বাউফলে আ.লীগের মনোনয়ন সুপারিশের তালিকায় বিদ্রোহী প্রার্থীসহ একই পরিবারের তিনজন


২০১৯ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন মো. কামাল হোসেন বিশ্বাস।এরপরেও আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার জন্য তিনিসহ তাঁর পরিবারের তিনজনের নাম সুপারিশ করে কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।এ ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাঁর পরিবারের কাউকে মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই নেতা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বরাবরে গত বৃহস্পতিবার লিখিত আবেদন করেছেন।
এমন ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নওমালা ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের সুপারিশের ক্ষেত্রে।
আগামি ১১ নভেম্বর নওমালা ইউপির নির্বাচনের দিন ধার্য আছে।
দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী নওমালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইসমাইল হোসেন ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য মো. মশিউর রহমান অভিন্নভাবে বলেন,কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ঘোষনা অনুযায়ী বিগত দিনে যাঁরা দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে নৌকা প্রতীকের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে নির্বাচণে অংশগ্রহণ করেছেন তাঁরা দলীয় মনোনয়ন পাবেন না। কিন্তু নওমালা ইউনিয়নের ক্ষেত্রে সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে মোটা অংঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিদ্রোহী প্রার্থী কামাল হোসেন ও তাঁর স্ত্রী মাসুমা আক্তার নিপা এবং বড় ভাই আতিকুর রহমান মামুনের নাম উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগ কেন্দ্রে সুপারিশ করেছে।
তাঁরা দুজনেই বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাঁর পরিবারের কাউকে মনোনয়ন না দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি বরাবরে লিখিতভাবে আবেদন করেছেন।
মশিউর রহমান বলেন,আওয়ামী লীগের কি আকাল পড়েছে যে বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাঁর পরিবারের তিন ব্যক্তির নাম মনোনয়নের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ করে পাঠাতে হবে।তাহলে আমরা আওয়ামী লীগ করি কেন?
ইসমাইল হোসেন বলেন,উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগের কর্তা ব্যক্তিদের টাকার বিনিময়ে কিনতে পারলেও আমাদের মানবতার মা শেখ হাসিনার কাছে আমরা ন্যায় বিচার পাব।তিনি যোগ্য ব্যক্তিকেই মনোনযন দিবেন, বিদ্রোহী প্রার্থী ও তাঁর পরিবারের কাউকে দিবেন না।
দলীয় ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২২ মার্চ ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান নওমালা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল হোসেন বিশ্বাস। ওই নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. শাহজাদা হাওলাদারের কাছে হেরে যান। এরপর কামাল হোসেন ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন চান।মনোনয়ন না পেয়ে তিনি আনারশ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন। ওই নির্বাচনে তিনি ১৩৫ ভোট পান।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর হোসেন বলেন,‘উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষর করে তাঁদের কাছে নাম পাঠিয়েছে। তাঁরা (জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক) প্রতিস্বাক্ষর করে কেন্দ্রে পাঠিয়েছেন।’তিনি আরও বলেন,যতটুকু জেনেছি কামাল হোসেন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন।
তাহলে একই পরিবারের তিনজন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো কারণে যদি কামাল হোসেন বাদ পড়েন তখন ওই দুজন থেকে একজনকে মনোনযন দেওয়া হবে।এখানে বিনিময়ের অভিযোগ সত্য না।
এইচকেআর
