লাল-সবুজের পতাকা নিয়ে পদ্মার পাড়ে যাবে দখিনের লাখো মানুষ


আগামী ২৫ জুন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সেতুতে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ কারণেই পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে চমক দেখাতে চায় বরিশাল আওয়ামী লীগ। সেতুর উদ্বোধন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় লক্ষাধিক মানুষের অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে এই চমক সৃষ্টি করতে চান তারা।
এ লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সমাবেশস্থলে পৌঁছাতে নেতা-কর্মীদের দেয়া রোড ম্যাপ। নৌপথে বিলাশবহুল লঞ্চ যোগে ২৫ জুন সর্বপ্রথম পদ্মা সেতু পাড়ি দিয়ে সমাবেশস্থলে যাবে দক্ষিণাঞ্চলের লাখো মানুষ। সুসজ্জিত লঞ্চে লাল সবুজের পতাকা হাতে সমাবেশে যোগদান করবেন তারা।
সম্প্রতি বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের এক প্রস্তুতি সভায় বরিশাল সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, ‘পদ্মাসেতুর সুফল সারাদেশের মানুষই পাবে। তবে বেশি উপকারভোগী হবো আমরা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। এ কারণে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন এবং প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সাফল্যমন্ডিত করতে আমাদেরই সব থেকে বড় ভূমিকা রাখতে হবে।
মেয়র বলেন, ‘বরিশাল অঞ্চল থেকে উদ্বোধনী জনসভায় এক লাখ মানুষের অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত বরিশাল বিভাগীগের জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে আমাদের রাজনৈতিক অভিভাবক আমার বাবা আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ- এমপি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের রোডম্যাপ দিয়েছেন। আমরা তার নেতৃত্বেই পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী জনসভায় অংশগ্রহণ করবো।
তিনি বলেন, ‘সড়ক পথের থেকে নৌপথেই আমরা সুন্দরভাবে জনসভাস্থলে যোগদান করতে পারবো। লঞ্চ থেকে নেমে আমরা সরাসরি জনসভাস্থলে যাবো। আর ২৫ জুন আমরাই প্রথম পদ্মা সেতুর নিচ থেকে লঞ্চ নিয়ে অতিক্রম করে জনসভায় যোগদিয়ে ইতিহাসের অংশ হবো। জনসভায় বরিশাল বিভাগকে জাননা দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি কাড়তে হবে। এজন্য বরিশাল থেকে যারা জনসভায় যোগদান করবেন তাদের প্রত্যেকের হাতে লাল-সবুজের পতাকা থাকবে। পতাকা নাড়িয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে দক্ষিণাঞ্চলবাসীর পক্ষ থেকে অভিভাবদন জানানো হবে।
এসময় সিটি মেয়র বলেন, ২৪ জুন রাত ১০টায় আমরা বরিশাল নদী বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করবো। বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা এবং পিরোজপুর অঞ্চল থেকে যে লঞ্চগুলো জনসভার উদ্দেশে যাবে সেগুলো সব চাঁদপুরে গিয়ে একত্রিত হবো। পরে সেখান থেকে লঞ্চগুলো এক সঙ্গে জনসভাস্থলের উদ্দেশে যাত্রা করবো। তবে লঞ্চগুলো পাশাপাশি নয়, একটার পেছনে একটা সাড়িবদ্ধভাবে যাবে। প্রতিটি লঞ্চই সাজসজ্জা করা হবে। আমরা সকাল ৭-৮টার মধ্যে পদ্মা সেতু ক্রোস করে নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে পৌঁছাবো।
দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য তরুণদের প্রাধান্য দিতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে আমাদের মধ্যে এমন কোন লোক ঢুকে না পড়ে যাদের জন্য আমাদের প্রশ্নবিদ্ধ হতে হবে।
এদিকে, মতবিনিময় সভায় অংশ নেয়া মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু জানিয়েছেন, ‘শুধুমাত্র বরিশাল নদী বন্দর থেকেই ৯টি লঞ্চ ছেড়ে যাবে। চারটি অতিরিক্ত লঞ্চ ঢাকা থেকে আসবে। এর মধ্যে সুরভী-২ এবং কীর্তনখোলা-১০সহ তিনটি লঞ্চ পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় যাবে। বাকি লঞ্চগুলো বরিশাল থেকে ছেড়ে যাবে।
তিনি বলেন, ‘কাঁঠালবাড়ি এলাকায় পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা লঞ্চগুলো বার্দিংয়ের জন্য ব্যবস্থা করেছে বিআইডব্লিউটিএ। সেখানে পন্টুনের ব্যবস্থা করেছেন তারা। সেখানে গিয়ে আমাদের লঞ্চগুলো বার্দিং করা হবে। পরবর্তীতে সেখান থেকেই নেতাকর্মীরা সহজেই জনসভাস্থলে যোগদান করতে পারে। আবার জনসভা শেষে সেখান থেকেই লঞ্চে চেপে বরিশালের উদ্দেশে যাত্রা করবে।
অপরদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ‘শুধু বরিশাল নগরী থেকেই নয়, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি এবং পিরোজপুর থেকেও অসংখ্য মানুষ অংশগ্রহণ করবে ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী জনসভায়। এ ক্ষেত্রে তারাও লঞ্চ ব্যবহার করবেন। এক একটি জেলা থেকে ২-৩টি করে লঞ্চ যাবে। এর বাইরে সড়ক পথে যাওয়ার জন্যও পরিবহনের ব্যবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র।
কেআর
