ঝালকাঠিতে নদীর পানি বৃদ্ধি, প্রস্তুত আশ্রয়কেন্দ্র


ঝালকাঠিতে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন স্থানে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। সর্বত্র গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। দুপুরের পর সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে।
স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ ফুট পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। এতে নদী তীরের মানুষের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে পড়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছে মানুষ।
এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইয়াস মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। জেলা সদর ও উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোলর”ম খোলা হয়েছে। ৫৯টি সাইক্লোন সেল্টার ও ৪৯৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে আশ্রয়কেন্দ্রে রূপ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ৩৭টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্রেগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় শুরু হওয়ার আগেই নদী তীরের বাসিন্দাদের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেওয়ার জন্য বলেছেন জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ১ কোটি ১৩ লাখ টাকা ও দুইশ টন চাল ও দুইশ বান্ডিল টিন মজুদ রাখা হয়েছে। এছাড়াও পানি বিশুদ্ধ করার জন্য পর্যাপ্ত ট্যাবলেট রয়েছে। সুগন্ধা নদী তীরের পৌরসভা খেয়াঘাট এলাকার বাসিন্দা মো. সেলিম বলেন, নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে, রাতে পানি বাড়লে ঘরের ভেতরে ঢুকে পড়বে।
শহর রক্ষা বাঁধ অতিক্রম করলে ঘরের মালামাল নিয়ে আমরা বিপদে পড়ে যাবো। সদর উপজেলার চরভাটারাকান্দা এলাকার বিষখালী নদী তীরের বাসিন্দা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকেই নদী উত্তাল।
যেকোন সময় ঘরের ভেতরে পানি উঠতে পারে। আমাদের কাছাকাছি সাইক্লোন শেল্টার আছে, পরিস্থিতি বুঝে সেখানে আশ্রয় নিবো।
ঝালকাঠি পৌরসভার মেয়র মো. লিয়াকত আলী তালুকদার বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। ঝড়ের আঘাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে ব্যক্তিগতভাবে এবং সরকারিভাবে সহায়তা করা হবে।
ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় ইতোমধ্যেই আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। পাশাপাশি বিভিন্ন বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়েছে। মেডিক্যাল টিম, স্বেচ্ছাসেবক ও পর্যাপ্ত ওষুধের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
আমরা আগের চেয়ে বিদ্যালয়ে আশ্রয়কেন্দ্র বাড়িয়েছি, কারণ করোনার মধ্যে যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাঁরা সেখানে থাকতে পারেন। তাদের খাবারের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ১ কোটি ১৩ লাখ টাকা ও দুইশ টন চাল মজুদ রাখা হয়েছে। সুতরাং সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আমাদের প্রস্তুতি ভালো রয়েছে।
এইচকেআর
