ঢাকা শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

Motobad news

ঝালকাঠিতে পুলিশে খবর দিয়ে নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকালো স্কুলছাত্রী

ঝালকাঠিতে পুলিশে খবর দিয়ে নিজের বাল্যবিয়ে ঠেকালো স্কুলছাত্রী
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

ঝালকাঠির নলছিটিতে বাড়ি থেকে পালিয়ে পুলিশে খবর দিয়ে নিজের বাল্য বিয়ে ঠেকালো ইতু মনি নামে এক স্কুলছাত্রী। বৃহস্পতিবার রাতে ওই ছাত্রীর বাবা মা মারধর করে তাকে বাড়িতে আটকে রাখে। শুক্রবার বিকেলে প্রবাসী এক ছেলের সঙ্গে বিয়ের কথা ছিল তাঁর। ওই ছাত্রী সকাল ৬টার দিকে কৌশলে বাড়ি থেকে পালিয়ে এক বান্ধবির বাসায় যায়। 

পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের সহযোগিতায় নলছিটি উপজেলা প্রশাসন ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। ইতু মনি (১৪) উপজেলা খাগড়াখানা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ে।  ওই ছাত্রীর ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দিবে না মর্মে বাবা নুরুল ইসলাম হাওলাদার ও মা দুলু বেগম কাছ থেকে  মুচলেকা রেখে তাদের জিম্মায় দিয়ে দেয় উপজেলা প্রশাসন।

স্কুলছাত্রী ইতু মনির অভিযোগ, বাড়ির পাশের বেল্লাল ঢালী নামের এক সৌদি প্রবাসী যুবকের সঙ্গে শুক্রবার জোর পূর্বক বিয়ে ঠিক করে মা-বাবা। এতে রাজি না হওয়ায় তাকে মারধর করে বিয়েতে রাজি করার চেষ্টা করা হয়। পরে কৌশলে পালিয়ে সে এক বান্ধবির বাসায় আশ্রয় নেয়। সেখানে বসে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে খবর পাঠায় সে। 

উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। বাড়িতে গিয়ে বাবা মায়ের সঙ্গে কথা বলে মুচলেকা নেওয়া হয়। ১৮ বছর পূর্ণ না হলে তাকে কোথাও বিয়ে না দেওয়ার জন্য বলা হয় মুচলেকায়।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মেয়েটির বিয়ের বয়স হয়নি। তাকে বাবা মা জোর করে প্রবাসী এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে চেয়েছে। মেয়েটি ভয়ে বাড়ি থেকে পালায়। আমাকে ফোনে সে বিস্তারিত বলে। আমি বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশকে জানাই। পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাকির হোসেন বলেন, ইতু কেবলমাত্র নবম শ্রেণিতে পড়ে। ওকে জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এটা সম্পূর্ণ অন্যায়। আমি মেয়েটির পাশে দাঁড়িয়েছি। তাকে পূর্ণ বয়স না হওয়া পর্যন্ত যেন বিয়ে দেওয়া না হয়, এ ব্যাপারে নজর রাখবো।

নলছিটি থানার এসআই মফিজুর রহমান বলেন,‘ ওই স্কুলছাত্রী তাঁর এক বান্ধবির বাসায় পালিয়ে গিয়ে পুলিশের কাছে ফোন করে। পুলিশ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নিয়ে তাকে উদ্ধার করে মা ও বাবার জিম্মায় দেয়। ১৮ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তাকে বিয়ে দিতে নিষেধ করা হয়। এর পরেও যদি তাকে বিয়ের চেষ্টা করে, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন