কলেজছাত্রীকে অপহরণের চেষ্টা, অন্তঃসত্ত্বা চাচিসহ আহত ৪


বরগুনার পাথরঘাটায় ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে মামলা করেও রেহাই পাচ্ছে না এক কলেজছাত্রী ও তার পরিবার। মামলার জেরে শনিবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীকে অপহরণের চেষ্টা চালায় অভিযুক্ত পাথরঘাটা উপজেলা কালমেঘা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সোবহান সিকদারের ছেলে ইমরান (২৫) ও তার সহযোগী আউয়াল (২৫) এবং মামুন (২৪)। ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী একই এলাকার বাসিন্দা। এর আগে গত বছর সেপ্টেম্বরের ২৪ তারিখ বরগুনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়।
ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী জানান, গত বছর এসএসসি পরীক্ষার এসাইনমেন্ট কাগজ জমা দিতে কে.কে. আজিজিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় ইমরান। এতে আমি সায় না দিলে বিভিন্ন সময়ে আমাকে কু-প্রস্তাব দেয় এবং পথরোধ করে অশ্লীল আচরণ করে ও ছবি তোলে। গত বছর জুলাই মাসের ২০ তারিখ স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে আমার ওড়না টেনে স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। মানসম্মানের ভয়ে বিষয়টি আমার বাবাকে জানালে তিনি ইমরানের পরিবারকে অবহিত করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ইমরান তার সহযোগী আউয়াল ও মামুনকে নিয়ে আরো বেশি উত্ত্যক্ত করে।
ভুক্তভোগীর বাবা জানান, বিষয়টি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে জানালে তার পরামর্শে গত বছর বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করি। এরপর আমার মেয়েকে কলেজ থেকে তুলে নিয়ে যাবে এবং এসিড নিক্ষেপ করার হুমকি দিলে বিষয়টি লিখিত ভাবে পাথরঘাটা কলেজের অধ্যক্ষকে অবহিত করি। সবশেষ শনিবার সন্ধ্যায় বাড়িতে একা পেয়ে আমার মেয়েকে তুলে নেয়ার চেষ্টা করে ইমরান, মামুন ও আউয়াল। এতে বাধা দিলে আমার ছোট ভাইকে রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করে এবং তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী উর্মিকে পেটে লাথি মেরে আহত করে।
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক জানান, ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর গলায় গামছা জড়িয়ে টানা হেচরা করায় চামড়া উঠে গেছে। তার চাচার মাথায় দশটি শেলাই লেগেছে। এছাড়াও অন্তঃসত্ত্বা চাচিকে দুই ঘণ্টা অক্সিজেনের মাধ্যমে সুস্থ করা হয়েছে। তবে গর্ভের সন্তান ঝুঁকিপূর্ণ।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আউয়াল ও মামুন খানের কাছে জানতে চাইলে তারা মারধরের কথা স্বীকর করে মুঠোফোনে জানান, তাদের সাথে আমাদের পূর্ব বিরোধ রয়েছে সেই ঘটনা নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। তবে কলেজছাত্রীকে অপহরণের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আবুল বাশার জানান, এ বিষয়ে মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। লিখিত কোনো অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসএম
