের ওই টাকা বরাদ্ধ পাওয়ার পর ওয়েষ্টার কনষ্ট্রাকশন এ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিঃ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ পায়।
কার্যাদেশ পেয়ে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি ড্রেন সহ ৩ ইঞ্চি সিসি ও ৯ ইঞ্চি আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ শুরু করেন। কাজের শুরুতেই সিডিউল মাফিক কাজ না করে নিন্মমানের সিমেন্ট, পাথর ও রডসহ নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়ম দুর্ণীতির অভিযোগ ওঠে। বিশেষ করে স্থানীয় একটি সুবিদাবাদী চক্র ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির যোগসাজশে এই সড়কের পাশে ড্রেন নির্মাণ নিয়ে ভবন ভাঙ্গা নিয়ে মালিকদের নিকট হতে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে।
এ সড়ক দিয়ে দক্ষিনাঞ্চলের মঠবাড়িয়া.পাথরঘাটা,বামনাসহ এ অঞ্চলের প্রায় ২০ লাখ লোকের চলাচলের একমাত্র সড়ক নির্মানে নিন্ম মানের সামগ্রী ব্যবহার ও দূর্ণীতির অভিযোগ ওঠায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সামাজিক উদ্যোক্তা ইসরাত জাহান মমতাজ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই সড়ক নির্মাণে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পাথর সিমেন্ট রডসহ নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করে ও কাঁদা মাটির মধ্যেই ঢালাই দেয়।
প্রেসক্লাব সভাপতি জাহিদ উদ্দিন পলাশ বলেন, সড়ক ও জনপদের প্রকৌশলী ও কর্মকর্তাদের উপস্থিতি ছাড়াই গভীর রাতে এ ব্যস্ততম সড়কে ঢালাইয়ের কাজ করে। যাতে জনমনে কাজের মান নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। এ্যাডভোকেট ফজলুল হক অভিযোগ করেন, ঠিকাদারের লোকজন ও তাদের সহযোগীরা কতিপয় মালিকরে সাথে বৈঠক করে মোটা অংকের টাকা ভবন মালিকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে রাস্তা ও ড্রেন সংকোচ করে নির্মান কাজ শুরু করে।
এতে বাঁধা দিলে তার সাথে দূর্ব্যবহার ও হুমকি প্রদানের অভিযোগ করেণ । তিনি এ বিষয়ে মামলা দায়ের করবেন বলে জানান। সম্মিলিত নাগরিক অধিকার ফোরামের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এমাদুল হক খান বলেন, বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্ণীতি ও সড়কের পাশে ভবন না ভাঙ্গার অজুহাতে মালিকদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ ওঠায় সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে মানসম্মত কাজ করার দাবিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই।
ইতিমধ্যে আমরা স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য, সওজ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি মাহবুবুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা সিডিউল মাফিক কাজ করছি। তবে কাজ করতে গিয়ে আমরা পৌরসভার মাটির তলদেশে অপরিকল্পিত পানির লাইনের পাইপ ও সওজ এর জমিতে অবৈধ স্থাপনা ভবন মালিকরা অপসারণ করে না নেওয়ায় কাজে কোন অগ্রগতি হচ্ছে না। সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমন বলেন, চলমান সড়কের কাজ পরিদর্শন করেছি এবং সড়ক ও জনপথের প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে সিডিউল মাফিক সকল কাজ করার জন্য সংশিষ্ট ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছি।
এইচকেআর
