নতুন রুপে আমতলী থানা, বদলে গেছে দৃশ্যপট


সীমানা প্রাচীরের দেয়ালে লেখা আছে, ‘পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ’সহ নানা ¯স্লোগান। ফটক দিয়ে ঢোকার সময় হাতের ডান ও বাম পাশে রলেখা রয়েছে স্বাগতম।
থানা কম্পাউণ্ডের মধ্যে লাগানো হয়েছে নানা ফুল ও ফলের গাছ। গাছগুলোতে ফুলও এসেছে। এসব দৃশ্য চোখে পড়বে বরগুনার আমতলী থানায় ঢুকলে। অথচ বছর দেড়েক আগেও দুর্গন্ধ থাকতো নিয়মিত। নালা নর্দমা ছিল ওই এলাকা পাড়ি দিতে দুর্ভোগে পড়তে হতো পথচারীদের।
কিন্তু সেই দৃশ্য এখন উধাও। মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে নালা নর্দমা এখন থানার পাশ দিয়ে গেলেই মন জুড়িয়ে যায়। নান্দনিক চিত্রকর্ম ও দেয়াল লিখন দিয়ে আমতলী থানার ভেতরে-বাইরে সাজানো হয়েছে। প্রবাদে ছিল, ‘বাঘে ছুঁলে আঠেরো ঘা, আর পুলিশে ছুঁলে ছত্রিশ!’ কিন্তু আমতলী থানার অনন্য পুলিশিং বদলে দিয়েছে পুলিশ সম্পর্কে মানুষের ধারণা।
সরেজমিনে দেখা যায়, থানার ভেতরে খালি জায়গা লাগানো হয়েছে হরেক রকমের ফুলের গাছ। যেটি প্রকৃতিপ্রেমীদের মন ছুঁয়ে যাবে। জরাজীর্ণ ওয়ার্ক স্টেশন বদলে গেছে। থানায় সেবা নিতে আসা সাংবাদিক জাকির হোসেন হায়াতুজ্জামান মিরাজ কবির দেওয়ান বলেন, সত্যি বদলে গেছে আমতলী থানা।’’
থানা সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করা মো. খলিল মিয়া বলেন, আগে থানার পাশ দিয়ে আমরা ভয়ে হাঁটতাম না এলাকাটা সবসময় নোংরা থাকতো। তিনি বলেন, এখন আমরা থানার পাশে আড্ডা দিই। দেয়ালে লেখা বাণীগুলো প্রায়ই পড়ি। আসলে আমতলী থানা এখন এ অঞ্চলের অন্য থানাগুলোর রোল মডেল।
বদলে যাওয়া থানা সম্পর্কে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)একেএম মিজানুর রহমান বলেন, ‘থানার বাহ্যিক দৃশ্য অভ্যন্তরীণ সেবা সম্পর্কে একটা ধারণা দেয়। থানা স্মার্ট না হলে সেবাও স্মার্ট হবে না। তাই এই সৌন্দর্য কার্যক্রম। পুলিশ সম্পর্কে জনমনে বেশকিছু নেতিবাচক ধারণা আছে, সেগুলো দূর করতেই ভিন্ন ধারার পুলিশিং করছি।’
আমতলী থানায় গিয়ে দেখা যায়, থানার সীমানা প্রাচীরজুড়ে অপরাধ বিষয়ক বিভিন্ন সচেতনতামূলক লেখা অথচ মাসদুয়েক আগেও এ দেয়ালঘেঁষে মূত্রত্যাগ করতো পথচারীরা। রাতের আঁধারে মলত্যাগের ঘটনাও ঘটতো। দিনেরবেলা সেই পথ পাড়ি দিতে দুর্ভোগে পড়তে হতো পথচারীদের। তবে এখন যেন থানার পাশ দিয়ে গেলেই মন জুড়িয়ে যায়।
সজীব মিয়া নামের একজন বলেন, ‘আজকে আমতলী থানায় গিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। থানার এত সুন্দর দেয়াল কখনো দেখি নাই।
শাওন নামের একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘বিগত ২০ বছর ধরে এ এলাকায় বসবাস করছি। কিন্তু কখনো এতো সুন্দর অবস্থায় আমতলী থানাকে দেখিনি। এখন এই থানার পাশ দিয়ে হেঁটে আসতেও অনেক ভালো লাগে। ধন্যবাদ টিম আমতলী থানা, এত সুন্দর একটি উদ্যোগ নেয়ার জন্য।’
ওসি একেএম মিজানুর রহমান বলেন, পুলিশ জনগণের বন্ধু সেই কথাটার বাস্তব রূপ দিতে বরগুনার পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশে আমতলী থানার টিম কাজ করছে। থানার অফিসাররা যাতে ভালো পরিবেশে কাজ করতে পারেন সেজন্য অত্যাধুনিক ওয়ার্ক স্টেশন করা হয়েছে। জরুরি সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।’তিনি আরো বলেন, থানা প্রতিষ্ঠার পর থেকে অদ্যবদি থানার কোন গেট নাই গেট করার চেষ্টা করতেছি।
এইচকেআর
