লবণাক্ততা কমতে শুরু করেছে বিষখালি নদীর পানির
.jpg)

হঠাৎ করে লবণাক্ত হয়ে যাওয়া ঝালকাঠির রাজাপুরের বিষখালী নদীর পানির লবণাক্ততা কমতে শুরু করেছে। বৃষ্টি না হলেও আগামী পুর্ণিমার জোঁতে স্বাভাবিক হবে বলে বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ফজলুল হক মিয়া।
তিনি জানান, গত পুর্ণিমার জোয়ারে সাগরের লবণ পানি ঝালকাঠির সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর পানির চাপ কম থাকায় প্রবেশ করায় পানি লবণাক্ত হয়ে যায়। ইতিপুর্বে পানিতে কিছুটা লবণাক্ততা ছিলো কিন্তু তা ছিলো ক্ষতিসীমার নীচে। নদীর পানি লবণাক্ত হলেও পার্শবর্তি পুকুর, খাল ও ডোবার পানি স্বাভাবিক রয়েছে। সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর পানির লবণাক্ততা কমে স্বাভাবিক না হলে তা দিয়ে সেচ কাজ না করার অনুরোধ জানান। পুকুর, খাল ও ডোবার স্বাভাবিক পানি দ্বারা সেচসহ অন্যান্য কাজ করার পরামর্শ দেন।
তবে তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, এতে আতংকিত হবার কিছুই নেই। ক্রমান্বয়ে লবণাক্ততা কমতে শুরু করেছে। বৃষ্টি না হলেও আগামী পুর্ণিমার জোয়ারের পানিতে পুরোপুরি স্বাভাবিক মিস্টি স্বাদের পানিতে রূপ নেবে সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর পানি।
অনুসন্ধানে জানাগেছে, এপ্রিল মাসের শুরু থেকে হঠাৎ করেই সুগন্ধা ও বিষখালী নদীর ওপর নির্ভরশীল মানুষরা পানি লবণাক্ততা অনুভব করতে শুরু করেন। নদী তীরবর্তী মানুষ দৈনন্দিন কাজে এ নদীর পানি ব্যবহার করলেও এখন তা স্বাভাবিকভাবে সম্ভব হচ্ছে না। আর মিঠাপানির এ দুটো নদীতে বর্তমানে যে কিছুটা লবণাক্ততা রয়েছে তা নিশ্চিত করেছেন পরিবেশবিদরাও। বিশেষ করে ২০২০সাল থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এ নদীর পানিতে তড়িৎপরিবাহিতা অনেক কম থাকলেও মার্চ মাসে বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। এমনকি গত ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চে পানির তামপাত্রাও বেড়েছে। আর এসব হিসাবে গেলো বছর করোনাকালে বেশ ভালো ছিলো নদীর পানি।
বিশেষজ্ঞদের মতে শুষ্ক মৌসুমে উজানের পানি কম প্রবাহিত হওয়া এবং বৃষ্টিপাত না হওয়া, দূষণসহ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই সুগন্ধা ও বিষখালী মতো মিঠা নদীর পানিও এখন লবণাক্ত হয়ে উঠেছে। এতে করে জীব বৈচিত্র্যের ওপরও বিরূপ প্রভাব পড়বে, ফলে পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কাও রয়েছে। বিষখালী ও সুগন্ধা নদীর পানির ওপর নির্ভরশীলদের মতে, চলতি এপ্রিল মাসের শুরুতে পূর্ণিমার জোয়ারে আসা সাগরের পানি থেকেই নদীর পানিতে লবণের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। পৌর মিনি পার্ক ও ডিসি পার্ক সংলগ্ন সুগন্ধা নদীতে গোসল করতে গিয়ে অনেকেই পানি মুখে দিয়ে লবণের উপস্থিতি লক্ষ্য করেন। প্রথমে বিষয়টি নিয়ে প্রথমে ভ্রুক্ষেপ না করলেও, পুরাতন কলেজ খেয়াঘাট থেকে স্থানীয় দোকানিরা চায়ের পানি সংগ্রহ করতে গেলে তাতেও লবণের উপস্থিতি লক্ষ্য করেন। আর এরপর থেকেই নদীর পানি হঠাৎ করেই লবণাক্ত হওয়ার বিষয়টি লোকমুখে ছড়িয়ে পরে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বেশ শোরগোল শুরু হয়ে যায়।
চায়ের দোকানি সোহেল রানা জানান, প্রথমে নদীর পানি লবণাক্ত হয়ে ওঠার কথা ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের কাছ থেকে শুনেছেন। পরে তিনি নিজেও মুখে নিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত হন। স্থানীয় বাসিন্দা জসিম জানান, প্রথমে ধারণা করা হচ্ছিলো শহরের ভেতর থেকে বয়ে আসা বাসন্ডা খালের কাঠপট্টি খালের মুখের পাশের জায়গাতে নদীর পানি লবণাক্ত। তাই এটা স্বাভাবিক ধরে নিয়েছিলো অনেকে। পরে বিভিন্নস্থান থেকে নদীর পানি লবণাক্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পরে। এমনকি এক চায়ের দোকানি একদিন নদী থেকে পানি এনে চা বানাতে গিয়ে তাতে লবণের উপস্থিতি পেয়ে ফেলে দিতে বাধ্যও হন।
টিএইচএ/
