ঢাকা শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

Motobad news
শিরোনাম
  • সামনের নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে দিতে হবে: রেজাউল করীম ইঁদুরের গর্ত থেকে শেখ হাসিনার সম্পত্তি বের হচ্ছে: বরিশালে রিজভী বাবুগঞ্জে মাটি কাটার অপরাধে ৩ ইট ভাটাকে জরিমানা  বরিশালে ভাড়াবাসায় মিলল স্কুলশিক্ষকের লাশ পাড়ায় পাড়ায় প্রতিবাদের সংস্কৃতি গড়ে তুলন: নাহিদ ইসলাম কলাপাড়ায় লেক থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার গোপালগঞ্জে সহিংসতাকারীদের গ্রেফতার দাবিতে ঢাকায় এনসিপির বিক্ষোভ পরিকল্পিতভাবে গাজার সব ভবন ধ্বংস করে দিচ্ছে ইসরায়েল: বিবিসি অবশেষে ঢাকায় চালু হচ্ছে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের মিশন জুলাই সনদ তৈরির প্রক্রিয়া হতে হবে স্বচ্ছ ও মানুষের কাছে দৃশ্যমান: প্রধান উপদেষ্টা
  • চিকিৎসক বদলি হওয়ার পর বদলে গেল আঘাতের ধরণ !

    চিকিৎসক বদলি হওয়ার পর বদলে গেল আঘাতের ধরণ !
    গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

    স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভর্তি খাতায় জরুরী বিভাগের চিকিৎসক তাঁর পর্যবেক্ষণে লিখেছেন সাধারণ আঘাত। ওই চিকিৎসক বদলি হওয়ার পর ওই পর্যবেক্ষণের নিচে ১ মাস ১০ দিন পর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গুরুতর আঘাত (হাড় ভাঙা জখম) উল্লেখ করে স্বাক্ষর করেছেন এবং পুলিশের কাছে দেওয়া সনদে হাড় ভাঙা জখমের কথা উল্লেখ করেছেন।
    এমন ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

    এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন এসএম কবির হাসান বলেন,‘প্রথম যিঁনি চিকিৎসা দিয়েছেন। তাঁর লেখা পর্যবেক্ষণ অনুযায়ি ডাক্তারি সনদ দেওয়ার কথা। এ বিষয়ে তদন্ত না করে এর বাহিরে এই মুহুর্তে বক্তব্য দেওয়া যাবে না।’তবে বিষয়টি তিনি দেখবেন বলেও জানান।

    অনৈতিক সুবিধা নিয়ে উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলাম ওরফে ফয়সাল খানের স্ত্রী কাজী সামসুন্নাহার ওরফে রিপাকে (৩৫) মামলায় বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার এমনটি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

    স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বাউফল থানার পূর্ব পাশে ইলিশ চত্বরে বাউফল পৌরসভার বাজার সড়কের বাসিন্দা উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে তাঁর-ই আপন চাচাতো ভাই নওতাজ খানের পূর্ব বিরোধের জের ধরে মারামারি হয়। এ ঘটনায় ওই কৃষক দল নেতার স্ত্রী বাউফর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর সামছুন্নাহার ও তাঁর ছেলে তাওসিফ ইসলাম (১৪) আহত হয়ে বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। ভর্তি করেন জরুরী বিভাগের চিকিৎসক শামীমা আক্তার। ভর্তির খাতায় সময় দেখানো হয়েছে বিকাল সাড়ে পাঁচটা। ভর্তির খাতায় পর্যবেক্ষণে রোগীর শরীরের আঘাত সাধারণ বলে উল্লেখ করেন। ওই চিকিৎসক ২৬ মার্চ বদলি হয়ে ঢাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে গাইনি সার্জন বিভাগে প্রশিক্ষণে চলে যান। ওই মারামারির ঘটনায় তৌহিদুল ইসলাম পটুয়াখালী আদালতে ছয় ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে নালিশি মামলা (মামলা নম্বর ১২২/২০২২) করলে আদালতের নির্দেশে মামলাটি বাউফল থানায়  রুজু করা হয়।   

    অথচ এক মাস ১০ দিন পরে গত ২২ মার্চ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সেই পর্যবেক্ষণের নিচে আঘাত গুরুতর (আঙুল ভাঙা) লিখে স্বাক্ষর করেন এবং বাঁ হাতের মধ্যম আঙুল ভাঙা উল্লেখ করে গত মঙ্গলবার (২৯ মার্চ)  একটি সনদ বাউফল থানায় পাঠান। বিষয়টি জানাজানির পর বাউফল স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক বলেন,এক মাস ১০ দিন পরে একজন চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণের নিচে আরেক চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণ লেখার কোনো সুযোগ নাই। এমনও হতে পারে ওই ঘটনার পর ওই নারীর হাতের আঙুল ভেঙেছে। 
    নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংশ্লিষ্ঠ এক ব্যক্তি বলেন,‘টাকা হলে সব সম্ভব।’

    ওই মামলার আসামি নওতাজ খান অভিযোগ করেছেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা অনৈতিক সুবিধা নিয়ে সাধারণ জখমকে গুরুতর জখম বলে পুলিশকে সনদ দিয়েছেন।

    এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার সাহা বলেন,‘অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ সত্য না। সামসুন্নাহার চিকিৎসক হিসেবে আমাকে পছন্দ করে, তিনি আমার রোগি। এ কারণে শামীমা আক্তারকে দেখানোর পর ওইদিন আমাকেও দেখিয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছিল আঙুল ভাঙতে পারে। কিন্তু তিনি (শামীমা) যে তাঁর পর্যবেক্ষণে লেখেননি, তা জানা ছিল না। তাছাড়া অন্তঃসত্ত্বা থাকায় তখন এক্স-রে করানো হয়নি। সম্প্রতি জেনেছি অন্তঃসত্ত্বা থাকলেও এক্স-রে করানো যায়। তাই অন্তঃস্বত্ত্বা অবস্থায় সম্প্রতি (২২ মার্চ) এক্স-রে করিয়ে দেখা গেছে বাঁ হাতের মধ্যম আঙুল ভেঙে গেছে। আর সেভাবেই ফের নিবন্ধিত খাতায় লিখে পুলিশকেও সেভাবে চিকিৎসা সনদ দেওয়া হয়েছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,তিনি লিখতে পারেন। বদমায়েশ মহিলা (শামীমা আক্তার) ভুল করেছে। আমার এখানে থাকলে তাঁকে শোকজ দিতাম।
    স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তৎকালীন দায়িত্বে থাকা চিকিৎসা কর্মকর্তা শামীমা আক্তার মুঠোফোনে বলেন,‘তাঁকে (সামছুন্নাহার) আমি চিনি না। আমি যেভাবে পেয়েছি, সেভাবে নিবন্ধনের খাতায় লিখে চিকিৎসা দিয়েছি। এক মাস দশ দিন পরে কি হয়েছে, সে বিষয়ে আমি বলবো কিভাবে?’


    এসএম
    গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ