সুষ্ঠু ভোট উপহার দিতে পুলিশ-প্রশাসনকে সিইসির করজোড় অনুরোধ


আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পুলিশ, প্রশাসনসহ সরকারি চাকরিজীবীদের প্রতি করজোড়ে অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) নির্বাচন ভবনে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি) আয়োজিত ফল উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে যদি আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারি, এখন কেন পারবো না। এখনো পারতে হবে। হারানো ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের এটাই সুযোগ।
তিনি বলেন, ১৫ বছর লড়াই করেছি ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু আমি মনে করি উই আর জাস্ট হাইওয়ে, অর্ধেক পথ গেছি কিন্তু অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যেদিন ভোটারেরা একদম নিশ্চিন্তে, নিজস্ব উদ্যোগে, বিনা বাধায়, নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে ভোটকেন্দ্র থেকে বের হতে পারবে, বাড়ি ফিরে যেতে পারবে, সেদিনই আমরা বলব ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
সিইসি বলেন, ভোটকে এখন আমি দায়িত্ব হিসেবে প্রচার করতে চাই। কারণ প্রত্যেকটা ভোটারের দায়িত্ব হচ্ছে নাগরিক হিসেবে এসে কেন্দ্রে ভোট দেওয়া।
এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, আমরা একসময় সরকারি চাকরি করেছি তো, আপনাদের কোনো সাংবাদিককে যদি, আরএফডি’র কোনো সদস্যকে কেউ যদি সমালোচনা করে অ্যাজ অ্যা কমিউনিটি আপনাদের একটু খারাপ লাগবে। আমরা যতই দোষ দিই না কেন আমি যেহেতু সরকারি চাকরি করেছি যখন মানুষ সমালোচনা করে যে রাতে ভোট করেছে এবং জালিয়াতি করেছে এই রকম বলে, আমি খুব মনে কষ্ট পাই যে, এই অপবাদ সবাইকে নিতে হচ্ছে। এই অপবাদটা কেন সবাইকে নিতে হচ্ছে?
তিনি বলেন, আপনাদের (গণমাধ্যম) মাধ্যমে আমার সহকর্মী, এটা প্রশাসন হোক, পুলিশের হোক, কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হোক, যারা পোলিং, প্রিসাইডিং যারা থাকবেন, তাদের কাছে আমার একটা আবেদন থাকবে, আমরা সবাই মিলে কিন্তু ৯১ সালে একটা অত্যন্ত সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়েছি, ৯৬ সালে দিয়েছি, ২০০১ দিয়েছি, এখন কেন পারব না। আমাদেরকে পারতেই হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমাদের প্রশাসনের যে ইমেজ ক্ষুণ্ন হয়েছে, ভাবমূর্তি সিরিয়াসলি অ্যাফেক্টেড হয়েছে। পুলিশের ভাবমূর্তি সিরিয়াসলি অ্যাফেক্টেড হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি সিরিয়াসলি অ্যাফেক্টেড হয়েছে। এই ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের জন্য এটাই হচ্ছে সুযোগ।
তিনি বলেন, আমার কলিগরা, আমার সহকর্মী যারা এই ইলেকশনের সঙ্গে জড়িত থাকবেন, তাদের কাছে করজোড়ে আবেদন জানাবো, আপনারা মানুষের শ্রদ্ধা অর্জনের চেষ্টা করুন। যে ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে সেটা থেকে আপনারা ওঠে আসুন। আমরা প্রমাণ করতে চাই, আমরা পারি, সরকারি কর্মচারীরা পারে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পারে, যদি তারা সত্যিকার অর্থে আন্তরিক হয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ইলেকশনের তারিখ নিয়ে সকালে একবার বলেছি। ইলেকশনের তারিখ তো আমিও জানি না। ভোটের দুই মাস আগে একদম পুরা ডিটেলস জানিয়ে দেবো কোন দিন ভোট হবে, কোন দিন নমিনেশন হবে। সুতরাং একটু ধৈর্য ধরেন। প্লিজ ওয়েট অ্যান্ড সি এবং যথাসময়ে আপনারা জানতে পারবেন আর আমাদের প্রস্তুতির বিষয়ে।
সিইসি এ সময় গণমাধ্যমে ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, আমাদের নির্বাচন কমিশনের যত কাজকর্ম হচ্ছে, যত মেসেজ আমরা জাতিকে দিতে চাচ্ছি, আপনারাই তো মাধ্যমে। এটা আপনাদের মাধ্যমেই দিচ্ছি তো নইলে তো আমাদের এক হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট নিয়ে লোকজন এঙ্গেজ করে মেসেজটা পৌঁছায়া দিতে হতো ১৮ কোটি মানুষের কাছে। আমরা আপনাদের মাধ্যমে এক প্রকার বিনা পয়সায় প্রচার করতে পারতেছি। তবে ভিউ বাড়ানোর জন্য নেতিবাচক হেডলাইন না করারও অনুরোধও করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ, বেগম তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও আবুল ফজল মো, সানাউল্লাহ।
সভাপতিত্ব করেন আরএফইডি’র সভাপতি কাজী জেবেল, সঞ্চালনা করেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী।
এইচকেআর
