ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

Motobad news

ঝালকাঠিতে সেতুর লোহার মালামাল বিক্রি করলেন ইউপি চেয়ারম্যান, আটক করল জনতা

 ঝালকাঠিতে সেতুর লোহার মালামাল বিক্রি করলেন ইউপি চেয়ারম্যান, আটক করল জনতা
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

ঝালকাঠিতে পুরনো সেতুর লোহার মালামাল বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মো. আবুল বাসার খানের বিরুদ্ধে। 

গতকাল সোমবার বিকেলে ট্রাকে করে বরিশাল নেওয়ার পথে স্থানীয় জনতা রাজাপুর গ্রাম থেকে লোহার ভীম ও এ্যাঙ্গেলসহ দেড়টন মালামাল আটক করে। 

পরে পুলিশ গিয়ে মালামাল জব্দ ও একজনকে আটক করে। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সেতুর লোহার মালামাল বিক্রির জন্য ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।  

স্থানীয়রা জানায়, পোনাবালিয়া ইউনিয়নে নয়াখালের সেতু ও আলমগীর হাওলাদারের বাড়ির সামনে খালের দুটি আয়রণ সেতু পুরনো হওয়ায় ভেঙে যায়। ২০২১ সালে নতুন করে সেতু দুটি নির্মাণ করে দেয় এলজিইডি। পুরনো সেতু দুটি ভেঙে লোহার দেড়টন মালামাল ইউপি চেয়ারম্যানের ছিলারিশ গ্রামের বাড়িতে হেফাজতে রাখা হয়। 

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইউপি চেয়ারম্যান আবুল বাসার খান ওই মালামাল গোপনে নলছিটি শহরের ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী মো. মুনছুর সরদারের কাছে ৭৬ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করে দেন। মুনছুর একটি ট্রাক নিয়ে সোমবার দুপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে লোহার মালামাল নিয়ে পোনাবালিয়া খেয়াঘাটে আসলে স্থানীয় জনতা ট্রাকটিকে আটক করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ট্রাকের মালামাল জব্দ করে। এ ঘটনায় মালামাল কেনার অভিযোগে ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী মুনছুরকে আটক করে পুলিশ। 

আটক মুনছুর কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার আরাফাত সরদারের ছেলে। সে ঝালকাঠির নলছিটি শহরের মল্লিকপুরে একটি বাসাভাড়া করে থাকেন। ভাঙ্গারি ব্যবসায়ী মো. মুনছুর সরদার বলেন, পোনাবালিয়ার ইউপি চেয়ারম্যান আমাকে ডেকে বলেছে, কিছু মালামাল বিক্রি করার আছে। আমরা আসলে ৭৬ হাজার ৫০০ টাকায় তিনি লোহার মালামাল বিক্রি করেন। আমি নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় লোজন ও পুলিশ এসে ট্রাক আটক করে। আমি তাদের কাছে সত্য কথা বলেছি।   

পোনাবালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের এক নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. নান্না খলিফা বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান পুরনো সেতুর লোহার মালামাল তাঁর বাড়িতে রাখে অবৈধভাবে। কোন রেজুলেশন ছাড়াই তিনি বাড়িতে এ মালামাল রাখেন। কাউকে না জানিয়ে গোপনে দেড়টন লোহার মালামাল বিক্রি করে দেন। এটা অন্যায় করেছেন চেয়ারম্যান, আমি তাঁর বিচার চাই।  গ্রাম পুলিশ মিন্টু হাওলাদার বলেন, মালামালগুলো চেয়ারম্যানের বাড়িতে ছিল। কিভাবে এগুলো বাইরে আসল, তা আমার জানা নেই। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেড়িয়ে আসবে।  

অভিযোগ অস্বীকার করে পোনাবালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. আবুল বাসার খান বলেন, আমার কাছে কোন সেতুর মালামাল নেই। আমি এগুলো বিক্রিও করিনি। একটি চক্র আমাকে ফাঁসানো চেষ্টা করছে। 

 ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খলিলুর রহমান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে সরকারি সেতুর লোহার মালামাল ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছে। এর সত্যতা যাচাই করার জন্য এসে ট্রাকটি আটক করা হয়। এ ঘটনায় ভাঙ্গারি ক্রেতাকেও আটক করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত চলছে, পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন