ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

Motobad news

সরকারি জমিতে চেয়ারম্যানের ঘর: উচ্ছেদ করল প্রশাসন

সরকারি জমিতে চেয়ারম্যানের ঘর: উচ্ছেদ করল প্রশাসন
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল গফ্ফার খানের বিরুদ্ধে সরকারি খাস জমিতে দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাতের আঁধারে ঘর উত্তোলন দেখে স্থানীয় আরো কয়েকজন ব্যক্তি ওই এলাকায় সরকারি জমিতে টিনের বেড়া দিয়ে দখল দেয়। 

বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হলে বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে দেয়। স্থানীয়রা জানায়, সুবিদপুর ইউনিয়নের তালতলা বাজারে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের বড় হাট বসে আসছে। হাটের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে খাল। এই খাল দিয়ে নৌকায় হাটে মালামাল আনা নেওয়া করেন ব্যবসায়ীরা। গত মঙ্গলবার রাতে খালের পাশের সরকারি জমিতে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল গফ্ফার খান লোকজন দিয়ে একটি দোকান ঘর উত্তোলন করে। সকালে হাটে আসা ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা বিষয়টি দেখে ক্ষুব্দ হয়। চেয়ারম্যানের ঘর দেখে কেউ কিছু বলার সাহস পাচ্ছিল না। 

এরই মধ্যে বুধবার রাতে চেয়ারম্যানের দোকানের পাশের সরকারি জমিতে প্রায় ১০০ ফুট এলাকা দখল করে টিনের বেড়া দেয় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। এতে খাল দিয়ে নৌকায় মালামাল নিয়ে হাটে আসা ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েন। স্থানীয় বাসিন্দা তরিকুল ইসলাম জানান, সুবিদপুরের ইউপি চেয়ারম্যান তাঁর লোকজন নিয়ে রাতের আঁধারে সরকারি জমিতে দোকান ঘর উত্তোলন করেন। পরে আরো অনেকেই সরকারি জমি দখল করে টিনের বেড়া দিয়েছে। এতে বাজারে ঢোকার সড়কটিও আটকে গেছে। 

ব্যবসায়ীরা নৌকায় মালামাল উঠাতে পারে না। খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন একজন সার্ভেয়ারের নেতৃত্বে সরকারি কর্মচারীদের পাঠিয়ে দখল উচ্ছেদ করেছে, আমরা তাদের এ কার্যক্রমের জন্য ধন্যবাদ জানাই। ভবিষ্যতে কেউ যেন এই জমি দখল না করতে না পারে সে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি। রাসেল মোল্লা নামে এক যুবক বলেন, রাতের আঁধারে ঘর উত্তোলন করায় সবাই অসন্তুষ্ট। এই বাজারটি অনেক পুরনো, এভাবে দখল হয়ে গেলে বাজারের পরিধি ছোট হয়ে যাবে। এতে সবারই ক্ষতি হবে।  

তালতলা বাজারের ইজারাদার শাহীন খান বলেন, আমরা সকালে এসে দেখি খালের পাশে অবৈধ একটি ঘর। সেই ঘরের পাশে টিনের বেড়া দিয়ে প্রায় ১০০ ফুট দল করা হয়েছে। এটা দেখে আমরা স্থানীয় ইউপি সদস্যদের কাছে জিজ্ঞাসা করেছি। তাঁরা বলেছে প্রভাবশালী একজন এটা উঠিয়েছে। আমরা তাদের কিছু বলিনি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুম্পা সিকদার ও সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) মাসুমা আক্তার রুমি বিষয়টি জানতে পেরে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের দিয়ে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দিয়েছেন। 

ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল গফ্ফার খান বলেন, আমি রাতে বরিশাল থাকি। শুনেছি সরকারি জমি দখল করে কারা যেন ঘর দোকান উত্তোলন করেছে। আমি প্রশাসনের কাছে বিষয়টি বলেছি, তাঁরা এসে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দিয়েছে। আমার নাম ভাঙিয়ে প্রতিপক্ষ শত্রুরা এ কাজটি করতে পারে। আমি নিজে নদী-খার রক্ষার জন্য সব সময় আন্দোলন করি। আমার সরকারি জমির কোন প্রয়োজন নেই। বাজারে একটি ঘর ওঠানোর পরে পুরো এলাকায় টিনের বেড়া দিয়েছে স্থানীয় কয়েকজন যুবক। তাদের বেড়াও ভেঙে ফেলা হয়েছে। 

নলছিটি ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার বজলুর রশীদ বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনারের (ভুমি) নির্দেশে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়েছে। এতে কেউ বাঁধা দেয়নি। কারা উঠিয়েছিল, তা-ও আমরা জানি না। তবে এলাকার ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা আমাদের সহযোগিতা করেছে।  

নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুম্পা সিকদার বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় লোকজন ও ইউপি চেয়ারম্যান আমাকে ফোন করে অবৈধ স্থাপনার বিষয়টি বলেন। আমি দুপুরে ভ‚মি অফিসের সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের পাঠিয়ে এগুলো উচ্ছেদ করিয়েছি। ভবিষ্যতে যেন কেউ সরকারি জমি দখল করতে সাহস না পায়, সেজন্য বাজারের সবাইকে ডেকে বলা হয়েছে।
 


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন