ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

Motobad news

কুষ্টিয়া তুলা উন্নয়ন বোর্ড: কাজ না করেও বেতন নেন বাবুগঞ্জের মাইনুল

কুষ্টিয়া তুলা উন্নয়ন বোর্ড: কাজ না করেও বেতন নেন বাবুগঞ্জের মাইনুল
ছবি: সংগৃহীত
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

দীর্ঘ প্রায় ‍এক বছর ধরে কর্মস্থলে যান না কুষ্টিয়া তুলা ‍উন্নয়ন বোর্ডের স্টোর কাম ফিল্ড ম্যান মো. মাইনুল ‍ইসলাম। কর্মস্থলে না গেলে ‍এবং কাজ না করলেও বেতন-ভাতা নিয়মিত ভোগ করছেন তিনি। অভিযুক্ত মো. মাইনুল ইসলাম বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নের রানির স্কুল এলাকার মৃত. হাসান আলী হাওলাদারের ছেলে।

অভিযোগ উঠেছে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন না করেও লাখ লাখ টাকা বেতন ভাতা আত্মসাত করছেন মাইনুল ইসলাম। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তুলা উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।

তার দাবি মাইনুলকে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়ে আমতলী পাঠানো হয়েছে। তবে অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রত্যাহার করে তাকে কুষ্টিয়া ফিরিয়ে আনার বিষয়ে চিঠি লেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়া তুলা উন্নয়ন বোর্ডের জোনাল অফিসার সেন দেবাশীষ।

জানা গেছে, ২০০৮ সালের জুনে তুলা উন্নয়ন বোর্ডে কুষ্টিয়া জোনাল অফিসে স্টোর কাম ফিল্ড ম্যান পদে যোগদান করেন বাবুগঞ্জের দেহেরগতি ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. মাইনুল ইসলাম। এরপর সেখানে কিছুদিন নিয়মিত দায়িত্ব পালন করেন।

এরপরই শুরু হয় তার দায়িত্ব অবহেলা এবং ফাঁকিবাজির ঘটনা। তিনি কর্মস্থলে দায়িত্ব পালন না করে মাসের পর মাস বরিশালের বাবুগঞ্জে নিজ গ্রামে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করেন। আর মাস শেষে কর্মস্থলে গিয়ে বেতনের টাকা নিয়ে পুরনরায় বাড়িতে ফিরে আসছেন।

অভিযোগ উঠেছে, মাইনুল ইসলাম তুলা উন্নয়ন বোর্ডে তার ঊর্ধ্বতন একজন জোনাল ম্যানেজারকে ম্যানেজ করেছেন। মাস শেষে যে বেতন পাচ্ছেন তার কিছু অংশ ওই জোনাল ম্যানেজারকে উৎকোচ হিসেবে দিচ্ছেন মাইনুল। বিনিময়ে দায়িত্ব পালন না করেই মাসের এক থেকে পাঁচ তারিখের মধ্যে বেতন আদায়ের সুযোগ পাচ্ছেন তিনি।

নুরুল হক নামের সাবেক একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘মাইনুল এবং আমার বাড়ি পাশাপাশি। শুনেছি তিনি তুলা উন্নয়ন বোর্ডে চাকরি করেন। কিন্তু তিনিতো সবসময় বাড়িতেই থাকেন। বাড়িতে সাংসারিক কাজ করছেন। তাহলে মাস শেষে বেতন কিভাবে তোলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা।

এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত মাইনুল ইসলাম এর ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে (০১৭১৮৮৪৮৫৯০) একাধিকবার ফোন করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। যে কারণে তার বক্তব্য জানা যায়নি। তবে কুষ্টিয়া তুলা উন্নয়ন বোর্ডের জোনাল ম্যানেজার সেন দেবাশীষ বলেন, ‘বরগুনার আমতলীতে আমাদের একটি ডেমো প্লট আছে। সেখানে কটন উৎপাদন করা যায়কিনা তা নিয়ে কাজ চলছে। মাইনুল ইসলামকে কুষ্টিয়ার পাশাপাশি সেখানকার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে তিনি দায়িত্ব পালন না করে গ্রামের বাড়িতে থাকেন কিনা সে বিষয়টি নিশ্চিত করা বলা সম্ভব নয়।

তবে বেতনের অংশ উৎকোচ হিসেবে গ্রহণের অনৈতিক সুবিধা গ্রহণের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘সবশেষ গত ২৪ মার্চ মাইনুল ইসলামের সাথে আমার কুষ্টিয়ায় দেখা হয়েছে। বর্তমানে তিনি কোথায় আছেন সেটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তবে মাইনুল ইসলাম যদি দায়িত্বে অবহেলা করে থাকেন তবে তার অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রত্যাহার করা হবে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে চিঠি লেখা হয়েছে; যাতে তাকে কুষ্টিয়া জোনাল অফিসের দায়িত্বে ফিরিয়ে আনা হয় সে জন্য।

এ প্রসঙ্গে তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক আশারুজ্জামান এর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে বাতেন নামের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা মতবাদকে বলেন, মো. নুরুল হক নামের একজন পুলিশ অফিসার আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছে। এটা সত্যিই দুঃখজনক। তবে ‘উৎকোচ নিয়ে কোন কর্মচারীকে অনৈতিক সুযোগ দেয়া বা দায়িত্ব পালন না করে বেতন ভোগের সুযোগ নেই। আমি বিষয়টি নিয়ে জোনাল ম্যানেজার সেন দেবাশীষ সাহেবের সাথে কথা বলেছি। এ বিষয়ে তাকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে।


কেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন