ঝালকাঠিতে চার লাখ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে প্রস্তুত প্রশাসন


বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ঝালকাঠিতে মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি হালকা ও মাঝারি ধরণের বাতাস বইছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় মানুষের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বৈরী আবহাওয়ায় জন জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে। জেলায় ভোররাত থেকে বিদুৎ সরবারাহ এবং মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক বিঘ্নিত হচ্ছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের সময় যত এগিয়ে আসছে সুগন্ধা ও বিষখালী নদীতীরের বাসিন্দারা ততই আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। তাঁরা ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সাধ্যমত প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন। অপরদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সোমবার সকালে জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলীর সভাপতিত্বে সভায় জানানো হয়, জেলায় ৬১টি সাইক্লোন শেল্টার ও জরুরী প্রয়োজনে ৪২৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে চার লাখ মানুষকে আশ্রয় দেওয়া যাবে বলে জানানো হয়েছে। শুকনো খাবার ও নগদ টাকাও জমা আছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। সভায় রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্যসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তারা অংশ নেন।
শহরের পৌরসভা খেয়াঘাট এলাকার বাসিন্দা সুভাষ বিশ্বাস বলেন, ঘূর্ণিঝড়রের খবর শুনে মানুষের মনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। অনেকে শিশু ও বয়স্কদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। কেউ আবার গবাদিপশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছেন। আমরা খুবই খারাপ অবস্থার মধ্যে দিন পার করছি। জেলা প্রশাসন ও স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে অনুরোধ নদীতীরের মানুষদের যাতে সহযোগিতা করা হয়। তাদের সময় মতো আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছাতে সর্বাত্বক সহযোগিতা কামনা করছি।
রিকশাচালক মনির হোসেন বলেন, বৈরি আবাহাওয়ার কারনে বৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তাঘাটে তেমন লোকজন নেই। পেটের টানে কষ্ট উপেক্ষা করে রিকশা নিয়ে রাস্তায় নেমেছি।
সুগন্ধা নদী তীরের বাসিন্দা সালমা বেগম বলেন, আমরা নদীর পাড়ে বসবাস করি বৃষ্টি বন্যা হলেই আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। আমাদের আশ্রয়ক কেন্দ্রে যেতে বলা হয়েছে, মালামাল কি করবো এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
ঝালকাঠি শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দলনেতা হুমায়ুন কবির সাগর বলেন, ইতোমধ্যে সুগন্ধা নদীর তীরে আমার বাসাকে অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করেছি। এখানে দুই শতাধিক মানুষ থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেন, জেলায় ত্রাণের শুকনো খাবার মজুদ নেই। তবে নগদ টাকা ও অন্যান্য সব ব্যবস্থা রয়েছে। ঝড়ের সঙ্গে জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা রয়েছে। আমরা চার লাখ মানুষ আশ্রয় দেয়ার জন্য আশ্রয়ণ কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এইচকেআর
