দুই দিনে হালদা নদী থেকে দুটি মৃত ডলফিন উদ্ধার

চট্টগ্রামের রাউজানে হালদা নদীতে আবারও মৃত ডলফিন ভেসে এসেছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের আজিমের ঘাট এলাকা থেকে নদীর স্বেচ্ছাসেবকেরা ডলফিনটি উদ্ধার করেন। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে হালদা নদী থেকে তিনটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হলো।
নদী গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, আজ দুপুরে উদ্ধার হওয়া ডলফিনটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৭ ফুট। ওজন প্রায় দেড় মণ। ডলফিনটির পেটে ধারালো কিছুর আঘাত শনাক্ত করা হয়েছে। তবে ডলফিনটি পচে যাওয়ায় ময়নাতদন্ত না করে এটি আজিমের ঘাট এলাকায় মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।
হালদা নদীর স্বেচ্ছাসেবক মুহাম্মদ রোশাঙ্গীর আলম বলেন, আজ দুপুরে নদীতে একটি মৃত ডলফিন ভেসে থাকতে দেখা যায়। পরে ডলফিনটি স্বেচ্ছাসেবকেরা উদ্ধার করেন। পচন ধরায় ডলফিনটি ময়নাতদন্তের জন্য হালদা গবেষণা ও পরীক্ষাকেন্দ্রে নেওয়া হয়নি। রাউজান উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ওই স্থানেই এটি মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে বুধবার বিকেলে একই স্থান থেকে আরেকটি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়েছিল। ওই ডলফিনের ঠোঁটের নিচের অংশ বিচ্ছিন্ন ছিল। এ ছাড়া ১৪ জুলাই রাউজান উপজেলার পৌর এলাকার দক্ষিণ গহিরা এলাকায় নদীর শাখা বুড়ি সর্তা খালে তিন মণ ওজনের একটি মৃত ডলফিন ভেসে উঠেছিল।
গত পাঁচ বছরে প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননকেন্দ্র ও বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ হালদা নদী ও এর শাখাখাল থেকে মোট ৪০টি মৃত ডলফিন উদ্ধার করা হয়েছে। যেগুলোর প্রায় সব কটির শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছিল। হালদায় একের পর এক মৃত ডলফিন উদ্ধারের বিষয়টি উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন প্রাণি ও হালদা গবেষকেরা।
নদী গবেষক মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, আগে যেসব ডলফিন উদ্ধার করা হয়েছে, সেগুলোর সব কটিতে আঘাতের চিহ্ন ছিল। এর মধ্যে কয়েকটি ডলফিন কুপিয়ে মেরে ফেলার ঘটনাও ঘটেছে। একের পর এক ডলফিন মৃত্যুর বিষয়টি হালদার জন্য অশনিসংকেত। ডলফিন নদীর সুস্থ পরিবেশের জন্য একটি সহায়ক প্রাণি। ডলফিন রক্ষায় প্রশাসনের নতুন উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুস সামাদ বলেন, হালদার জীববৈচিত্র্য রক্ষায় উপজেলা প্রশাসন নিয়মিত কাজ করছে। তবু কেন ডলফিন মারা যাচ্ছে, তা খতিয়ে দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এএজে
