ঘর পাইয়ে দিতে টাকা নেয়ার অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে

বরগুনার বেতাগীতে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে হতদরিদ্র ভূমিহীনদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর ঘর বরাদ্দ চলছে। অভিযোগ রয়েছে, হতদরিদ্রদের ঘর পাইয়ে দিতে অনৈতিকভাবে টাকা নিচ্ছেন উপজেলার ১ নম্বর বিবিচিনি ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য, প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবর খন্দকার। তিনি ঘরপ্রতি ৪০-৭০ হাজার টাকা দাবি করছেন বলে জানা যায়।
টাকা না দিলে ঘর পাবে না কেউ- এমন কথা বলেছেন মো. মজিবর খন্দকার।
তার এই কথা বিবিচিনি ইউনিয়ন পরিষদ ভবন বাজার, অন্যান্য বাজারঘাট ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের স্থান ডিসিরহাট বাজারে সব মানুষের মুখে মুখে সমালোচিত হচ্ছে। এসব হাট-বাজারে ঘুরে এ কথা জানা যায়। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইউপি সদস্য মো. মজিবর খন্দকার।
বিবিচিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নওয়াব হোসেন নয়ন বলেন, ইউপি সদস্য ঘর পাইয়ে দিতে ঘুষ গ্রহণ কিংবা দাবি করলে দায়ভার ইউনিয়ন পরিষদের না।
জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রীর বরাদ্দকৃত আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় বেতাগী উপজেলা ১৯৯টি ঘরের বরাদ্দ পায়। প্রতিটি ঘর তৈরিতে খরচ দেওয়া হয়েছে এক লাখ ৯১ হাজার টাকা। এর মধ্যে উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ডিসিরহাট বাজারে ১২টি ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়।
নিয়মানুসারে, তালিকার প্রতিটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য মিলে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন ছাড়া ভূমিহীন খুঁজে তালিকা তৈরি করে ইউনিয়ন পরিষদ বরাবর জমা দেওয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে। এই ঘর নির্মাণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ওপর। এছাড়া ঘর নির্মাণকাজের সার্বিক পরিচালনায় থাকবেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ওয়ালিউ ইসলাম বলেন, ঘর বরাদ্দের কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের কাজ এখনও শেষ হয়নি। বাছাইকৃতদের তালিকা শিগগিরই প্রণয়ন করা হবে।
পত্রিকায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার একাধিক ভুক্তভোগী বলেন, মজিবর মেম্বার আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেখিয়ে এলাকায় যা খুশি তা-ই করেন। এ বিষয়ে ভয়ে কেউ কিছু বলতে সাহস পান না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য মো. মজিবর খন্দকার মোবাইল ফোনে বলেন, আমার নির্বাচনের সময় এলাকায় কিছু শত্রু তৈরি হয়েছে। তারাই এসব রটাচ্ছে। কোনো অর্থের লেনদেন হয়নি।
অভিযোগের বিষয়ে বিবিচিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. নওয়াব হোসেন নয়ন বলেন, টাকা নেওয়ার বিষয় আমার জানা নেই। আর যদি মেম্বার টাকা নিয়ে থাকেন, তার দায়ভার অবশ্যই তাকে নিতে হবে। তিনি বলেন, আমরা ইউনিয়ন পরিষদের মিটিং ডেকে এ বিষয়ে তদন্ত করবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর থেকে টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবে ঘটনা তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এইচকেআর
