আমতলীতে খাল বিল ফেটে চৌচির


সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে আমতলীসহ দক্ষিনাঞ্চল। রবিবার সকাল থেকেই টানা অগ্নিদহনে যেন বিবর্ণ হয়ে উঠেছে আমতলীসহ দক্ষিনাঞ্চলের সবুজ প্রকৃতি! আবহাওয়ায় গাছের পাতাও যেন নড়ছে না।
তীব্র দাবদাহে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। একটু বৃষ্টি ও শীতল হাওয়ার পরশ পেতে সাধারণ মানুষ যেন ব্যাকুল হয়ে উঠেছে। কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই। আমতলীতে রবিবার মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন তাপমাত্রার পারদ প্রায় ৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের ঘরে ছুঁই ছুঁই করছে।দুপুর ১২ টায় আমতলীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিস বলছে, এটি তীব্র তাপপ্রবাহ। ফলে বৃষ্টির জন্য হাহাকার পড়ে গেছে আমতলীতে । কয়েক দিনের টানা দাবদাহে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। অসহনীয় গরমে হাঁসফাঁস করছে প্রাণীকুল। সারাদিন আগুন ঝরা রোদ আর প্রচন্ড গরমে স্থবিরতা নেমে এসেছে কর্মজীবনেও। বাসা, অফিস কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সবখানেই যেন গরম আর গরম। একটু স্বস্তি মিলছে না কোথাও।
দিনের বেলায় দূরে থাক রাতে গাছের পাতাও নড়ছে। আসবাবপত্র থেকে শুর” করে সব জিনিসপত্রই তেঁতে উঠেছে। বাতাসের আদ্রতা বেশি থাকায় মাথার ওপরে ফ্যানটাও দিচ্ছে গরম বাতাস। কয়েকদিন ধরেই আমতলীর আবহাওয়ার আর তেমন কোন হেরফের হচ্ছে না। প্রতিদিনই ৪০ ডিগ্রীর কাছাকাছি তাপমাত্রা বিরাজ করছে আমতলীতে । এদিকে তীব্র দাবদাহের কারণে করোনার মধ্যে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসাপাতালে বেড়েছে ডায়েরিয়াসহ নানা রোগ-বালাইয়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বিশেষ করে হাসপাতালের তিনটি শিশু ওয়ার্ডে যেন দম ফেলার জায়গা নেই।
বেডে ফ্লোরে সবখানেই গরমজনিত কারণে রোগী আর রোগী। একদিকে করোনা অন্যদিকে গরমজনিত রোগীর চিকিৎসা দিতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রশাসক ডা: মোনায়েম সাদ জানান, আমতলীতে তাপমাত্রা কেবলই বাড়ছে। এতে করোনার মধ্যে ঘরে ঘরে আবার ডায়রিয়া, হিটস্ট্রোক, হিস্টিরিয়া, জ্বর, সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন উপসর্গে আক্রান্তে সংখ্যা বাড়ছে।
এসব রোগে বৃদ্ধ-বৃদ্ধা ও শিশুরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের দুর্ভোগ বেড়েছে এ তীব্র গরমে। তাই এ সময় বয়োবৃদ্ধ ও শিশুদের রোদে না বের হয়ে ঠান্ডা পরিবেশের মধ্যে থাকার জন্য বলেন। এছাড়া বিশুদ্ধ পানি, ডাব ও দেশী ফলমূল বেশি খাওয়ার পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক।
উপজেলায় প্রচন্ড দাবদাহে ক্ষেতের মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। প্রচন্ড দাবদাহে অনেক ক্ষেতের ফসল পুড়ে গেছে। পানির অভাবে গাছ থেকে ফলন বের হতে পারছে না।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানাগেছে,এ বছর আমতলী উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে চিনাবাদাম ৪২৫, মরিচ ৪৫০, খেশারী ৫ হাজার, মুগ ১০ হাজার ২৫০, মসুর ২০, ছোলা ২৫ ও ফেলন ৯৬ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএস রেজাউল করিম বলেন, প্রচন্ড দাবদাহে মাটির নিচে জমানো পানি শুকিয়ে ক্ষেতে লবণাক্ততা দেখা দিয়ে গাছ পুড়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, অনাবৃষ্টি ও কৃষক সঠিক সময়ে সেচ দিতে না পারায় এ বছর কাক্সিক্ষত ফলন পাবে না।
বরগুনার আমতলী উপজেলায় বৃষ্টি না থাকায় প্রচন্ড খড়ায় পুরছে রবি ফসলের ক্ষেত। খড়ায় প্রচন্ড তাপদাহের কারনে ঝলসে গেছে বাদাম, মরিচ, মুগডালসহ শত শত একর রবি ফসলের ক্ষেত। অনাবৃষ্টির কারনে প্রচন্ড তাপদাহে রবি ফসলের ক্ষেত ঝলসে ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে রবি ফসলের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে।
এইচকেআর
