ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

Motobad news

পুলিশের ভুলে ৬ মাস কারাগারে কাঠমিস্ত্রি

পুলিশের ভুলে ৬ মাস কারাগারে কাঠমিস্ত্রি
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পুলিশের ভুলে ডাকাতি না করেও নামের মিল থাকায় ডাকাতি মামলায় ছয় মাস জেল খেটেছেন মনির মীর নামে বরগুনার এক কাঠমিস্ত্রি। পুলিশের ভুলে এখন তিনি প্রায় নিঃস্ব। তবে পুলিশ বলছে, আদালতের নির্দেশ ছাড়া এখন আর কিছুই করার নেই।

২০১৬ সালের ২৩ জুলাই গভীর রাতে ঢাকার কলাবাগান থানার গ্রিন রোডের একটি ফাস্টফুডের দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পরের দিন কলাবাগান থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৭-৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন মেহেদী হাসান মিঠু নামে এক ব্যক্তি। পরে তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৭ জুলাই ৭ জনকে অভিযুক্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও কলাবাগান থানার তৎকালীন পরিদর্শক আ ফ ম আছাদুজ্জামান।

তদন্ত প্রতিবেদনে ৬ নম্বরে অভিযুক্ত করা হয় বরগুনার আমতলী উপজেলার দক্ষিণ তক্তাবুনিয়া গ্রামের মনির মীর নামের এক কাঠমিস্ত্রিকে। ১১ নভেম্বর বাড়ি থেকে মনিরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকায়। ৬ মাস জেল খাটার পর জামিন পান তিনি।

এ মামলায় প্রায় ৬ বছর ধরে ঢাকার আদালতে হাজিরাও দিচ্ছেন তিনি। যথাযথভাবে তদন্ত না করে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ায় অহেতুক হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী।

ভুক্তভোগী মনির মীর বলেন, আমার নামে জীবনেও কোনো মামলা ছিল না এবং এ ঘটনার আগে কোনোদিন ঢাকা যাইনি। এ মিথ্যা মামলায় আমার জীবন ও সংসার প্রায় ধ্বংসের পথে।

এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, গ্রেফতারের আগ পর্যন্ত জীবনে কোনোদিন ঢাকা যাননি মনির মীর। ভুক্তভোগী মনির মীরের বাড়ির পাশে মনির গাজী নামের অপর আরেক ব্যক্তির বিরুদ্ধে খুন, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে ২৫টিরও বেশি। পুলিশ যথাযথ তদন্ত না করে সেই মনিরের পরিবর্তে কাঠমিস্ত্রি মনিরকে অভিযুক্ত করেছে।

এলাকাবাসী জানায়, পুলিশ ঘটনাস্থলে না এসে তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করায় এ ঘটনা ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাই, মনির মীরকে মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হোক।

হলদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান মিন্টু মল্লিক বলেন, ‘মূলত নামের মিল থাকায় তিনি এ ঘটনার শিকার হয়েছেন। কাঠমিস্ত্রি মনির মীর এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নয়।

বরগুনার আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম মিজানুর রহমান জানান, এ অবস্থায় আদালতের নির্দেশ ছাড়া এখন আর কিছুই করার নেই।

কাঠমিস্ত্রি মনির মীরের উপার্জনে চলে চারজনের সংসার। মামলাটি পরিচালনা করতে এখন পর্যন্ত প্রায় চার লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানায় পরিবারের সদস্যরা।


এসএমএইচ
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন