‘নিখোঁজদের’ ‘জঙ্গি প্রশিক্ষণ’ দেওয়া হতো দক্ষিণবঙ্গের চরাঞ্চলে


কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ‘নিখোঁজ’ হওয়া তরুণদের সশস্ত্র হামলার প্রস্তুতি ও প্রশিক্ষণ নিতে পটুয়াখালী ও ভোলাসহ বিভিন্ন এলাকায় পাঠায় ‘জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া’ (পূর্বাঞ্চলীয় হিন্দের জামাতুল আনসার) সংগঠন।
সংগঠনটি ‘নিরুদ্দেশ’ হওয়া তরুণদের বিভিন্ন সেইফ হাউসে রেখে পটুয়াখালী এলাকায় তাদের বিভিন্ন ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে রেখে পটুয়াখালী ও ভোলার বিভিন্ন চর এলাকায় শারীরিক কসরত ও জঙ্গিবাদের বিষয়সহ বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো।
প্রশিক্ষণ নিতে যাওয়া নতুন সদস্যদের আত্মগোপনে থাকার কৌশল হিসেবে তাদের রাজমিস্ত্রী, রং মিস্ত্রী, ইলেক্ট্রিশিয়ানসহ বিভিন্ন পেশার কারিগরী প্রশিক্ষণও দেওয়া হতো।
বিভিন্ন সময় গ্রেফতার আসামিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ‘নিরুদ্দেশ’ হওয়া তরুণের সংখ্যা ৫০- এর বেশি। যারা প্রায় দেড় মাস থেকে দুই বছরের বেশি সময় ধরে নিরুদ্দেশ বা নিখোঁজ ছিল বলে জানা গেছে।
সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয় সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
রোববার (০৯ অক্টোবর) রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-১০ এর যৌথ অভিযানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও কেরাণীগঞ্জ এলাকা থেকে ৫ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব।
যারা গ্রেফতার হয়েছেন- সংগঠনের দাওয়াতী ও অন্যতম অর্থ সরবরাহকারী শাহ মো. হাবিবুল্লাহ ওরফে হাবিব (৩২), নেয়ামত উল্লাহ (৪৩), মো. হোসাইন (২২), রাকিব হাসনাত ওরফে নিলয় (২৮) এবং (৫) মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে রণি ওরফে জায়দ চৌধুরী (১৯)। তাদের কাছ থেকে ৫টি উগ্রবাদী পুস্তিকা, প্রায় তিনশত লিফলেট এবং ৫টি ব্যাগ জব্দ করা হয়।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, “জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া” (পূর্বাঞ্চলীয় হিন্দের জামাতুল আনসার) সংগঠনের অন্যতম অর্থ সরবরাহকারী হাবিবুল্লাহ কুমিল্লায় কুবা মসজিদে নামাজ পড়াতেন (ইমামতি)। এছাড়া তিনি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। তিনি ২০২০ সালে নেয়ামত উল্লাহর মাধ্যমে এই সংগঠনে যুক্ত হন। তিনি সংগঠনটির অন্যতম অর্থ সরবরাহকারী ছিলেন। তার নেতৃত্বে কুমিল্লা অঞ্চলে দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালিত হতো। তিনি সংগঠনের জন্য বিভিন্নভাবে অর্থ সংগ্রহ করতেন ও উগ্রবাদী কার্যক্রমে অর্থ সরবরাহ করতেন। পার্বত্য অঞ্চলের নাইক্ষ্যংছড়িতে তিনি প্রায় ২ বছর ধরে একটি মাদ্রাসা পরিচালনা করে আসছিলেন। তিনি পাহাড়ের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছাত্র সংগ্রহ করে তাঁর মাদ্রাসায় রাখতেন।
এইচকেআর
