আখের দামে খুশি চাষি

বরগুনার বেতাগীতে এবার আখের ফলন খুব ভালো হয়েছে। বাজারে চাহিদা থাকায় ভালো দামও পাচ্ছেন চাষিরা। আখ চাষে লাভবান হওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আখের ফলনও ভালো হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২২- ২০২৩ অর্থ বছরে বেতাগীতে প্রায় ৭৮ হেক্টর জমিতে ৬টি জাতের আখের আবাদ হয়েছে। সেচ প্রকল্পের উঁচু জমিগুলো পলি ও দোআঁশ মাটির পরিমাণ বেশি থাকায় এখানে আখের ফলন প্রতি বছরই ভালো হয়। আখ চাষ করে ধানের চেয়ে দ্বিগুণ লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।
সরেজমিনে বেতাগী পৌর শহরের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আখের সুমিষ্ট রসে সয়লাব বাজার। উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে বিক্রেতারা চাষিদের কাছ থেকে খুচরা আখ কিনে এনে বিক্রির জন্য সারি সারি করে সাজিয়ে রেখেছেন। বিক্রেতারা জানান, বাজারে আখে সয়লাব হয়েছে।
আখচাষিরা বলছেন, আখের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে ডাল জাতীয় ফসল চাষে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। প্রাকৃতিক দুর্যোগে আখ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও সাথি ফসল থেকে আংশিক ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যায়। আখের সঙ্গে সাথি ফসল চাষ করলে জমিতে আগাছা কম হয়। ফলে মূল ফসলের ফলন অনেকাংশে বেড়ে যায়।
বিবিচিনি ইউপির রানীপুর গ্রামের চাষি আবদুস সত্তার বলেন, ১৬ বছর ধরে আখ চাষ করি। কোনো প্রশিক্ষণ না থাকলেও পূর্ব পুরুষরা যেভাবে আখ চাষ করেছেন ঠিক সেভাবেই আমিও চাষ করে আসছি। এ বছর ৫০ শতাংশ জমিতে নতুন জাতের রঙ্গ বিলাস আখ চাষ করেছি। ফলন অনেক ভালো হয়েছে।
মোকামিয়া ইউপির চালিতাবুনিয়া গ্রামের চাষি রতন হাওলাদার বলেন, প্রতিটি রঙ্গ বিলাশ জাতের আখ আকার ভেদে খুচরা দাম ৪০-৭০ টাকা আর দেশীয় আখ ২৫-৫০ টাকা।
কুমড়াখালী গ্রামের চাষি আবুল হোসেন বলেন, চলতি মৌসুমে প্রায় ২৫ শতাংশ জমিতে ১০ হাজার টাকা খরচে আখ চাষ করেছি। ফলন খুব ভালো হয়েছে। আখ খেতেই পাইকারিদের কাছে ১৮ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। মুনাফা হয়েছে ১০ হাজার টাকা।
পাইকারী ক্রেতা সেলিম বলেন, অঞ্চলের আখ খুব মিষ্টি। এখানকার আখের চাহিদা বেশি ঢাকায়। প্রতিটি আখ পাইকারি ২৫-৩৫ টাকা দরে চাষিরা পাইকারি বিক্রি করছেন। ঢাকায় তা পাইকারি ৪০-৫৫ টাকা দরে বিক্রি হয়।
বেতাগী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইছা বলেন, বেতাগীতে সাধারণত দেশীয় প্রজাতির আখ চাষ হয়। যা এ অঞ্চলে গেন্ডারী নামে পরিচিত। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর আখের ভালো ফলন হয়েছে। বিভিন্ন রোগবালাই থেকে চাষিরা যেন তাদের ফসল বাঁচাতে পারে সেজন্য যথাসময়ে কৃষি অফিসের মাধ্যমে সঠিক পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এইচকেআর
