পেট্রোল ঢেলে সাবেক স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় স্বামী গ্রেপ্তার


পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায় ঘুমন্ত অবস্থায় সাবেক স্ত্রীর গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী আবদুল জলিলকে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের একটি টিম মিরপুর উপজেলার সামন্ত গ্রামের বাড়ি থেকে জলিলকে গ্রেপ্তার করে।
বাউফল-দুমকি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শাহেদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, 'আমাদের জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর প্রচেষ্টায় এবং কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপারের সহযোগিতায় অল্প সময়ের মধ্যে আবদুল জলিলকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। জলিল কুষ্টিয়ার মিরপুরের সামন্ত এলাকার নূর আলীর ছেলে।'
শাহেদ চৌধুরী বলেন, 'বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে দুমকির পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের উত্তর পাঙ্গাশিয়া গ্রামে বাবার বাড়িতে ঘুমন্ত ইতি বেগমের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেন জলিল। পরে কৌশলে বাসা থেকে পালিয়ে যান তিনি। অগ্নিদগ্ধ ইতিকে প্রথমে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে ঢাকায় নিতে বলেন। বরিশাল থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে ইতির মৃত্যু হয়।
ইতি বেগমের বড় ভাই মো. ফারুক খান জানান, তাদের ৫ ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট ইতি। ৭ বছর আগে অন্য ভাই-বোনের সঙ্গে ঢাকায় এসে গার্মেন্টসে চাকরি নেন তিনি। কর্মক্ষেত্রে জলিলের সঙ্গে পরিচয় হলে তারা বিয়ে করেন। তাদের ৫ বছরের একটি ছেলে আছে। বিয়ের পর থেকে তাদের সংসার ভালো চলে আসলেও ২ বছর ধরে যৌতুকের দাবিতে ইতির ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন জলিল। এতে ইতি সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে এসে বসবাস শুরু করেন। এরমধ্যে ইতি গোপনে গত ১৩ মে জলিলকে তালাক দেন। জলিল তালাকের চিঠি হাতে পেয়ে ইতিকে হত্যার হুমকি দেন।
মো. ফারুক খান বলেন, 'জলিল ঢাকা থেকে আমাদের বাড়িতে পৌঁছে ঘুমন্ত ইতির গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এসময় আমার বাবা-মা দেখে ফেললে জলিল দৌড়ে পালিয়ে যান। মৃত্যুর আগে আমার বোন বলে গেছে, তার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়েছেন জলিল।'
ইতির পরিবারের দাবি, জলিলকে তালাক দেওয়ার কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি ইতিকে পুড়িয়ে হত্যা করেছেন। তারা জলিলের ফাঁসি চান।
দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, 'আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আলামত হিসেবে ঘটনাস্থল থেকে দুটি পেট্রোলের বোতল জব্দ করা হয়েছে।'
ময়নাতদন্তের পর ইতির মরদেহ রাতেই পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ইতির বাবা বাদী হয়ে জলিলকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন বলেও জানান ওসি।
এইচকেআর
