আফগানিস্তান: প্রাদেশিক রাজধানীর দখল নিতে যাচ্ছে তালেবানরা

মার্কিন ও আফগান সেনাদের সঙ্গে ভয়াবহ সংঘর্ষের পর আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলের হেলমান্দ প্রদেশের রাজধানী লস্করগাহের দখল নিতে যাচ্ছে তালেবানরা।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, তালেবানরা লস্করগাহের দখল নিতে পারলে প্রথমবারের মতো আফগানিস্তানের বড় কোনো শহরের পতন হবে। আর তা হবে আফগান সরকারের জন্য ‘বড় একটি আঘাত’।
গত মে মাসে এই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকে আফগানিস্তানে সরকারি বাহিনীর ওপর হামলা ও বিভিন্ন এলাকায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠায় অভিযান জোরদার করেছে তালেবান।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গত সোমবার তালেবানদের লক্ষ্যবস্তু টার্গেট করে বিমান হামলা করেছে আফগান ও মার্কিন সেনাদের যৌথ বাহিনী। তবে তালেবানরাও ছেড়ে কথা বলছে না। তারাও পাল্টা হামলা করে পর্যুদস্ত করে তুলছে আফগান সেনাদের।
আফগান সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল সামি সাদাত বলেন, ‘এখানে যদি তালেবানরা জিতে যায়, তবে তা বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য চরম পরিণতি বয়ে আনবে।’
আফগানিস্তানের তথ্য মন্ত্রণালয় বলছে, তালেবানদের ক্রমাগত হামলা ও হুমকির কারণে ১১টি রেডিও ও চারটি টিভি স্টেশন হেলমান্দ প্রদেশে তাদের সম্প্রচার ব্ন্ধ রেখেছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, তালেবানরা কান্দাহারে একটি টিভি স্টেশন দখল করেছেন। প্রচণ্ড যুদ্ধে দিশেহারা মানুষ গ্রামের দিকে ছুটছেন, বড় বড় ভবনের আড়ালে প্রাণ বাঁচাতে চেষ্টা করছেন তারা।
আফগানিস্তানের পশ্চিমে হেরাত প্রদেশে জাতিসংঘের একটি স্থাপনায় শুক্রবার হামলা চালিয়েছে তালেবানরা। তবে আফগান ও মার্কিন সেনাদের যৌথ অভিযানে বেশকিছু এলাকা মুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা ভিডিওতে দেখা যায়, হেরাতের একটি শহরের বাসিন্দারা রাস্তা ও ভবনের ছাদে দাঁড়িয়ে একসঙ্গে ‘আল্লাহু আকবর’ বলছেন।
দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণি পার্লামেন্টে বলেছেন, ‘আফগানিস্তান থেকে দ্রুত সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়াতেই আজকে এ পরিস্থিতি। ওয়াশিংটনকে আমি আগেই সতর্ক করেছিলাম, এমন পরিস্থিতির জন্য।’
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য পাকিস্তান সীমান্তের কাছাকাছি দখল করা একটি শহরে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের জন্য তালেবানকে অভিযুক্ত করেছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, তালেবানদের এই অত্যাচার কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তারা যা করছে, তা স্রেফ প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ড।
আফগানিস্তানের এমন সহিংস পরিস্থিতিতে বাইডেন প্রশাসন বলেছে, মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে কাজ করা হাজারো আফগান শরণার্থীকে তারা যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রয় দেবে।
এমইউআর
