আত্মহত্যার বিষ কিনতে গিয়ে প্রেম, বিয়ে না করায় ফের বিষ পানে আত্মহননের চেষ্টা


বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে ৫ দিন অনশন কর্মসূচি করার পর তাকে মেনে না নেয়ায় বাবার বাড়িতে ফিরে গিয়ে আত্মহননের চেষ্টা করেছে সীমা আক্তার নামের এক তরুনী।
শনিবার (৭ মে) পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার মানসুরাবাদ গ্রামে তরুনীর বাবার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্বজনরা তাকে দ্রুত উদ্ধার করে মির্জাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। বর্তমানে ঐ তরুনী সুস্থ্য আছেন। প্রেমিক রায়হান পলাতক।
সীমা আক্তার জানান, সাড়ে চার বছর আগে দক্ষিন কলাগাছিয়া গ্রামের শহীদুল্লাহর সাথে আমার বিয়ে হয়। আমাদের তিন বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। আমার স্বামী প্রায়ই মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতো। এতে এক বছর আগে বিষপান করে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নেই । বিষ কিনতে সুবিদখালী বাজারের রায়হানের কীটনাশকের দোকানে যাই। রায়হান আমার মানসিক অবস্থা দেখে বুঝতে পারেন। পরে আমাকে বিষপানে বিরত করেন এবং বুঝিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় সে। এসময় আমার ফোন নাম্বার রেখে দেয়। রায়হান প্রতিনিয়ত আমার খোঁজখবর নিতো। একপর্যায়ে আমাদের সম্পর্ক শুরু হয়ে ধীরে ধীরে তা প্রেমের সম্পর্কে পরিণত হয়।
এ সময় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে বহুবার শারীরিক সম্পর্কে জড়ান রায়হান এবং কৌশলে আগের স্বামীকে তালাক দিতে বাধ্য করান। পরে বিয়ের জন্য চাপ দিলে রায়হান বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে গত সোমবার (২ মে) বিয়ের দাবিতে রায়হানের বাড়িতে অবস্থান নেন তিনি। তাকে দেখে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান রায়হান।
তরুনী আরো বলেন, ওই বাড়িতে গত ৫ দিন থাকাকালে রায়হানের মা ও বাবা আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে এবং বিষপানে আত্মহত্যা করতে বলেন। শুক্রবার (৬ মে) রাতে আমার বাবা আসলে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বাবার সাথে বাড়িতে চলে যাই। এরপর মানসিকভাবে ভেঙে পরায় কোন উপায় না পেয়ে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করি। বাসার লোকজন টের পেয়ে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
মির্জাগঞ্জা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসা চলছে। এখন আগের চেয়ে সুস্থ।
মির্জাগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন তালুকদার বলেন, বাবার বাড়িতে বসে বিষপান করেছে বলে জানতে পেরেছি। তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে, সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। শুনেছি পরকিয়া প্রেমে ব্যর্থ হয়ে মেয়েটি এ আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, সীমা আক্তার উপজেলার মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নের মানসুরাবাদ গ্রামের জব্বার জোমাদ্দারের মেয়ে। রায়হান সুবিদখালী বাজারের সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী। উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের ছৈলাবুনিয়া গ্রামের মতি মৃধার ছেলে। ৭ মাস আগে তাদের প্রেমের সম্পর্ক শুরু হয়।
এসএমএইচ
