ঢাকা বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫

Motobad news
শিরোনাম
  • ‘মব জাস্টিস’ মানবতার শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে : তারেক রহমান বৃহস্পতিবার শুরু এইচএসসি পরীক্ষা, অংশ নিচ্ছে ১২ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী হাসিনার সেই ‘৪০০ কোটি টাকার’ পিয়নের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট-সঞ্চয়পত্র ফ্রিজ একজন ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না, একমত বিএনপি পৃথিবীর সর্বনাশের জন্য আমরা আসামি : প্রধান উপদেষ্টা আওয়ামী লীগ আস্তে আস্তে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাচ্ছে বিএনপি-আওয়ামী লীগের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই: ফয়জুল করীম আইএমএফের অর্থছাড়: ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়ালো রিজার্ভ বাকেরগঞ্জের কারখানা নদীতে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি, আতঙ্কে গ্রাম ছাড়চ্ছেন মানুষ পন্টুনের ধাক্কায় ট্রলার থেকে ছিটকে নদীতে, জেলে নিখোঁজ
  • বশেমুরকৃবিতে কেনাকাটায় দুর্নীতি

    ২০ টাকার পাইপ ৫০০ টাকা!

    ২০ টাকার পাইপ ৫০০ টাকা!
    গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

    খামার, নার্সারি, ভবন নির্মাণসহ বিভিন্ন কাজে পানি দেওয়ার জন্য চিকন হোসপাইপ ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে যেকোনো পাড়া-মহল্লার স্যানিটারি অথবা হার্ডওয়্যারের দোকানেই হোসপাইপ পাওয়া যায়। প্রতি ফুটের দাম সাধারণত ১৮ থেকে ২০ টাকা। কিন্তু গাজীপুরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরকৃবি) গবেষণা খামার লাইভস্টক অ্যান্ড পোল্ট্রি ফার্মের জন্য সেই হোসপাইপ কিনতে বরাদ্দ রাখা হয় প্রতি ফুট ১৩৩ টাকা করে। তা সত্ত্বেও প্রতি ফুট কেনা হয়েছে ৫০০ টাকা করে।

    শুধু হোসপাইপই নয়, এই খামারের জন্য সিমেনস ফ্রিজার, মিল্ক প্যাকেজিং মেশিন, প্রেগন্যান্সি ডিটেক্টর, ক্রিম সেপারেটরসহ নানা সরঞ্জাম কেনা হয়েছে কয়েক গুণ বেশি দামে। কিন্তু এর পরও এখনো ফার্মটি চালু করা সম্ভব হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি ইনস্টিটিউট স্থাপনের প্রক্রিয়া থেমে গেলেও একটি ইনস্টিটিউটের জন্যই কেনা হয়েছে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকার মালপত্র। ইনস্টিটিউট না হলে এগুলো কী কাজে লাগবে, তা জানে না কেউ।

    এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নের জন্য মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে ২০১৭ সালে প্রায় ৩৭৫ কোটি টাকার তিন বছর মেয়াদি একটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয়। সেই তিন বছর শেষ হওয়ার পর এখন বর্ধিত সময়েও কাজ চলছে কচ্ছপগতিতে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের হিসাবেই ২০০ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়ে গেছে।

    বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. গিয়াস উদ্দিন মিয়া বলেন, লাইভস্টক অ্যান্ড পোল্ট্রি ফার্মে কত টাকার জিনিসপত্র কেনা হয়েছে, তা কাগজপত্র দেখে বলতে হবে। তিনি বলেন, ‘একটি ইনস্টিটিউটের জন্য আমরা কিছু যন্ত্রপাতি কিনেছিলাম। কিন্তু ইনস্টিটিউট না হলেও সেই যন্ত্রপাতি সেন্ট্রাল ল্যাবে কাজে লাগছে। যেহেতু জিনিসপত্র কেনার একটা সময়সীমা থাকে, সে জন্যই আমরা কিনেছি। আমাদের গবেষকরা সেই যন্ত্রপাতি দিয়ে নিয়মিতই গবেষণাকাজ চালাচ্ছেন। আর এ জন্যই তো আমরা র্যাংকিংয়ে দেশসেরা হতে পেরেছি।’

    উপাচার্য আরো বলেন, ‘ভিসি হিসেবে আমার চার বছরের মেয়াদ আগামী জুনে শেষ হবে। সরকার আমাকে দ্বিতীয় মেয়াদে রাখার ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করছে। আর এ জন্যই কিছু শিক্ষক, যাঁরা নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না তাঁরা নানা ধরনের কথা বলছেন। আপনাদেরও (সাংবাদিক) বলতে পারেন। তবে আমি শতভাগ স্বচ্ছ আছি। আপনারা (সাংবাদিক) বিশ্ববিদ্যালয়ে আসুন, আমি সব কাগজপত্র আপনাদের দেখাব।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের মহাপরিকল্পনার ৬৫ শতাংশ কাজ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে বলে জানান উপাচার্য।

    কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘তিন বছর মেয়াদের মধ্যে আমরা কাজ শেষ করতে পারিনি। যৌক্তিক কারণেই মেয়াদ বাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত আনুমানিক ২০০ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে। তবে বিভিন্ন কারণে কাজে এখন ধীরগতি।’

    জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইভস্টক অ্যান্ড পোল্ট্রি ফার্মের হোসপাইপ কেনার জন্য দুই লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যাদেশে দেখা যায়, এক হাজার ৫০০ ফুট হোসপাইপ কেনার জন্য প্রতি ফুট ৫০০ টাকা হিসাবে সাত লাখ ৫০ হাজার টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। সিমেনস ফ্রিজারের জন্য পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও পরবর্তী সময়ে তা বাড়িয়ে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ছোট আকারের মিস্ত পাথুরাইজার ও মিড হোমোজিনাইজারের জন্য আড়াই লাখ টাকা করে পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা করে মোট সাত লাখ ২০ হাজার টাকার। মিল্ক প্যাকেজিং মেশিনের জন্য এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া থাকলেও কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে তিন লাখ ৭০ হাজার টাকার। প্রেগন্যান্সি ডিটেক্টরের দাম এক লাখ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে আড়াই লাখ টাকা। ক্রিম সেপারেটরের দাম দেড় লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে দুই লাখ টাকা।

     


    এমবি
    গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ