ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

Motobad news
ঘুর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে  

ভাণ্ডারিয়ায় পানিবন্ধি হাজারো পরিবার

ভাণ্ডারিয়ায় পানিবন্ধি হাজারো পরিবার
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ায় ঘুর্ণিঝড় ইয়াস এবং পূর্ণীমার জোয়ারে অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধির ফলে উপকূলীয় নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। গত সোমবার রাত থেকে গুরি গুরি বৃষ্টি এবং দমকা হাওয়া শুর হয়। 

মঙ্গলবার সকাল থেকে মাঝারি আকারে বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়া বইতে থাকে যা  বুধবার (২৬মে) সকাল থেকে বেড়ে যায়। তবে থেমে থেমে বৃষ্টি এবং জোয়ারের পানি বৃদ্ধির ফলে পানিবন্ধি হয়ে পড়েছে এ উপজেলার প্রায় ৫/৬হাজার পরিবার। এ উপজেলাটি নদ-নদী এলাকা।

 বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ প্রবল আকার ধারন করায় বলেশ্বর নদের শাখা কচাঁ এবং পোনা নদী তীরবর্তী এলাকার রেবিবাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ায়  মঙ্গলবার রাত থেকে পানির তীব্রতা বেড়ে যায়। 

যার ফলে উপজেলার তেলিখালী, নদমুলা, ধাওয়া, গৌরীপুর, ইকরি, ভিটাবাড়িয়া ইউনিয়ন এবং ভাণ্ডারিয়া পৌর শহর সহ উপজেলার প্রায় কাঁচা,আধাপাকা এবং পাকা বাড়িঘরে পানি ঢুকে ওই সকল পরিবারের মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়ে। বুধবার সরেজমিনে ওই সকল এলাকায় গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়। 

এ সময় আলাপকালে ভূক্তভোগীদের মধ্যে  খালেক সরদার,সাইদুল ইসলাম,ফারুক ইসলাম, বিউটি আক্তার, নুরজাহান, রাশিদা  আক্তার, নুর ইসলাম, আলমগীর, লুৎফর রহমান সহ বহু মানুষ জানান, জোয়ারের সময় পানি স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ৪/৫ফুট বৃদ্ধির ফলে আমরা পানিবন্ধি হয়ে পড়েছি। 

পানি বৃদ্ধির ফলে কাঁচা এবং আধাাপাকা বাড়িঘরের চুলা জ্বলতে দেখা যায়নি। তবে পাকা ঘরের দোতালায় অনেকস্থানে গ্যাসের মাধ্যমে রান্না করতে দেখা গেছে। 

এদিকে ঘুর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুুত ছিল। এছাড়া ৭টি মেডিক্যাল টিম, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, রেড ক্রিসেন্ট এবং স্বেচ্ছাসেবক টিম প্রস্তুুত রয়েছে। 

এদিকে মঙ্গলবার রাতে কিছুসংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্রে যারা এসেছেন তাদের মাঝে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদের সমন্বিত উদ্যোগে শুকনা খাবার,বিশুদ্ধ পানি, মোমবাতি, দেয়াশলাই, খাবার স্যালাইন সহ বিভিন্ন উপকরণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। বুধবার সকালেও এ কার্য্যক্রম দেখা গেছে।  উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং পৌর প্রশাসক সীমা রানী ধর,সহকারী কমিশনার ভূমি মো. তৌহিদুল ইসলাম, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আওলাদ হোসেন, উপজেলা প্রকৌশলী মো. বদরুল আলম এবং রেডক্রিসেন্ট সদস্যরা বিতরণ কাজে সহায়তা করেন।  অন্যদিকে উপজেলা দুর্যোগব্যাবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জানান, অতিরিক্ত পানি বৃদ্ধির ফলে  উপজেলায় কাঁচা, আধাপাকা ৩৫০০ এবং মোটামুটি পাকা ১৫০০ বাড়িঘর সহ প্রায় ৫,০০০ বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে। 

কৃষিতে চলমান আউশ ধান চাষের মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ১২/১৩শ হেক্টর জমির আউশের বীজতলা সহ ধানের মাঠ পানিতে তলিয়ে গেছে। ২৪শ খামারির মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এছাড়াও পান বরজ এবং মৌসুমি সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে কোথাও প্রাণহানির কোন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। 

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানাগেছে, সুপার সাইক্লোন ইয়াসের থমথমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া এবং পানি নেমে না যাওয়া পর্যন্ত ক্ষয় ক্ষতির সঠিক হিসাব নির”পন করা সম্ভব নয়। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং পৌর প্রশাসক সীমা রানী ধর জানান, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি এর পরামর্শে  আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছি। অন্যদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভাণ্ডারিয়া উপজেলা সাধারণ সম্পাদক ,দৈনিক পিরোজপুর কণ্ঠের প্রকাশক এবং ভাণ্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম এর প্রতিষ্ঠিত মিরাজুল ইসলাম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে উপজেলার বিভিন্ন আবাসন,আশ্রয়ন প্রকল্প,আশ্রয়কেন্দ্র সহ পানিবন্ধি মানুষের মাঝে শুকনা খাবার,বিশুদ্ধ পানি, মোমবাতি, দেয়াশলাই, খাবার স্যালাইন সহ বিভিন্ন উপকরণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়। 

এবং ইয়াসের কবল থেকে সুরক্ষায় থাকতে সকলকে আশ্রয় কেন্দ্রে আসার জন্য জনসতেনতা মূলক প্রচারনা অব্যাহত রয়েছে বলে বিষিয়টি নিশ্চিত করেছেন সংগঠনের পরিচালক এবং উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এহসাম হাওলাদার। 

তিনি আরো জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম এর নির্দেশে আমাদের স্বেচ্ছাসেবক টিমটি দিন রাত ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের হাত থেকে জানমাল রক্ষার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। রাতে যদি কোথাও কেহ বিপদগ্রস্থ হয়ে পড়ে তাকে সহায়তা করার জন্যও আমাদের নেতা-কর্মীরা প্রস্তুুত রয়েছে।
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন