বাউফলের সেই ইউপি চেয়ারম্যান দুদকের মামলায় ফের কারাগারে


সালিস করার নামে ১৪ বছরের কিশোরীকে বিয়ে করে ও সরকারি কর্মকর্তাকে মারধর করে সমালোচিত পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারকে (৬০) দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় ফের রোববার কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পটুয়াখালীর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করেন ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদারসহ ছয় আসামি। আদালত জামিন না মঞ্জুর করে ছয় আসামিকেই কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
অন্য আসামিরা হলেন কনকদিয়া ইউপির সচিব মো. মজিবুর রহমান, সাবেক উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান, কনকদিয়া ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য মো. নিজাম উদ্দিন হাওলাদার, ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মো. আশরাফুল আলম ওরফে কামাল ও মেজবাহ উদ্দিন তালুকদার। আদালতের বিচারক ছিলেন জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ রোখসানা পারভীন।
রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের আইনজীবী ছিলেন কেবিএম আরিফুল হক। আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. মজিবুর রহমান ওরফে টোটন ও মো. জাহাঙ্গীর হাওলাদার। উল্লেখ্য ২০১৬ সালের অক্টোবরে হতদরিদ্রদের মধ্যে ১০ টাকায় চাল বিক্রির কার্যক্রমে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করেন ইউপি চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার। এ নিয়ে প্রথম আলোতে ‘বিত্তশালীরা পাচ্ছেন ১০ টাকার চাল, বঞ্চিত হতদরিদ্ররা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর তদন্তে নামে দুদক। তারা সত্যতা পেয়ে শাহিন হাওলাদারকে প্রধান আসামি করে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরও ছয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করে।
২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি শাহিন হাওলাদার গ্রেপ্তার হন। ওই মামলায় একই বছরের ১৪ ডিসেম্বর আদালতে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা পটুয়াখালী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মানিক লাল দাস। এর আগে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর কনকদিয়া বাজারে মো. আনছার উদ্দিন (৪৯) নামে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তাকে শাহিন হাওলাদার প্রকাশ্যে মারধর করেন। এ ঘটনায় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনছার উদ্দিন মামলা করেন। ওই মামলায়ও শাহিন হাওলাদার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন।
চলতি বছরের ২৪ মার্চ মুক্তিযোদ্ধা মো. ফজলুল হককে (৭০) কনকদিয়া বাজারে প্রকাশ্যে মারধর করে আবারও আলোচনার জন্ম দেন শাহিন হাওলাদার। ওই ঘটনায় ফজলুল হক আদালতে মামলা করেছেন। চলতি বছরের ২৫ জুন এক তরুণ ও আষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ১৪ বছরের এক কিশোরীর মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক নিয়ে সালিস বৈঠকে বসে শাহিন হাওলাদার নিজেই মেয়েটিকে বিয়ে করে বসেন। অবশ্য পরের দিনই ওই কিশোরী চেয়ারম্যানকে তালাক দেয়। এ ঘটনায় ব্যাপক সমালোচিত হন শাহিন হাওলাদার।
এইচেকআর
