দুই জোটের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক
দশ দফা দাবিতে আরও কর্মসূচি দিতে চায় বিএনপি। আগামী ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণমিছিল শেষে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে বিএনপি, তাদের সমমনা দল ও জোট। তারই অংশ হিসেব মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) জোটের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে বিএনপি। বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দুটি জোটের সঙ্গে দুটি বৈঠকে বিএনপির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান ও মো. আব্দুল আউয়াল মিন্টু।
বৈঠক শেষে বিএনপি থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, বিএনপি তাদের কাছে চলমান আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে মতামত চেয়েছে। তারাও তাদের মতামত দিয়েছেন।
বৈঠকে বিএনপির নেতারা ১২ দলীয় নেতাদের বলেছেন, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে বর্তমান সরকারকে আর সময় দেওয়া যায় না। অতিদ্রুত সরকার পতনের লক্ষ্যে এক দফার আন্দোলনে যেতে হবে। তবে এখনই কঠোর কোনো কর্মসূচিতে যাবে না তারা। আসন্ন রমজান পর্যন্ত মাঠে সাধারণ কর্মসূচি নিয়ে থাকার চিন্তাভাবনা চলছে বলে জোটের শীর্ষ দুই নেতা জানান।
তবে কী ধরনের কর্মসূচি আসছে সে সম্পর্কে এখনও কিছু বলতে চাননি তারা।
জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ নেতারা কথা বলেছেন। তারা বিভিন্ন বিষয়ে মতামত নিয়েছেন। বিশেষত শুক্রবার ঢাকায় গণমিছিল ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘১২ দলীয় জোটের প্রত্যেকটি দল আলাদা ব্যানারে নিজস্ব নেতাকর্মী নিয়ে মিছিল করবে। তারা বিজয়নগর পানির ট্যাংকির সামনে থেকে গণমিছিল করে কাকরাইল মোড় হয়ে আবারও পানির ট্যাংকির সামনে শেষ করবেন।’
লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান জানান, ‘বৈঠকে মূলত গণমিছিল সফল করা এবং পরবর্তী কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা আমাদের মতামত দিয়েছি। সবার মতামত নিয়েই কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
জাতীয় দলের চেয়ারম্যান এহসানুল হুদা জানান, তার দলের পক্ষ থেকে মতামত দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে ১২ দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ এলডিপির (বিএলডিপি) শাহাদাত হোসেন সেলিম, মুসলিম লীগের (বিএমএল) শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় দলের রফিকুল ইসলাম, জাগপার ইকবাল হোসেন, এনডিপির আব্দুল্লাহ আল হারুন সোহেল ও বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম প্রমুখ।
এর আগে সন্ধ্যায় সমমনা আরও সাত দলের শীর্ষ নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে বিএনপি। এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান রহমান মোস্তফা, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) খন্দকার লুৎফর রহমান, ডেমোক্রেটিক লীগের সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, সাম্যবাদী দল, ন্যাপ ভাসানি, পিপলস লীগের প্রতিনিধি।
অবিলম্বে জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত, সরকারের পদত্যাগ, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণমিছিল করবে বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো। গত ১০ ডিসেম্বর রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে ১০ দফা আন্দোলনের ঘোষণা দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গত শনিবার ঢাকা ও রংপুর মহানগর বাদে সারা দেশে বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে গণমিছিল করে বিএনপি, জামায়াত ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো।
এর আগে বিএনপি অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর বিভাগপর্যায়ে গণসমাবেশ করেছে। এরও আগে ঢাকার ১৬টি স্পটে সমাবেশ করেছে তারা। ডিজেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম বৃদ্ধি, নেতাকর্মী হত্যার প্রতিবাদ ও খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে একের পর এক কর্মসূচি দিয়ে আসছে বিএনপি।
এএজে
