ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫

Motobad news
শিরোনাম
  • সংস্কারের প্রভাবে বেহাল ববির কেন্দ্রীয় মাঠ, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ শান্ত, ফিরলেন সাইফউদ্দিন বরিশালসহ চার বিভাগের অধিকাংশ স্থানে হতে পারে ভারী বৃষ্টি বিএম কলেজে ‘উত্তরণ’ সাংস্কৃতিক সংগঠনের জ্যৈষ্ঠ উৎসব  জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসের জন্য অর্থ সংগ্রহ করত মালয়েশিয়ায় আটক বাংলাদেশিরা ডেঙ্গুর পাশাপাশি বাড়ছে করোনা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ ‘৬ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রা*ণ গেল ২ হাজার ৭৭৮ জনের’ দলের কেউ অপরাধ করলেই ব্যবস্থা নেবে বিএনপি: রিজভী বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে করোনা পরীক্ষার ফি পুনর্নির্ধারণ ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করুন: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ
  • নেই সংযোগ সড়ক ভোগান্তিতে সাধারণ জনগণ

    নেই সংযোগ সড়ক ভোগান্তিতে সাধারণ জনগণ
    গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

    বরগুনা জেলার বামনার রামনা ইউনিয়নের উত্তর রামনা গ্রামের কাটাখালী খালের উপর আড়াই কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত ব্রীজ কোন কাজেই আসছে না জনসাধারনের জন্য। ব্রিজের দু'প্রান্তে সংযোগ সড়ক (এপ্রোচ) না থাকায় ব্রীজটি ব্যবহার করতে পারছেন এলাকাবাসী। তাই প্রতিদিন হাজারো মানুষের ভরষা একটি বাঁশের সাঁকো। আর প্রতিদিন এই সাঁকো দিয়ে পাড় হতে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে শিশু, নারী ও শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা।

    স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) বরগুনা সূত্রে জানা যায়, বামনার রামনা ইউনিয়নের উত্তর রামনা এলাকার কাটাখালি খালের উপর ২০১৮ সালের জুন মাসে ২ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণের অনুমোদন দেয় এলজিইডি। এমএম বিল্ডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটি নির্মাণের কাজ পায়। ২০১৯ সালের শেষের দিকে কাটাখালি খালে গার্ডার সেতু নির্মানের কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। পরে করোনা মহামারীর কারনে সেতু নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়।

    সেতুর একপাড়ে অপ্রশস্ত সড়ক ও পুকুর এবং অপর পাড়ে বশতঘর নির্মান হওয়ায় সংযোগ সড়কের জমি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জটিলতার। এ অবস্থায় সেতুর নির্মানকাজ বন্ধ করে দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে স্থানীয়রা সেতুর পশ্চিম পাশে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে খাল পার হওয়ার ব্যবস্থা করেন।

    সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রামনা ইউনিয়ন এর উত্তর রামনার শের-ই বাংলা সমবায় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পেছনে কাটাখালি খালের অবস্থান। খালটির উপরে নির্মিত হয়েছে ৩০ মিটার দৈর্ঘ্য একটি গার্ডার সেতু। কিন্তু দুই পাশে কোন সংযোগ সড়ক না থাকায় এবং মাটি থেকে উচ্চতা ৩০-৩৫ ফুট হওয়ায় স্থানীয়রা সেতুটি দিয়ে চলাচল করতে পারছেনা। সেতুটির পাশেই একটি নড়বরে ঝুকিপূর্ণ বাশের সাকো রয়েছে৷ রামনা শেরে বাংলা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও উত্তর রামনা বাজারের ব্যবসায়ীসহ হাজার হাজার মানুষ এই বাশের সাকো দিয়ে পারাপার করছে। এবং প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। ফলে কোন কাজেই আসছে না এই আড়াই কোটি টাকার গার্ডার সেতুটি।

    নিজামুদ্দিন ও  রফিক নামে দুজন স্থানীয় বলেন,  ব্রীজটির কাজ ৬ মাস আগে শেষ হলেও আমরা এটি দিয়ে চলাফেরা করতে পারছিনা। দুই পাশে কোন রাস্তা নেই। ব্রীজটি সমতল থেকে ৩০-৩৫ ফুট উচুতে। তাই আমরা বাধ্য হয়েই প্রতিদিন হাজার হাজার পাশের বাঁশের সাকোট ব্যবহার করে চলাচল করছি। এর চেয়ে আগের পুরনো ব্রীজই ভালো ছিলো।

    রামনা শের বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেনীর শিক্ষার্থী আকাশ চন্দ্র দাস বলেন, আমি প্রতিদিন এই সাকো পাড় হয়ে স্কুলে যাই। এই ব্রিজটি দিয়ে আমরা চলাচল করতে পাড়িনা, শত শত শিক্ষার্থী এই সাকো পাড় হয়ে স্কুলে আসে। ব্রিজটির সংযোগ সড়ক থাকার কারনে আমাদের চলাচল করতে অনেক সমস্যা হয়। বর্ষ মৌসুমে আমাদের আরও সমস্যা হবে এই বাশেী সাকো দিয়ে চলাচল করতে। তাই আমার দাবী যাতে বর্ষার আগে এই সংযোগ সড়কটি দ্রুত নির্মাণ করে জনসাধারণের জন্য ব্রিজটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

    স্থানীয় ডা. এস এম শাওন বলেন,কাটাখালী খালের উপর নির্মিত ব্রীজের দক্ষিণ পাশে স্কুল ও বাজার রয়েছে। প্রতিদিন এখান শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ শত শত মানুষ বাঁশের সাকো পাড়াপার করছে৷ পার হতে গিয়ে অনেকেই বহুবার দূর্ঘটনার শিকার হয়েছে। শিগগিরই যেন সংযোগ সড়ক নির্মান করে সেতুটি জনসাধারণের ব্যবহারযোগ্য করা হয়, এমনটাই দাবি জানাচ্ছি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে।

    ফোরকান নামের এক ব্যবসায়ী বলেন,এই ব্রীজ ব্যবহার করতে না পারায় আমরা ভোগান্তিতে আছি। আমি উত্তর রামনা বাজারে ব্যবসা করি। প্রতিদিন কয়েকবার এই সাকো পারাপার করতে হয়। অনেকবার বাজার নিয়ে যাওয়ার সময় পা পিছলে পড়ে গেছি। একবার পা পিছলে পড়ে গিয়ে আমার হাত ভেঙ্গে যায়।একজন মানুষ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্স যেতে পারে না এ পাড় থেকে ওপাড়ে। আমরা এলাকাসী এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি চাই।

    এবিষয়ে এমএম বিল্ডার্সের প্রতিনিধি ও ঠিকাদার অপূর্ব রায় বলেন, ৬ মাস হয়ে গেছে এই গার্ডার ব্রীজের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ব্রীজের একপাশে পুকুর ও অপর পাশে বশতঘর। তাই সংযোগ সড়ক (এপ্রোচ)নির্মাণ করতে না পারায় এখনও চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা যায়নি এই ব্রীজটি। এখানে রিভাইসের জন্য বারবার সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। উর্ধতন কর্মকর্তারা একাধিকবার ব্রীজটি পরিদর্শন করেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না তারা।

    স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জোমাদ্দার বলেন, সংযোগ সড়ক নির্মাণ করতে হলে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার জমি ছাড়তে হবে। এ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার কারনে সংযোগ সড়কের কাজটি বন্ধ হয়েছে। আমি জমির মালিকদের সাথে কথা বলেছি, তারা উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পেলে তারা জমি ছাড়তে রাজি আছে।

    স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী সুপ্রিয় মুখার্জি বলেন, সেতুর সংযোগ সড়ক পুনরায় নির্মাণের জন্য বিভাগীয় প্রকৌশলী ও প্রধান প্রকৌশলীর কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলেই কাজ শুরু হবে।


    এমইউআর
    গুগল নিউজে (Google News) দৈনিক মতবাদে’র খবর পেতে ফলো করুন

    সর্বশেষ