প্রেমিকের পরিবারের জিম্মায় দেওয়ার পরদিন তরুণীর মরদেহ উদ্ধার


বরগুনার তালতলীতে নিজ বাড়ির পুকুরপাড় থেকে মারুফা আক্তার (১৫) নামের এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই তরুণীর প্রেমিককে থানায় নেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পিবিআই ও সিআইডি টিম। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার বেথিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
মৃত তরুণী উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের বেথিপাড়া এলাকার মৃত হানিফ হাওলাদারের মেয়ে।
স্থানীয়রা বলছে, তরুণী মারুফার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী ঠংপাড়া এলাকার সুলতান পহলানের ছেলে হৃদয় পহলানের (২৫) দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। এরই সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার আনুমানিক সন্ধ্যা ৭টার দিকে হৃদয় ও মারুফা ঠংপাড়া এলাকায় একটি বাগানের ভেতর দেখা করতে যায়। সেখানে স্থানীয়রা তাদের আটক করে। পরে উভয়কে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় হৃদয়ের চাচা সোনা মিয়া ও বড় ভাই সোলেমানের জিম্মায় রাখেন। বিষয়টি নিয়ে দুই পরিবারের সঙ্গে আজ (শুক্রবার) সকালে আলোচনা করে সমাধান করার কথা ছিল।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, মৃত মারুফার ছোট বোন মারিয়া (১২) সকালে বাড়ির পুকুরপাড়ে ফুল গাছে পানি দেওয়ার জন্য যায়। এ সময় বড় বোনকে পুকুরপাড়ে শুয়ে থাকতে দেখে ডাকাডাকি করে। এর পরও সে না উঠলে চিৎকার করে ছোট বোন মারিয়া। পরে তার চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রেমিক হৃদয়কে থানায় নিয়েছে পুলিশ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বরগুনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম তারেক রহমান।
তরুণী মারুফার ছোট বোন মারিয়া বলেন, ‘গতকাল দুপুরে বড় আপুর ফোনে কল আসে। তাঁর পরে আমাকে মামার বাড়িতে রেখে আসে। সকালে পুকুরপাড়ে ফুল গাছে পানি দিতে গেলে আপুর লাশ দেখে চিৎকার করি, তাঁরপর আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। এ ছাড়া আমি কিছুই জানি না।’
মারুফার খালু আয়নাল হোসেন বলেন, ‘মারুফাকে হৃদয়ের চাচা ও ভাইয়ের কাছে জিম্মায় রাখা হয়েছিল। তাঁরা হত্যা করে লাশ পুকুরপাড়ে রেখে গেছে।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য এয়ানেত পিয়াদা বলেন, ‘ঠংপাড়া বাগান থেকে সন্ধ্যায় উভয়কে আটক করেন স্থানীয়রা। পরে হৃদয়ের বাড়িতে হৃদয়ের চাচা সোনা মিয়া ও বড় ভাই সোলেমানের কাছে ওই মেয়েকে রাতে জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। সকালে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ছিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি দুই পক্ষকে বলেছি, ছেলে-মেয়েকে থানায় নিয়ে যাও।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম তারেক রহমান বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। ঘটনাস্থলে পিবিআই ও সিআইডি টিম এসেছে। তারা তদন্ত করছে। বিস্তারিত তদন্ত করে বলা যাবে।’
এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনায় পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হৃদয় নামে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।’
এইচকেআর
