ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

Motobad news

পাথরাঘাটায় বিশুদ্ধ খাবার পানি সংকট

পাথরাঘাটায় বিশুদ্ধ খাবার পানি সংকট
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় উপজেলা পাথরঘাটায় বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। শুকিয়ে গেছে মিঠাপানির উৎস পুকুরের পানি, অকেজো হয়ে আছে শতশত নলকূপ। ফলে  দূষিত পানি ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার সামর্থ্যবানরা  বেসরকারি উদ্যোগে স্থাপিত আধুনিক ফ্লিল্টারাউজ সিস্টেমে বিশুদ্ধকরা পানি প্রতি লিটার ১ টাকা দরে কিনে পান করছেন। যাদের কেনার সামর্থ্য নেই তারা দূষিত খাবার পানি পান করছেন। ফলে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানান রোগ।

এবছর বৈশাখ পেরিয়ে জৈষ্ঠ্যের প্রথম সপ্তাহ চললেও দক্ষিণাঞ্চলে দেখা মেলেনি বৃষ্টি। বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কম বৃষ্টিপাতের ফলে সেখানকার পুকুরের পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। এদিকে গভীর নলকূপ বসে না পাথরঘাটার উপজেলার ৭ টি ইউনিয়নের ২ টি ইউনিয়নে। এর মধ্যে পাথরঘাটা সদর ও চরদুয়ানি ইউনিয়ন ছাড়াও কাঠালতলী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড, নাচনাপাড়া ইউনিয়নের ৭নং, ৮নং ও ৯ নং ওয়ার্ড এবং কালমেঘার একটি ওয়ার্ডে গভীর নলকূপ বসেনা। 

সরকারি বরাদ্দ অনুযায়ী পাথরঘাটার প্রতি ইউনিয়নে ২৬ টি ওয়াটার পয়েন্ট থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে তা নেই। নাচনাপাড়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হাসিনা বেগম জানান, এলাকায় টিউবওয়েল না থাকায় পুকুরের পানিই খাবার পানি হিসেবে পান করি। আবার ওই পুকুরেই গোসলসহ সব কাজ করা হয়। এবছর বৃষ্টি না হওয়ায় পুকুরের পানি শুকিয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে হয়ে গেছে গ্রামের অধিকাংশ পুকুরের পানি। দূষিত পানি ব্যবহার ছাড়া উপায় নেই। ফিটকারী দিয়ে পরিষ্কার করে ওই পানি ব্যবহার করেন বলে জানান তিনি।

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ সহকারী প্রকৌশলী দোলা মল্লিক জানান, পাথরাঘাটা উপজেলার ১ হাজার ৮২৭ টি গভীর নলকূপের মধ্যে ৪৭৬ টি নলকূপ অকেজো হয়ে পড়ে আছে। যেসব এলাকায় নলকূপ স্থাপন করা যায় না সেখানে রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং সিস্টেম (বৃষ্টির পানি ধরে রাখা) স্থাপন করা হয়। প্রথম ধাপের কাজ চলমান রয়েছে। সরকারের পলিসি অনুযায়ী ৫০ জন মানুষের জন্য একটি করে গভীর নলকপ থাকার কথা থাকলেও উপজেলার গ্রামগুলোতে প্রয়োজনীয় নলকূপ নেই। এজন্য এই অঞ্চলের মানুষেরা বাধ্য হয়ে পুকুরের পানি পান করছে।

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ জানায়, দূষিত পানি ব্যবহারের ফলে ডায়রিয়া, কলেরা, আমাশয়, জন্ডিস, গ্যাস্ট্রিক, ইউরিন্যাল ইনফেকশান, চর্মরোগ, কোষ্ঠকাঠিন্য, যৌনাঙ্গে চুলকানি ও ঘা এর মতো রোগ বেড়েছে। নারীদের মধ্যে এসব রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা দিচ্ছে, যা পরবর্তীতে দীর্ঘমেয়াদী রোগ যেমন টিউমার এবং জরায়ু ক্যান্সারে রূপান্তরিত হচ্ছে।
 


এমইউআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন