ঢাকা বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

Motobad news
ইআরএফের গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা

৪৯% বৈদেশিক মুদ্রাই আসে হুন্ডির মাধ্যমে

৪৯% বৈদেশিক মুদ্রাই আসে হুন্ডির মাধ্যমে
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

আমাদের দেশে ৫১ শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রা বৈধ পথে আসে আর ৪৯ শতাংশ আসে অবৈধ পথ যেমন হুন্ডির মাধ্যমে। এখান থেকে প্রতি মাসে যদি মাত্র ১০-১২ বিলিয়ন ডলার বৈধ পথে আনা যায় তাহলেই আমাদের রিজার্ভ বেড়ে যাবে। প্রবাসীদের আয় নিয়ে হুন্ডি ব্যবসার সঙ্গে দেশের বড় প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিরা জড়িত। দেশের কালো টাকার জোগানদাতাদের চিহ্নিত করতে না পারলে সহজে এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়। এছাড়া প্রবাসী শ্রমিকদের মধ্যে ডিজিটাল লিটারেসি বাড়াতে হবে। বৈধ পথে রেমিট্যান্স আনার জন্য ব্যাংকিং চ্যানেলকে প্রবাসীদের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে হবে এবং তাদের বৈধভাবে টাকা পাঠানোর জন্য উৎসাহিত করতে হবে।

গতকাল ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) অডিটোরিয়ামে ‘বৈধ পথে সহজে, নিরাপদে ডিজিটাল মাধ্যমে প্রবাসী আয় পাঠাতে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের চেয়ারম্যান ড. বজলুল এইচ খন্দকার। বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও উপপ্রধান বিএফআইইউ ইস্কান্দার মিয়া, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর, বিকাশের চিফ এক্সটার্নাল অ্যান্ড করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার মেজর জেনারেল শেখ মো. মনিরুল ইসলাম, পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশ চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ, গবেষক ও সমাজতত্ত্ববিদ খন্দকার সাখাওয়াত আলী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেম এর চেয়ারম্যান ড. বজলুল এইচ খন্দকার বলেন, আমাদের দেশে ৫১ শতাংশ বৈদেশিক মুদ্রা বৈধ পথে আসে আর ৪৯ শতাংশ আসে অবৈধ পথ যেমন হুন্ডির মাধ্যমে। এখান থেকে প্রতি মাসে যদি মাত্র ১০ থেকে ১২ বিলিয়ন বৈধ পথে আনা যায় তাহলেই আমাদের রিজার্ভ বেড়ে যাবে। সরকারি-বেসরকারি পদক্ষেপ নেয়ার কারণে কোভিডের সময় আমাদের রেমিট্যান্স আহরণ বেড়েছে। এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়া অব্যাহত রাখতে হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, বৈদেশিক মুদ্রা আনায় যে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে তা নেতিবাচকভাবেও ব্যবহূত হতে পারে। কারণ আমাদের দেশে টাকা পাঠানোর যেমন লোক আছে, আবার দেশ থেকে টাকা পাচার করার লোকও আছে। 

আহসান এইচ মনসুর বলেন, ইনভিজিবল সেক্টর যেমন আইটি সেক্টরে উন্নতি করতে হবে এবং এখানে বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়াতে হবে। দেশে বসে আইটি সেবা দিয়ে ভারত বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করছে। প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠাতে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলের আরো সম্প্রসারণ করতে হবে যাতে এটা এজেন্ট ছাড়াই হয়।

অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি বলেন, করোনার কারণে আমাদের প্রবাসীরা চাকরিচ্যুত হয়েছেন কিনা বা তার বর্তমান কী অবস্থা আমরা জানি না। আর এজন্য আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহে কোনো বাধা আসবে কিনা তাও নিশ্চিত নয়।

খন্দকার সাখাওয়াত আলী বলেন, আমাদের প্রবাসীরা যে ডলার উপার্জন করছে এক শ্রেণীর অসাধু লোক আবার ওই টাকা সেই দেশেই রেখে দিচ্ছে। যারা এ টাকা হুন্ডি করছে এদের সঙ্গে অনেক বড় প্রতিষ্ঠান-ব্যক্তি জড়িত। দেশের স্বার্থে এদের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক উপায়ে সমাধান বের করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

মাসরুর রিয়াজ বলেন, ব্যালান্স অব পেমেন্ট ক্রাইসিস মেটাতে ডলার সাপ্লাই বাড়াতে হবে। চার জায়গা থেকে ডলার সাপ্লাই আসে তার মধ্যে রেমিট্যান্স আমাদের সবচেয়ে শক্ত জায়গা। রেমিট্যান্স বাড়াতে হলে সরকার এবং বেসরকারি পর্যায় থেকে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধি নিয়ে ভাবতে হবে। আমাদের রফতানিতে বৈচিত্র্য আনতে হবে এবং সেবা রফতানি বাড়াতে হবে।


এএজে
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন