ঝালকাঠিতে স্ত্রীকে হত্যা করে ছাত্রলীগ নেতার স্ট্যাটাস


ঝালকাঠি উপজেলায় পরকীয়ার জেরে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে ফেসবুকে একাধিক স্ট্যাটাস দিয়ে থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন আলী ইমাম খান অনু (৩০)।
সোমবার (১৫ মে) সকাল ১০টার দিকে প্রস্তাবিত ইকোপার্কে এ হত্যার ঘটনা ঘটে।
অনু শহরের ইছানীল (৭ নম্বর ওয়ার্ড) এলাকার দিদার হোসেন খানের ছেলে এবং জেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি।
নিহত সায়মা পারভিন (২০) এ বছর মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। সায়মা সদর উপজেলার নৈকাঠি এলাকার শাহাদাত তালুকদারের মেয়ে। মরদেহটি থানা পুলিশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেছে।
পুলিশের সামনে গণমাধ্যমে স্বীকারোক্তিতে অনু জানায়, সাড়ে ৪ বছর প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২১ সালের ০২ সেপ্টেম্বর পোনাবালিয়া ইউনিয়ন কাজীর মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। বিয়ের ৩ মাস পর থেকে স্ত্রী সায়মা পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এ বিষয়ে অনু একাধিকবার নিষেধ করা সত্ত্বেও সায়মা না শোনার কারণে ইকোপার্কে সায়মাকে ডেকে নেন। ঘটনাস্থলে অনু সকাল সাড়ে ৯টায় এবং সায়মা সকাল পৌনে ১০টায় উপস্থিত হন। এরপর তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে সায়মাকে সংশোধন করতে না পেরে বুকে ও পেটে ছুরি দিয়ে আঘাত করেন অনু। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান সায়মা।
অনু বলেন, যদি তাকে সংশোধন করতে পারতাম তাহলে আর হত্যা করতাম না। এরপরে পুলিশ পাঠানোর জন্য একাধিক জনকে ফোন দিয়ে ঘটনাস্থলে অপেক্ষা করলেও পুলিশ আসতে দেরি করায় ফেসবুকে হত্যার দায় স্বীকার করে কয়েকটি স্ট্যাটাস দেই। পরে নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করি।
পরে পুলিশ তাকে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সায়মার রক্তাক্ত নিথর দেহ উদ্ধার করে। পুলিশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরিকালে সায়মার ব্যাগ থেকে আরেকটি নতুন ছুরি উদ্ধার করে। মরদেহটি সদর হাসপাতাল মর্গে ও হত্যাকারী অনু পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
নিহত সায়মার বাবা শাহাদাত তালুকদার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং অনুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন জানান, মরদেহটি উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
হত্যাকাণ্ডের আগে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ফেসবুকে আবেগাপ্লুত একটি স্ট্যাটাস দিয়ে হত্যার পরে তা আবার সম্পাদন করেন অনু।
আরজেএন
