ঢাকা শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

Motobad news
কাতার বিশ্বকাপ

লড়াইটা আসলে মেসি-এমবাপেরই

লড়াইটা আসলে মেসি-এমবাপেরই
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

দেখতে দেখতে শেষ হয়ে আসছে কাতার বিশ্বকাপ। লড়াইটা এখন শুধু দুই দলের, ফ্রান্স আর আর্জেন্টিনা। অন্যভাবে বলা যায় লড়াইটা দুই মহাতারকারও, আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি ও ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপে।

দুজনই চলতি বিশ্বকাপে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা। রোববার, ১৮ ডিসেম্বর কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে নিজ দেশের হয়ে মাঠে লড়াইয়ে নামছেন ক্লাব সতীর্থ মেসি ও এমবাপে।

মেসি ও এমবাপে দুজনেই তাদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলছেন। কিন্তু এই খেলায় তাদের ক্যারিয়ারের চিত্র বিপরীত। ২০১৮ সালে ট্রফি ছিনিয়ে নিয়েছিল এমবাপে ও তার দল। ২০১৪তে ফাইনাল খেলা মেসিকে কাঁদতে হয়েছিল স্বপ্নভঙ্গের বেদনায়।

এবার ফাইনাল খেলার দুই দিন পরই ২৪ বছরে পা রাখবেন এমবাপে। অপরদিকে, আট বছর আগে ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে হেরে যাওয়া মেসির বয়স এখন ৩৫।

মেসি গত ১৫ বছর ধরে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়, শুধু পর্তুগালের ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোই তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে ফুটবলের সবথেকে বড় ট্রফি এখনও জিততে পারেননি আর্জেন্টাইন খুদেরাজ। এবারের ফাইনাল জিতলে ঘুচবে সেই আক্ষেপ।

অপরদিকে এমবাপে এই বয়সেই দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় বিশ্বকাপে সামনে। ২০১৮ সালে শিরোপাজয়ী এই তারকার সামনে টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরার সুযোগ।

এরইমধ্যে মেসি হয়ে উঠেছেন বিশ্বকাপের সেরা তারকা। পাঁচটি টুর্নামেন্টে খেলা ছয়জন ফুটবলারের মধ্যে তিনি একজন। এ বছরের ফাইনালের শেষে তিনি সম্ভবত বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি মিনিট খেলবেন। কিন্তু তার অভিজ্ঞতার ঝুলি লক্ষ্য করলে বোঝা যায়, বিশ্বকাপে ভাগ্যের বিড়ম্বনা যেন পিছু ছাড়ে না মেসির।

মেসির শুরুটা হয়েছিল ২০০৬ সালে, ১৮ বছর বয়সে। তিনি সার্বিয়া ও মন্টিনিগ্রোর বিপক্ষে অভিষেকের এক ঘণ্টার মধ্যে গোল করেছিলেন। তখন কোচ হোসে পেকারম্যান তাকে জার্মানির সঙ্গে কোয়ার্টার ফাইনালের জন্য বেঞ্চে রেখেছিলেন, যেটিতে আর্জেন্টিনা পেনাল্টিতে হেরে যায়।

চার বছর পর মেসির দুর্ভাগ্য সঙ্গী হয়েছিল ডিয়েগো ম্যারাডোনার তত্ত্বাবধানে থাকা একটি দলে। ম্যারাডোনা, যিনি মাঠে কোচ হিসাবে খুব কমই তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পেরেছেন।

মেসি গ্রুপপর্বে ভালো করলেও আর্জেন্টিনার দলের অগোছালো অবস্থানের কারণে সব ভেস্তে যায়। সেবার কোয়ার্টারে জার্মানির সঙ্গে ৪-০ গোলে হেরে বিদায় নেয় আর্জেন্টিনা।

২০১৪ সালে আলেসান্দ্রো সাবেলা মেসিকে ঘিরে দল তৈরি করেন, তখন মেসিই অধিনায়ক। এই তারকা গ্রুপ ম্যাচে চারটি গোল করেন এবং দুর্দান্ত খেলেন।

সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে টাইব্রেকারে জেতার পর আবারও জার্মানদের মুখোমুখি হয় আর্জেন্টিনা। ফাইনাল সে ম্যাচে মেসির সতীর্থ ফরোয়ার্ড গঞ্জালো হিগুয়েন বেশ কয়েকটি সুযোগ মিস করেন। মেসিও একটি সেরা সুযোগ নষ্ট করেছিলেন। অতিরিক্ত সময়ে এক গোলে আর্জেন্টিনার স্বপ্ন ভেঙে চ্যাম্পিয়ন হয় জার্মানি।

২০১৮ সালের বিশ্বকাপে আরেকবার স্বপ্ন ভাঙে মেসির। গ্রুপে ভালো করার পরে, শেষ ১৬-তে তারা মুখোমুখি হয়েছিল ফ্রান্স এবং ১৯ বছর বয়সী এমবাপের। রোমাঞ্চ ছড়ানো সে ম্যাচে ফ্রান্সের কাছে ৪-৩ গোলে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেয় আর্জেন্টিনা।

ফ্রান্স ১৯৯০ ও ১৯৯৪ সালে টানা দুই বিশ্বকাপে যোগ্যতা অর্জন করতেই ব্যর্থ হয়। সেই দলটিই ১৯৯৮ সালে এসে চ্যাম্পিয়ন হয়। এবার নিয়ে গত সাত বিশ্বকাপের চারটিতেই ফাইনাল খেলেছে তারা।

এমবাপে তার বিশ্বকাপ ক্যারিয়ারে উড়ন্ত সূচনাই করেন। ২০১৮ সালে, তিনি গ্রুপপর্বে পেরুর বিপক্ষে এবং ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে গোল করেছিলেন।

এবার পাঁচটি গোল করে ছুটছেন মেসির সমান তালে। ২০৩৪ সালে এমবাপের বয়স ৩৫ হবে, যা এখন আর্জেন্টাইন মেসির। বিশ্বকাপে মেসির যা রেকর্ড, সেটি এক সময় ছাড়িয়ে যেতে পারেন এমবাপেও।

সেটা হয়তো সময় লাগবে, তবে এবারের বিশ্বকাপ জিতলে এমনিতেই অনন্য এক উচ্চতায় পৌঁছে যাবেন ফ্রান্সের তারকা এই ফরোয়ার্ড।

সূত্র: দ্য ইকোনমিস্ট


এইচকেআর
গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন